চট্টগ্রাম 10:41 am, Wednesday, 2 July 2025

নারীর ক্ষমতায়ন: তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিবর্তনের পথে ১০১তম উঠান বৈঠক

উত্তর বাকখালী, ১ নং সৈয়দপুর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হলো “তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন” দ্বিতীয় প্রকল্পের ১০১তম উঠান বৈঠক। এই বৈঠকটি নারীদের আইনি, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্য:
জাতীয় মহিলা সংস্থার চট্টগ্রাম জেলা কর্মকর্তা সাহানা পারভীন তিথি প্রধান অতিথি হিসেবে বৈঠকে অংশ নেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “তথ্য ও প্রযুক্তি নারীদের ক্ষমতায়ন ও জীবনের উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। এই প্রকল্পটি নারীদের ন্যায়বিচার পাওয়া এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে সমাজে নিজেদের স্থান তৈরি করার সুযোগ দিচ্ছে।”

মূল আলোচনার বিষয়বস্তু:
উঠান বৈঠকে গ্রাম আদালতের ভূমিকা, জেলা লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আইনি সুরক্ষা এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার সেবা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রধান বক্তা অতিরিক্ত জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট মোঃ সরোয়ার হোসাইন লাভলু বলেন, “নারীরা আইনি সচেতনতার মাধ্যমে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। গ্রাম আদালত ও লিগ্যাল এইডের সেবা সাধারণ মানুষের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দিচ্ছে। তাই প্রত্যেক নারীকে এই সেবা সম্পর্কে জানতে হবে।”

সীতাকুণ্ড গ্রাম আদালতের উপজেলা সমন্বয়কারী মহাসিনা মিনা নারীদের জন্য গ্রাম আদালতের কার্যকারিতা ও সহজলভ্যতার কথা তুলে ধরেন। নারী উদ্যোক্তা সায়রা আমিন উদ্যোক্তা হিসেবে নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।

সঞ্চালনা:
সভাটি সঞ্চালনা করেন সীতাকুণ্ড উপজেলা তথ্য সেবা কর্মকর্তা আসমাউল হুসনা তন্বী। তার দক্ষ পরিচালনায় পুরো বৈঠকটি তথ্যসমৃদ্ধ ও প্রাণবন্ত হয়।

বক্তব্যের মূল বার্তা:
এই বৈঠকে নারীদের অধিকার, ক্ষমতায়ন এবং আইনি সচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। জাতীয় মহিলা সংস্থার সেবাগুলোর কার্যক্রম, বিশেষত নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে তাদের ভূমিকা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীদের আর্থিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।

উদ্দেশ্য ও প্রভাব:
উঠান বৈঠকের মাধ্যমে নারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতায়নের পথ তৈরি এবং তাদের আইনি অধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারীরা নারীদের আত্মনির্ভরশীল হতে এবং আইনি সেবা গ্রহণে আগ্রহী হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

বিশেষ অতিথিদের অভিমত:
নারীদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সীতাকুণ্ড গ্রাম আদালতের উপজেলা সমন্বয়কারী মোহছেনা মিনা বলেন, “গ্রামীণ নারীরা গ্রাম আদালতের সেবা নিয়ে তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারছেন, যা তাদের জীবন সহজতর করেছে।”

নারী উদ্যোক্তা সায়রা আমিন বলেন, “নারীদের আত্মনির্ভরশীল হতে হলে উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। এতে তারা অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হয়ে সমাজে সম্মানজনক স্থান করে নিতে পারবে।”

“তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন” প্রকল্পের আওতায় এই ১০১তম উঠান বৈঠক নারীদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে আরেকটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হলো। অংশগ্রহণকারীরা এই বৈঠকের মাধ্যমে নতুন দিকনির্দেশনা পেয়েছেন এবং তাদের নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আরও সচেতন হয়েছেন। এই ধরনের কার্যক্রম ভবিষ্যতে নারীদের আরও সাহসী ও ক্ষমতাবান করে তুলবে বলে আশা করা যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

নারীর ক্ষমতায়ন: তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিবর্তনের পথে ১০১তম উঠান বৈঠক

Update Time : 02:11:57 pm, Wednesday, 18 December 2024

উত্তর বাকখালী, ১ নং সৈয়দপুর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হলো “তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন” দ্বিতীয় প্রকল্পের ১০১তম উঠান বৈঠক। এই বৈঠকটি নারীদের আইনি, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্য:
জাতীয় মহিলা সংস্থার চট্টগ্রাম জেলা কর্মকর্তা সাহানা পারভীন তিথি প্রধান অতিথি হিসেবে বৈঠকে অংশ নেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “তথ্য ও প্রযুক্তি নারীদের ক্ষমতায়ন ও জীবনের উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। এই প্রকল্পটি নারীদের ন্যায়বিচার পাওয়া এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে সমাজে নিজেদের স্থান তৈরি করার সুযোগ দিচ্ছে।”

মূল আলোচনার বিষয়বস্তু:
উঠান বৈঠকে গ্রাম আদালতের ভূমিকা, জেলা লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আইনি সুরক্ষা এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার সেবা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রধান বক্তা অতিরিক্ত জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট মোঃ সরোয়ার হোসাইন লাভলু বলেন, “নারীরা আইনি সচেতনতার মাধ্যমে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। গ্রাম আদালত ও লিগ্যাল এইডের সেবা সাধারণ মানুষের কাছে ন্যায়বিচার পৌঁছে দিচ্ছে। তাই প্রত্যেক নারীকে এই সেবা সম্পর্কে জানতে হবে।”

সীতাকুণ্ড গ্রাম আদালতের উপজেলা সমন্বয়কারী মহাসিনা মিনা নারীদের জন্য গ্রাম আদালতের কার্যকারিতা ও সহজলভ্যতার কথা তুলে ধরেন। নারী উদ্যোক্তা সায়রা আমিন উদ্যোক্তা হিসেবে নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।

সঞ্চালনা:
সভাটি সঞ্চালনা করেন সীতাকুণ্ড উপজেলা তথ্য সেবা কর্মকর্তা আসমাউল হুসনা তন্বী। তার দক্ষ পরিচালনায় পুরো বৈঠকটি তথ্যসমৃদ্ধ ও প্রাণবন্ত হয়।

বক্তব্যের মূল বার্তা:
এই বৈঠকে নারীদের অধিকার, ক্ষমতায়ন এবং আইনি সচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। জাতীয় মহিলা সংস্থার সেবাগুলোর কার্যক্রম, বিশেষত নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে তাদের ভূমিকা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীদের আর্থিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।

উদ্দেশ্য ও প্রভাব:
উঠান বৈঠকের মাধ্যমে নারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতায়নের পথ তৈরি এবং তাদের আইনি অধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারীরা নারীদের আত্মনির্ভরশীল হতে এবং আইনি সেবা গ্রহণে আগ্রহী হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

বিশেষ অতিথিদের অভিমত:
নারীদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সীতাকুণ্ড গ্রাম আদালতের উপজেলা সমন্বয়কারী মোহছেনা মিনা বলেন, “গ্রামীণ নারীরা গ্রাম আদালতের সেবা নিয়ে তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারছেন, যা তাদের জীবন সহজতর করেছে।”

নারী উদ্যোক্তা সায়রা আমিন বলেন, “নারীদের আত্মনির্ভরশীল হতে হলে উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। এতে তারা অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হয়ে সমাজে সম্মানজনক স্থান করে নিতে পারবে।”

“তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন” প্রকল্পের আওতায় এই ১০১তম উঠান বৈঠক নারীদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে আরেকটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হলো। অংশগ্রহণকারীরা এই বৈঠকের মাধ্যমে নতুন দিকনির্দেশনা পেয়েছেন এবং তাদের নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আরও সচেতন হয়েছেন। এই ধরনের কার্যক্রম ভবিষ্যতে নারীদের আরও সাহসী ও ক্ষমতাবান করে তুলবে বলে আশা করা যায়।