চট্টগ্রাম 12:42 am, Wednesday, 2 July 2025

“ইপসা গ্রামীণ প্রবীণ প্রকল্প” গবেষণার ফলাফল প্রকাশ কর্মশালা

ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল একশান (ইপসা) দীর্ঘদিন ধরে সীতাকুণ্ডে প্রবীণদের জন্য সহায়তা ও জীবিকা উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। বাংলাদেশে প্রবীণ জনসংখ্যার সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ২০৫০ সালের মধ্যে প্রবীণ জনগণের বৃহৎ অংশ পরিচালনার একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে, প্রবীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণ নিশ্চিত করতে গবেষণার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ এবং জ্ঞানের অভাব দূর করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ইপসা।

এই লক্ষ্যে, গ্রামীণ প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। গবেষণার ফলাফল প্রকাশের জন্য ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্স রিসার্চ ইন সায়েন্সেস (সিএআরএস) মিলনায়তনে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। গবেষণাটি “সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর বর্তমান পরিস্থিতি” শিরোনামে পরিচালিত হয়েছে এবং ২০২০-২০২৪ সময়কালে ইপসা-র প্রবীণ প্রকল্পের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।

গবেষণার প্রবন্ধটি রচনা করেছেন প্রফেসর হাফিজ টি.এ. খান (ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট লন্ডন, ইউকে), মোঃ আরিফুর রহমান (প্রধান নির্বাহী, ইপসা), মোরশেদ হোসেন মোল্লা (রিসার্চ ফেলো ও ম্যানেজার, ইপসা) এবং ড. আহবাব মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি (সহযোগী অধ্যাপক, জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।

কর্মশালাটি ইপসা-র সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল হায়দারের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয়। তিনি গবেষণার তাৎপর্য উল্লেখ করে বলেন, এই গবেষণা প্রবীণদের বিভিন্ন দিক এবং ইপসা-র চার বছরের প্রকল্পের প্রভাব তুলে ধরেছে। এরপর প্রফেসর হাফিজ টি.এ. খান মূল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি গবেষণার উদ্দেশ্য, বিশ্বব্যাপী প্রবীণ জনগোষ্ঠীর অবস্থা, গ্রামীণ প্রবীণদের জন্য টেকসই সহায়তা ব্যবস্থা এবং নীতিনির্ধারণে এই গবেষণার ফলাফলের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন।

মোরশেদ হোসেন মোল্লা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন, যেখানে ৮৬৬ জন উত্তরদাতার (যাদের বয়স ৬০-৬৫ বছরের মধ্যে) বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, সামাজিক সহায়তার ধরণ এবং প্রাপ্তি, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উপাত্ত, দৈনন্দিন কার্যক্রম, এবং ডিমেনশিয়া সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

এরপর, ড. আহবাব মোহাম্মদ ফজলে রাব্বির পরিচালনায় ‘ওপেন ডিসকাশন’ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা গবেষণার প্রশংসা করেন এবং প্রবীণদের বাস্তব পরিস্থিতি এবং নীতিনির্ধারণে এর কার্যকারিতা নিয়ে মতামত প্রকাশ করেন। ভবিষ্যতে গবেষণার পরিধি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সুপারিশ প্রদান করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে ডিমেনশিয়া ও অন্যান্য রোগ সম্পর্কিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা গভীরভাবে অনুধাবন এবং প্রবীণদের জন্য নীতিগত দিক নিয়ে কাজ করা।

কর্মশালায় অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন আফসানা করিম (উপদেষ্টা, সিআইপিআরবি), তারিক মোহাম্মদ আলী (উপপরিচালক), কাজী মো. জমশেদ (সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), মো. আজিজুল হক (প্রতিষ্ঠাতা, ডিমেনশিয়া কেয়ার), ড. মো. নজরুল ইসলাম (মেডিক্যাল ডিরেক্টর, হোম ডায়ালাইসিস থেরাপি সেন্টার), কামরুল ইসলাম (ডেপুটি ম্যানেজার, ইনভেন্ট টেকনোলজিস লিমিটেড) এবং হোসনে আরা খান (স্বেচ্ছাসেবক, আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশ)।

অনুষ্ঠানের শেষে প্রফেসর খান ইপসা এবং অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে গবেষণার প্রভাব এবং প্রবীণদের কল্যাণে টেকসই পরিকল্পনা তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে তার সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

“ইপসা গ্রামীণ প্রবীণ প্রকল্প” গবেষণার ফলাফল প্রকাশ কর্মশালা

Update Time : 05:50:20 pm, Tuesday, 24 December 2024

ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল একশান (ইপসা) দীর্ঘদিন ধরে সীতাকুণ্ডে প্রবীণদের জন্য সহায়তা ও জীবিকা উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। বাংলাদেশে প্রবীণ জনসংখ্যার সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ২০৫০ সালের মধ্যে প্রবীণ জনগণের বৃহৎ অংশ পরিচালনার একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে, প্রবীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণ নিশ্চিত করতে গবেষণার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ এবং জ্ঞানের অভাব দূর করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ইপসা।

এই লক্ষ্যে, গ্রামীণ প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। গবেষণার ফলাফল প্রকাশের জন্য ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্স রিসার্চ ইন সায়েন্সেস (সিএআরএস) মিলনায়তনে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। গবেষণাটি “সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর বর্তমান পরিস্থিতি” শিরোনামে পরিচালিত হয়েছে এবং ২০২০-২০২৪ সময়কালে ইপসা-র প্রবীণ প্রকল্পের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।

গবেষণার প্রবন্ধটি রচনা করেছেন প্রফেসর হাফিজ টি.এ. খান (ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট লন্ডন, ইউকে), মোঃ আরিফুর রহমান (প্রধান নির্বাহী, ইপসা), মোরশেদ হোসেন মোল্লা (রিসার্চ ফেলো ও ম্যানেজার, ইপসা) এবং ড. আহবাব মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি (সহযোগী অধ্যাপক, জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।

কর্মশালাটি ইপসা-র সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল হায়দারের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয়। তিনি গবেষণার তাৎপর্য উল্লেখ করে বলেন, এই গবেষণা প্রবীণদের বিভিন্ন দিক এবং ইপসা-র চার বছরের প্রকল্পের প্রভাব তুলে ধরেছে। এরপর প্রফেসর হাফিজ টি.এ. খান মূল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি গবেষণার উদ্দেশ্য, বিশ্বব্যাপী প্রবীণ জনগোষ্ঠীর অবস্থা, গ্রামীণ প্রবীণদের জন্য টেকসই সহায়তা ব্যবস্থা এবং নীতিনির্ধারণে এই গবেষণার ফলাফলের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন।

মোরশেদ হোসেন মোল্লা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন, যেখানে ৮৬৬ জন উত্তরদাতার (যাদের বয়স ৬০-৬৫ বছরের মধ্যে) বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, সামাজিক সহায়তার ধরণ এবং প্রাপ্তি, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উপাত্ত, দৈনন্দিন কার্যক্রম, এবং ডিমেনশিয়া সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

এরপর, ড. আহবাব মোহাম্মদ ফজলে রাব্বির পরিচালনায় ‘ওপেন ডিসকাশন’ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা গবেষণার প্রশংসা করেন এবং প্রবীণদের বাস্তব পরিস্থিতি এবং নীতিনির্ধারণে এর কার্যকারিতা নিয়ে মতামত প্রকাশ করেন। ভবিষ্যতে গবেষণার পরিধি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সুপারিশ প্রদান করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে ডিমেনশিয়া ও অন্যান্য রোগ সম্পর্কিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা গভীরভাবে অনুধাবন এবং প্রবীণদের জন্য নীতিগত দিক নিয়ে কাজ করা।

কর্মশালায় অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন আফসানা করিম (উপদেষ্টা, সিআইপিআরবি), তারিক মোহাম্মদ আলী (উপপরিচালক), কাজী মো. জমশেদ (সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), মো. আজিজুল হক (প্রতিষ্ঠাতা, ডিমেনশিয়া কেয়ার), ড. মো. নজরুল ইসলাম (মেডিক্যাল ডিরেক্টর, হোম ডায়ালাইসিস থেরাপি সেন্টার), কামরুল ইসলাম (ডেপুটি ম্যানেজার, ইনভেন্ট টেকনোলজিস লিমিটেড) এবং হোসনে আরা খান (স্বেচ্ছাসেবক, আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশ)।

অনুষ্ঠানের শেষে প্রফেসর খান ইপসা এবং অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে গবেষণার প্রভাব এবং প্রবীণদের কল্যাণে টেকসই পরিকল্পনা তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে তার সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন।