ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে ‘বৈশ্বিক জিহাদ’ এবং বিশ্বব্যাপী হরতাল পালনের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে রবিবার (৬ এপ্রিল) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এবং মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বিবৃতিটি গণমাধ্যমে প্রেরণ করেন।

বিবৃতিতে হেফাজত নেতারা বলেন, “গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা পৃথিবীর সমস্ত নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে।” তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরাইলের প্রধান সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “কথিত মানবাধিকারের ধ্বজাধারী আমেরিকার বিবেক গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরাইলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে।” তাদের মতে, আমেরিকার প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতাতেই ইসরাইল বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদারিত্ব ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা, বিশেষ করে ফিলিস্তিনিরা মুসলমান হওয়ার কারণে এমনটি ঘটছে বলে মন্তব্য করেন।

হেফাজত নেতারা মার্কিন জনগণের প্রতি তাদের সরকারের ইসরাইল-নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানান। তারা বলেন, মার্কিন করদাতাদের অর্থেই ইসরাইলকে সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এবং এই ‘রাষ্ট্রীয় দাসত্বনীতি’ থেকে বেরিয়ে আসার উদ্যোগ আমেরিকার জনগণকেই নিতে হবে।

ইসরাইলকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সার’ ও ‘অবৈধ জালিম রাষ্ট্র’ হিসেবে অভিহিত করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “পৃথিবীর পরিশুদ্ধতা ও মানবতার অগ্রগতির জন্য অবৈধ জালিম রাষ্ট্র ইসরাইলের পতন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। ফিলিস্তিন দখলকারী ও গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরাইলকে থামাতে বৈশ্বিক জিহাদ অনিবার্য হয়ে পড়েছে।”

এই ‘বৈশ্বিক জিহাদের’ অংশ হিসেবে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ সামরিক প্রতিরোধ, রাজনৈতিক তৎপরতা, গণ-আন্দোলন এবং ইসরাইলি পণ্য বর্জনের মতো কর্মসূচি বিশ্বব্যাপী একযোগে চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়, যতক্ষণ না ইসরাইলের ‘সমূলে বিনাশ’ ঘটে। এক্ষেত্রে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষের অংশগ্রহণ কামনা করা হয়।

কর্মসূচি ঘোষণা:
গাজাবাসীর প্রতি সংহতি এবং ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল ৭ এপ্রিল (সোমবার) বাদ যোহর থেকে বিশ্বব্যাপী হরতাল পালনের জন্য সর্বস্তরের ওলামায়ে কেরাম, মাদরাসা, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-জনতাসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।