দীর্ঘদিন দখলে থাকার পর অবশেষে দখলমুক্ত হলো স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল কাশেম’র বহুদিনের প্রতিষ্ঠিত সীতাকুণ্ড পৌরসদরের মাছ বাজারের পাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগীতা ও ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটি জবরদখলকারীদের হাত থেকে মুক্ত করা হয়।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত তিন মাস আগে একদল প্রভাবশালী ব্যক্তি জোরপূর্বক দোকানটিতে তালা লাগিয়ে দখলে নেয়। এতে ব্যবসা বন্ধ হয়ে পড়ায় মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন ব্যবসায়ী আবুল কাশেম। পরে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি ও সংবাদ সম্মেলন করেন।
দখলমুক্ত হওয়ার পর আবুল কাশেম গণমাধ্যমকে জানান, “দীর্ঘদিনের কষ্ট আজ দূর হলো। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে ধন্যবাদ জানাই। এখন আবার স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারব।”
এদিকে, স্থানীয়দের দাবি দখলদারদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা কমে যাবে।
প্রসঙ্গত, আবুল কাশেম’র পিতা মোঃ শফিউল আলম সুনিল কর্মকার থেকে দোকানটি খরিদ করে ভোগদখলে ছিলেন। পরবর্তীতে বার্ধ্যক জনিত কারণে শফিউল আলম বিগত ২০১৮ সালে তার পুত্র আবুল কাশেমকে দোকানটি হস্তান্তর করেন।তিনি দীর্ঘদিন ভোগ দখলে থাকার পর তার পিতার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানরা ঐ দোকানের মালিকানা দাবী করেন। এই প্রেক্ষিতে আবুল কাশেম বিগত ২০২৩ সালে তার সৎ ভাই মোঃ আনোয়ার হোসেন (মহিউদ্দীন), মোঃ রুবেল, মোঃ মুন্না, হাসেম উদ্দীন ও হেলাল উদ্দীনকে বিবাদী করে সীতাকুণ্ড পৌরসদর ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি/সম্পাদক বরাবরে একটি আবেদন করেন।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ১০/০১/২০২২ তারিখে একটি বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করেন। উল্লেখিত তারিখে বৈঠকের চেয়ারম্যান সালিশী বৈঠকের কার্যক্রম শুরু করেন। বাদীর দুইজন প্রতিনিধি, বিবাদীগণের দুইজন প্রতিনিধি এবং কার্যকরী পরিষদের ক্রীড়া সম্পাদকসহ মোট পাঁচ জনকে দিয়ে জুরিবোর্ড গঠন করে বিষয়টি মীমাংসার জন্য প্রেরণ করা হয়। জুরিবোর্ড বিষয়টি সুরাহা করার ব্যাপারে ঐক্যমতের পৌঁছাতে না পারার কারণে সালিশী বৈঠকের চেয়ারম্যান সমিতির উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সাথে দাতা মরহুম সফিউল আলম এর ছয়জন ছেলের মধ্যে অঙ্গীকার নামায় এক ছেলের (বাদী- আবুল কাশেম) নামে জায়গার কিছু অংশ এবং দান পত্রের তিন ছেলের (বিবাদী আনোয়ার হোসেন মহিউদ্দীন মোঃ রুবেল, মোঃ মুন্না) নামে জায়গার সম্পূর্ণ অংশ উল্লেখ থাকায় অঙ্গিকার নামা ও দানপত্রকে বৈধ হিসেবে জুরিবোর্ড সিদ্ধান্ত দেওয়ায় যে জায়গা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে সেই জায়গা চার ছেলের মধ্যে সমহারে বন্টন করে নেওয়ার সর্বসম্মতি সিদ্ধান্ত প্রদান করে সালিশী বৈঠকের চেয়ারম্যান।
সর্বশেষ ৫ আগস্টের পরে বাজার কমিটি ও স্থানীয় বিএনপি নেতা ইউসুফ নিজামী, কাউন্সিলর শামছুল আলম আজাদ, বিএনপি নেতা মোঃ আলী, আবু সিদ্দিক বাল্লাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতে চার ভাইয়ের মধ্যে জায়গাটি সমহারে বন্টন হয়। পরবর্তী দোকানটি কিছু ভূমিদস্যুর নজরে আসলে আবুল কাশেমের স্ত্রী, দুই সন্তানকে লাঞ্চিত করে এবং আবুল কাশেমকে পিটিয়ে তার দু-পা ভেঙে দিয়ে তার দোকানটি জবরদখল করে নেয় দুষ্কৃতকারীরা।
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 

















