বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর গঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ তিন উপদেষ্টার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায়।
এদের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইউনূস এর বাড়ি উপজেলার ১৪ নং শিকারপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডস্থ বাথুয়া গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মরহুম দুলা মিয়া সওদাগরের পুত্র।
অপরজন গ্রামীণ ব্যাংকের সবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বর্তমান উপদেষ্টা নুর জাহান বেগমের বাড়ি উপজেলার ১৫ নং বুড়িশ্চর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মরহুম আহমদ মিয়ার কন্যা।
তিনি নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যে দায়িত্ব তিনি পেয়েছিলেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে। তিনি এখন গ্রামীণ পরিবারের একটি অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৭৬ সালে যখন তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরু করেন তখন তিনি প্রফেসর ইউনূসের প্রথমসারির সহযোগীদের একজন ছিলেন। মিসেস নুরজাহান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। গ্রামীণ ব্যাংকের তৃণমূল গোষ্ঠীতে দরিদ্র গ্রামীণ মহিলাদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। ব্যাংকের শুরুর দিকে এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং দিনে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রথম “প্রিন্সিপাল” ছিলেন। তিনি অনেক দেশে মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক এবং মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন এবং সেমিনারে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন, ইউএসএ সহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন কর্তৃক সুসান এম. ডেভিস লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০০৮ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড ২০০৯ এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড ২০০৯-এ ভূষিত হন। তিনি ২০০৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন সামিটে অংশগ্রহণ করেন এবং স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি নিযুক্ত হন ২০০৭ সালে।
৩য় জন ফারুক – ই- আজম এর বাড়ি উপজেলার ১ নং ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে। তাঁর পিতার নাম মরহুম মনির আহম্মদ চৌধুরী। তিনি তিন কন্যা সন্তানের জনক। তারা সবাই বিবাহিত। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে যুদ্ধে সাহসী ভূমিকা পালনের জন্য তাঁকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়।
এদিকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধানসহ মোট তিনজনই হাটহাজারী উপজেলার সন্তান হওয়াতে হাটহাজারীবাসীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে।
প্রসংগত, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার পর বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) রাত ৯টায় বঙ্গভবনের নতুন সরকারকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।