চট্টগ্রাম 8:43 am, Tuesday, 3 December 2024

কালবৈশাখী তান্ডবে রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড়ের বাসিন্দাদের দুর্বিসহ জীবন

কালবৈশাখী ঝড়ে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর মোহাম্মদপুর এলাকায় ২০ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার দুই দফা কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও এই এলাকার যোগাযোগের মাধ্যমে রশিদ আহমদ সড়ক ও এম সেলিম সড়কে পাহাড় ধসের মাটি নেমে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারীরা।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, দক্ষিণ রাজানগর ৪নং ওয়ার্ড মোহাম্মদপুর ও গলাচিলা এলকায় পাহাড়ি বেশ কিছু বসতঘর ভেঙে পড়েছে। কয়েকটি ঘরের ছাল উড়িয়ে নিয়ে অন্যত্র পেলেছে। ধসে পড়েছে বেশ কয়েকটি পাহাড়ও। অপরিকল্পিত পাহাড় কাটা ও কৃষি জমির মাটি কাটার ফলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এছাড়াও সড়কটি দিয়ে ইটভাটার গাছ ও মাটি বহনে ব্যবহৃত ড্রাম ট্রাক চলাচল করে। ফলে সড়কটি অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়কটির উন্নয়ন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই কাঁদায় ভোগান্তি পোহাতে হয় এলাকাবাসীর।

মো. সোলাইমান নামে একজন জানান, প্রতিনিয়ত এই এলাকা থেকে পাহাড় কাটা হয়। কৃষি জমি কেটে পুকুর বানানো হয়েছে৷ যার ফলে বৃষ্টি হলেই ধসে পড়ে পাহাড়। এছাড়াও যে সড়কটি আছে এই সড়ক দেখলে মনে হবে গরু চলাচলের জায়গা। প্রতিনিয়ত কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। দূর্ঘটনাও লেগে থাকে।

মো. সাইমন নামে এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা ঠিকমতো এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যেতে পারিনা। কাঁদার কাপড় চোপড় নষ্ট হয়ে যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এবার কালবৈশাখীতে প্রায় ২০ টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও চলাচলের দুটি সড়কের বেহাল অবস্থা। প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক কাঁদাযুক্ত। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করেছি তবে কোন সুরহা মেলেনি। এছাড়াও অপরিকল্পিত পাহাড় কাটার ফলে পাহাড় ধস হচ্ছে। আমি পাহাড় কাটায় বাঁধা দিলেও অনেক সময় কাজ হয়না।

দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ সৈয়দ তালুকদার বলেন, পাহাড় খেকোরা রাতের আধারে মাটি কেটে বিক্রি করছে যার ফলে সামন্য বৃষ্টিতে পাহাড় ধস হয়। আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেছি।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান মেহেবুব জানান, কালবৈশাখীতে রাঙ্গুনিয়াতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পরবর্তী ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রনালয় থেকে কোন সহযোগিতা পেলে তাদের দেওয়া হবে। এছাড়াও অপরিকল্পিত পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা খবর পেলেই অভিযান চালিয়ে বিভিন্নভাবে জরিমানা করি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সীতাকুণ্ডে ইউসুফ হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

কালবৈশাখী তান্ডবে রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড়ের বাসিন্দাদের দুর্বিসহ জীবন

Update Time : 08:41:47 pm, Wednesday, 8 May 2024

কালবৈশাখী ঝড়ে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর মোহাম্মদপুর এলাকায় ২০ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবার দুই দফা কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও এই এলাকার যোগাযোগের মাধ্যমে রশিদ আহমদ সড়ক ও এম সেলিম সড়কে পাহাড় ধসের মাটি নেমে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারীরা।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, দক্ষিণ রাজানগর ৪নং ওয়ার্ড মোহাম্মদপুর ও গলাচিলা এলকায় পাহাড়ি বেশ কিছু বসতঘর ভেঙে পড়েছে। কয়েকটি ঘরের ছাল উড়িয়ে নিয়ে অন্যত্র পেলেছে। ধসে পড়েছে বেশ কয়েকটি পাহাড়ও। অপরিকল্পিত পাহাড় কাটা ও কৃষি জমির মাটি কাটার ফলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এছাড়াও সড়কটি দিয়ে ইটভাটার গাছ ও মাটি বহনে ব্যবহৃত ড্রাম ট্রাক চলাচল করে। ফলে সড়কটি অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়কটির উন্নয়ন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই কাঁদায় ভোগান্তি পোহাতে হয় এলাকাবাসীর।

মো. সোলাইমান নামে একজন জানান, প্রতিনিয়ত এই এলাকা থেকে পাহাড় কাটা হয়। কৃষি জমি কেটে পুকুর বানানো হয়েছে৷ যার ফলে বৃষ্টি হলেই ধসে পড়ে পাহাড়। এছাড়াও যে সড়কটি আছে এই সড়ক দেখলে মনে হবে গরু চলাচলের জায়গা। প্রতিনিয়ত কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। দূর্ঘটনাও লেগে থাকে।

মো. সাইমন নামে এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা ঠিকমতো এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যেতে পারিনা। কাঁদার কাপড় চোপড় নষ্ট হয়ে যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এবার কালবৈশাখীতে প্রায় ২০ টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও চলাচলের দুটি সড়কের বেহাল অবস্থা। প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক কাঁদাযুক্ত। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করেছি তবে কোন সুরহা মেলেনি। এছাড়াও অপরিকল্পিত পাহাড় কাটার ফলে পাহাড় ধস হচ্ছে। আমি পাহাড় কাটায় বাঁধা দিলেও অনেক সময় কাজ হয়না।

দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ সৈয়দ তালুকদার বলেন, পাহাড় খেকোরা রাতের আধারে মাটি কেটে বিক্রি করছে যার ফলে সামন্য বৃষ্টিতে পাহাড় ধস হয়। আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেছি।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান মেহেবুব জানান, কালবৈশাখীতে রাঙ্গুনিয়াতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পরবর্তী ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রনালয় থেকে কোন সহযোগিতা পেলে তাদের দেওয়া হবে। এছাড়াও অপরিকল্পিত পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা খবর পেলেই অভিযান চালিয়ে বিভিন্নভাবে জরিমানা করি।