চট্টগ্রাম 8:19 pm, Friday, 27 June 2025

ইপসার উদ্যোগে “ভূমিধসের আগাম পদক্ষেপকে শক্তিশালীকরণে যুব নের্তৃত্ব ” শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রাম নগরীর দ্যা গোল্ডেন স্পুন এর হলরুমে রবিবার, ১৬ মার্চ-২০২৫ খ্রী.জার্মান ফেডারেল ফরেন অফিস (GFFO) অর্থায়নে,  সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহায়তায় ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন (ইপসা) বাস্তবায়িত  “Child centred Anticipatory Action for Better Preparedness of Communities and Local  in Northern and Coastal Areas of Bangladesh “উদ্যোগে “ভূমিধসের আগাম পদক্ষেপ কে শক্তিশালীকরণে যুব নের্তৃত্ব ” শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

মূলত উল্লেখিত প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল সরোয়ার তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর ৩ শিক্ষার্থী  Landslide susceptibility mapping এবং  Developing Local level trigger threshold বিষয়ক গবেষণামূলক (Fellowship)  কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। তারই আলোকে উপরোক্ত সংলাপের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার মানুষের মতামত গ্রহণের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম বাস্তবমুখী ও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে উপরোক্ত সংলাপের আয়োজন।

সংলাপের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইপসার পরিচালক ( সমাজ উন্নয়ন)  মিসেস নাছিম বানু, প্রকল্প সম্পর্কিত ধারণা ও গবেষণার উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন ইপসার প্রজেক্ট ম্যানেজার সানজিদা আক্তার। সংশ্লিষ্ট গবেষণার উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ড. ইকবাল সরোয়ার এবং রিচার্স ফেলো জান্নাতুল ফিরদাউচ। আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউট অফ বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম চ্যাপ্টার এর সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার দেলোয়ার মজুমদার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তাজ সুলতানা,  প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের এর সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাদিকা সুলতানা, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাসরিন আক্তার, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শাহজালাল মিশুক, সৌরভ দাশ, বিশিষ্ট আবহাওয়া বিজ্ঞানী উজ্জ্বল কান্তি পাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক কিশোয়ার জাহান, ড. প্রবাল বড়ুয়া ফিরোজশাহ কলোনী সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম,  লালখান বাজার শহীদ নগর সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌমেন ব্যানার্জি,  বাঁশখালী উপজেলা পুকু‌রিয়া ইউ‌নিয়‌নের প‌্যা‌নেল চেয়ারম‌্যান ও ইউ‌পি সদস‌্য রয়ান জন্নাত, সাধনপুর ইউ‌নিয়‌ন পরিষদ সদস‌্য মো. দেলোয়ার হো‌সেন, চসিক ওয়ার্ড সচিব মু. মুজিবুর রহমান, মু. তোফায়েল আহমেদ, বাঁশখালী উপজেলা দৈনিক আজাদী পত্রিকার রিপোর্টার কল্যান বড়ুয়া, চট্টগ্রাম পাহাড় রক্ষা ক্লাব ও ইয়ূথ প্লাটফর্ম সদস্য উম্মে হুমায়রা সায়কা আফছার প্রমুখ।

সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন ইপসা রিচার্স ও মনিটরিং এক্সপার্ট মোরশেদ হাসান ও প্রকল্প কর্মকর্তা মুহাম্মদ আতাউল হাকিম। ড. ইকবাল সারোয়ার গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করতে গিয়ে পাহাড় ধ্বসের সাধারণ ধারণা, বাংলাদেশে পাহড়া ধ্বসের ক্ষয়ক্ষতির ইতিহাস, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও এন্টিসিপেটরি এ্যাকশনের ভূমিকা, প্রযুক্তিগত পদ্ধতি ব্যবহার করে পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, পাহাড় ধ্বস প্রতিরোধে করণীয় ব্যবস্থা এবং দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতিমূলক করণীয় বিষয়ে পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন। তিনি জানান ১৯৭০ সাল থেকে ২০২৪ ইং পর্যন্ত বাংলাদেশে পাহাড় ধ্বসে ৭৩৬ জন মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।

গত বছরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পাহাড় ধ্বসের কারণে ২৪জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অধিকাংশ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কারণ এখানকার মাটির বৈশিষ্ট্য হলো নরম প্রকৃতির এবং মাটির ধরণ হচ্ছে বেলে মাটি। বৃষ্টিপাতের সাথে এখানকার পাহাড়গুলোর বালিমাটি সমূহ দূর্বল হয়ে ধসে পড়ে। তিনি বলেন প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট কারণে এ অঞ্চলে পাহাড়ধস নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা। মানবসৃষ্ট কারণের মধ্যে পাহাড় কাটা ও বনের গাছপালা কেটে ফেলা, দূর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অপরিকল্পিত বসতি, রাস্তা নির্মাণ, কৃষিকাজ অন্যতম।

পাহাড়ধসের ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনে উপস্থিত আলোচকবৃন্দ জানান, যদি পাহাড় থেকে মানুষের বসতি কমানো, বনের গাছ কাটা বন্ধ করা যায় এবং মানুষের মাঝে জনসচেতনতা সৃস্টি করে প্রাকৃতিক বন সংরক্ষণ করা যায় তবে সত্যিকারের টেশসই অঞ্চল প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙ্গুনিয়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় দু’জনকে অর্থদন্ড

ইপসার উদ্যোগে “ভূমিধসের আগাম পদক্ষেপকে শক্তিশালীকরণে যুব নের্তৃত্ব ” শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত

Update Time : 08:30:16 pm, Sunday, 16 March 2025

চট্টগ্রাম নগরীর দ্যা গোল্ডেন স্পুন এর হলরুমে রবিবার, ১৬ মার্চ-২০২৫ খ্রী.জার্মান ফেডারেল ফরেন অফিস (GFFO) অর্থায়নে,  সেভ দ্য চিলড্রেন এর সহায়তায় ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন (ইপসা) বাস্তবায়িত  “Child centred Anticipatory Action for Better Preparedness of Communities and Local  in Northern and Coastal Areas of Bangladesh “উদ্যোগে “ভূমিধসের আগাম পদক্ষেপ কে শক্তিশালীকরণে যুব নের্তৃত্ব ” শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

মূলত উল্লেখিত প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল সরোয়ার তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর ৩ শিক্ষার্থী  Landslide susceptibility mapping এবং  Developing Local level trigger threshold বিষয়ক গবেষণামূলক (Fellowship)  কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। তারই আলোকে উপরোক্ত সংলাপের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার মানুষের মতামত গ্রহণের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম বাস্তবমুখী ও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে উপরোক্ত সংলাপের আয়োজন।

সংলাপের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইপসার পরিচালক ( সমাজ উন্নয়ন)  মিসেস নাছিম বানু, প্রকল্প সম্পর্কিত ধারণা ও গবেষণার উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন ইপসার প্রজেক্ট ম্যানেজার সানজিদা আক্তার। সংশ্লিষ্ট গবেষণার উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ড. ইকবাল সরোয়ার এবং রিচার্স ফেলো জান্নাতুল ফিরদাউচ। আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউট অফ বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম চ্যাপ্টার এর সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার দেলোয়ার মজুমদার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তাজ সুলতানা,  প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের এর সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাদিকা সুলতানা, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাসরিন আক্তার, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শাহজালাল মিশুক, সৌরভ দাশ, বিশিষ্ট আবহাওয়া বিজ্ঞানী উজ্জ্বল কান্তি পাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক কিশোয়ার জাহান, ড. প্রবাল বড়ুয়া ফিরোজশাহ কলোনী সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম,  লালখান বাজার শহীদ নগর সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌমেন ব্যানার্জি,  বাঁশখালী উপজেলা পুকু‌রিয়া ইউ‌নিয়‌নের প‌্যা‌নেল চেয়ারম‌্যান ও ইউ‌পি সদস‌্য রয়ান জন্নাত, সাধনপুর ইউ‌নিয়‌ন পরিষদ সদস‌্য মো. দেলোয়ার হো‌সেন, চসিক ওয়ার্ড সচিব মু. মুজিবুর রহমান, মু. তোফায়েল আহমেদ, বাঁশখালী উপজেলা দৈনিক আজাদী পত্রিকার রিপোর্টার কল্যান বড়ুয়া, চট্টগ্রাম পাহাড় রক্ষা ক্লাব ও ইয়ূথ প্লাটফর্ম সদস্য উম্মে হুমায়রা সায়কা আফছার প্রমুখ।

সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন ইপসা রিচার্স ও মনিটরিং এক্সপার্ট মোরশেদ হাসান ও প্রকল্প কর্মকর্তা মুহাম্মদ আতাউল হাকিম। ড. ইকবাল সারোয়ার গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করতে গিয়ে পাহাড় ধ্বসের সাধারণ ধারণা, বাংলাদেশে পাহড়া ধ্বসের ক্ষয়ক্ষতির ইতিহাস, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও এন্টিসিপেটরি এ্যাকশনের ভূমিকা, প্রযুক্তিগত পদ্ধতি ব্যবহার করে পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, পাহাড় ধ্বস প্রতিরোধে করণীয় ব্যবস্থা এবং দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতিমূলক করণীয় বিষয়ে পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন। তিনি জানান ১৯৭০ সাল থেকে ২০২৪ ইং পর্যন্ত বাংলাদেশে পাহাড় ধ্বসে ৭৩৬ জন মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।

গত বছরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পাহাড় ধ্বসের কারণে ২৪জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অধিকাংশ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কারণ এখানকার মাটির বৈশিষ্ট্য হলো নরম প্রকৃতির এবং মাটির ধরণ হচ্ছে বেলে মাটি। বৃষ্টিপাতের সাথে এখানকার পাহাড়গুলোর বালিমাটি সমূহ দূর্বল হয়ে ধসে পড়ে। তিনি বলেন প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট কারণে এ অঞ্চলে পাহাড়ধস নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা। মানবসৃষ্ট কারণের মধ্যে পাহাড় কাটা ও বনের গাছপালা কেটে ফেলা, দূর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অপরিকল্পিত বসতি, রাস্তা নির্মাণ, কৃষিকাজ অন্যতম।

পাহাড়ধসের ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনে উপস্থিত আলোচকবৃন্দ জানান, যদি পাহাড় থেকে মানুষের বসতি কমানো, বনের গাছ কাটা বন্ধ করা যায় এবং মানুষের মাঝে জনসচেতনতা সৃস্টি করে প্রাকৃতিক বন সংরক্ষণ করা যায় তবে সত্যিকারের টেশসই অঞ্চল প্রতিষ্ঠা সম্ভব।