হাটহাহারীতে সরকারী সম্পদ দখলের উৎসব চলছে। রাস্তার দুই পাশের সরকারি সম্পদ দখলের এ উৎসবে মেতেছেন উপজেলার বিভিন্ন স্থানের প্রভাবশালীরা।প্রভাবশালীদের কাছে যেনো অসহায় স্থানীয় প্রশাসন। এদিকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে কানাঘুষা চলছে স্থানীয়দের মধ্যে।
সরেজমিনের ঘুরে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ দিন ধরে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া মহিলা মাদ্রাসার উত্তর পাশে চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের পূর্ব পাশের সওজের জায়গা ভরাট কাজ শুরু করে স্থানীয় আতাউল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। প্রায় ৩/৪ দিন ধরে দাপটের সাথে রাতে দিনে ড্রাম ট্রাক যোগে মাটি বালি ফেলে সরকারি সম্পদ দখল করছে জানালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারনে নিরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
এছাড়াও কাটিরহাট বাজারে উত্তর পাশে, নাজিরহাট কলেজ রোড়ের পাশে পানি চলাচলের পথ রোধ করে জলীয় অংশ ভরাট, পৌরসভার সুবেদার পুকুর পাড়ের, মেখল ইউনিয়নের ভানজইন ব্রীজের পর থেকে ইছাপুর বাজার পর্যন্ত চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক মহাসড়কের দুইপাশের সরকারি জায়গাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশের মুল্যবান জায়গাগুলো ভরাট করে দখলে নিয়ে নিচ্ছে স্ব স্ব এলাকার ভূমিদস্যুরা। তারা ভরাট করে দখলে নেয়া সরকারি সম্পদে স্থায়ী পাকা স্থাপনা নির্মাণ করার এক প্রকার উৎসবে মেতে উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নাকি এসব সরকারী সম্পদ দখল করা হচ্ছে। যার কারনে লিজ নিয়ে স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে বলেও বড় গলায় দাবি করেন অনেক দখলকারীরা। স্থানীয়রা আরও জানান, রাস্তার কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর থেকে এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশের সরকারি সম্পদ দখলের প্রবনতা চরম আকার ধারন করেছে। আর কর্তৃপক্ষকে তথ্য জানালে তারা তাদের কমন ডাযালগ, ‘ বিষয়টি জানা ছিলো না, আপনার মাধ্যমে জানলাম। আমরা লোক পাঠিয়ে খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি, ইত্যাদি বলেই দায়িত্ব শেষ করেন।”
এ ব্যাপারে সরকারী জায়গা ভরাটকারী স্থানীয় আতাউল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি জায়গাটি ভরাট করছেন স্বীকার করে সন্ধ্যার দিকে দেখা করতে বলেন।
উপজেলার নাজিরহাট কলেজ রোড়ের পশ্চিম পাশের জলাশয় ভরাটকারী টিপুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার লাগতেছে তাই আমি ভরাট করছি, সরকারের লাগলে সরকার নিয়ে যাবে। ভরাটের কোনো অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু আহসান মো.আজিজুল মোস্তফার কাছে গত তিন দিন ধরে মির্জাপুর ইউনিয়নের উল্লেখিত স্থানটি ভরাট করার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদক কে জানান, এ বিষয়টি আমার জানা ছিলো না, আমি খোঁজ নিচ্ছি। আসলে এ ধরনের তথ্য পেলে আমরা যখন ঘটনাস্থলে যায় তখন কাউকে পাইনা । আবার অনেক সময় অভিযানকালে ভরাটের মালামাল জব্দ করতে গেলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা আমাদের কে বাঁধা দেন। যার কারণে আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। এছাড়াও আমি অনেক সময় ইউএনও এবং ওসি সাহেব কেও বলেছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পায়নি, আমার তো আর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নেই। যাদের আছে তাদের কাছে বার বার দ্বারস্থ হয়েছি। তাতে তিনাদের তেমন কোনো সাড়াই পায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদক কে জানান, আমি ওখানে গিয়েছিলাম তবে কাউকে পাইনি।