চট্টগ্রাম 12:12 am, Wednesday, 30 July 2025

বিএনপির লেবাসধারী মামলাবাণিজ্য ও চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করতে বললেন হুম্মাম কাদের চৌধুরী

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন “নতুন যোগ দেয়া বিএনপির লেবাসধারীরা খুব সুন্দর মামলা বাণিজ্য করে যাচ্ছে। কাউকে মামলায় নাম জড়িয়ে নাম কেটে দেবে বলে টাকা আদায় করছে। তাদের আমি তো ক্ষমা করবো না, সাধারণ মানুষ যদি তাদের খুঁজে পায়, পরিণতি খুব খারাপ হবে৷ অনেকে আবার রাস্তায় বাস-ট্রাক থেকে টাকা আদায়ের ব্যবসাও করছে৷ আপনাদের কাছে অনুরোধ, যারা এই চাঁদাবাজি করছে, তাদের তালিকা করে ধরিয়ে দিন। আমি পুলিশের উপর বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস করি জনগণকে। বাংলাদেশে চাঁদাবাজি জনগণই বন্ধ করতে পারবে।”

রোববার (২৭ জুলাই) বিকালে ইসলামপুর ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ইসলামপুর ইউপি মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী সরকারের পতনের অগ্রসৈনিক শহীদ ওয়াসিম, আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ স্মরণে এবং তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, “অনেকে বলছেন ৩৬ দিনের আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু ১৬ বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি। এই ১৬ বছর ধরে প্রতিদিন আমাদের কেউ না কেউ মারা গেছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা প্রতিদিন আঘাত পেয়েছেন, মামলার স্বীকার হয়েছেন, ঘরছাড়া হয়েছেন। বাংলাদেশকে ভালবেসেই তারা এই কাজটি করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনে মো. ফারুক নামে একজন সাধারণ কাঠের ব্যবসায়ী শহীদ হয়েছেন। সে রাজনীতি করতো না, তবে দেশপ্রেমিক ছিলেন। সাধারণ মানুষ আমাদের থেকেও বেশি সাহস দেখিয়েছেন, তাদের কথা আমাদেরকে স্মরণ করতে হবে। যারা নতুন রাজনীতিতে এসেছেন, তাদের জায়গা করে দিচ্ছি। তাদের বলছি এই জনগণ আপনাদের সাথে ছিলো বলে ৩৬ দিনের আন্দোলনে সফল হয়েছেন। এই জনগণের মাঝে আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীরাও ছিলো। যদি আমরা ওপেন হতাম, তবে শেখ হাসিনা এটাকে বিএনপির আন্দোলন বলতো।”

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল মান্নান রনি। প্রধান বক্তা ছিলেন উত্তরজেলা যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি ইউসুফ মিয়া চৌধুরী। যুবদল নেতা মো. রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, এডভোকেট নুরুল ইসলাম, এবিএম সাইফুদ্দিন তালুকদার, কামাল উদ্দিন মেম্বার, শাহেদ কামাল তালুকদার, ইউসুফ কামাল, রেজাউল করিম সওদাগর, সিরাজুল ইসলাম তালুকদার, নেছারুল ইসলাম পেয়ারু, ভিপি আনছুর উদ্দিন, পারভেজ মোশাররফ, ইমরুল হাসান চৌধুরী, জাফর ইকবাল, সৌদিয়া প্রবাসী মো. ইকবাল হোসেন, হেলাল আহমেদ, নিজাম উদ্দিন, মো. খোরশেদ, নাজিম উদ্দীন, ইউসুফ সাগর, আবু মনছুর তালুকদার, বখতিয়ার মাতব্বর, মাকসুদুল হক চৌধুরী, জমির উদ্দিন ইমন, দিদারুল আলম প্রমুখ।

রাঙ্গুনিয়া প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, যখন রাউজান না রাঙ্গুনিয়া স্লোগান শুনি, তখন খুব কষ্ট লাগে। কারণ আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, রাঙ্গুনিয়ার মাটি আমার মাটি, রাঙ্গুনিয়ার মানুষ, আমার মানুষ। আপনারা আমার পরিবার। এটা আমি মন থেকে বিশ্বাস করি। এই ভালবাসা আপনারাই আমাকে দিয়েছেন। যতদিন বেচে আছি, রাজনীতি করি আর না করি, রাঙ্গুনিয়ার মানুষের জন্য গোলামি করে যাবো।

সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “একজন চাচা আমাকে বলল, সামনে নির্বাচন টাকাপয়সা রেডি আছে তো। বহুত খরচ। উনাকে বললাম, যত টাকার খরচ আমাকে বলছেন, অতটাকা আমি চোখেও দেখিনি। ১৬ বছর রাঙ্গুনিয়ার রাজনীতির সাথে জড়িত আমি, এসময়ে আমার পাশে যারা আছেন, তারা কেউ এক টাকাও নেয়নি। নিজের পকেটের টাকা খরচ করে আমাকে নেতা বানিয়েছেন। তাই নির্বাচন নিয়ে আমি টেনশনে নাই। আমার কিচমতে যা আছে, সেটাই হবে। আমার বাবার কিচমতে ছিলো, সে সাতবার এমপি হয়েছেন। আমার কিচমতে যদি থেকে থাকে এবং আপনাদের ভালবাসা যদি থেকে থাকে, তবে সংসদে পৌঁছে যাবো একদিন না একদিন।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

রাঙ্গুনিয়ায় ইউপি সদস্যকে নিয়ে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

বিএনপির লেবাসধারী মামলাবাণিজ্য ও চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করতে বললেন হুম্মাম কাদের চৌধুরী

Update Time : 10:20:02 pm, Sunday, 27 July 2025

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন “নতুন যোগ দেয়া বিএনপির লেবাসধারীরা খুব সুন্দর মামলা বাণিজ্য করে যাচ্ছে। কাউকে মামলায় নাম জড়িয়ে নাম কেটে দেবে বলে টাকা আদায় করছে। তাদের আমি তো ক্ষমা করবো না, সাধারণ মানুষ যদি তাদের খুঁজে পায়, পরিণতি খুব খারাপ হবে৷ অনেকে আবার রাস্তায় বাস-ট্রাক থেকে টাকা আদায়ের ব্যবসাও করছে৷ আপনাদের কাছে অনুরোধ, যারা এই চাঁদাবাজি করছে, তাদের তালিকা করে ধরিয়ে দিন। আমি পুলিশের উপর বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস করি জনগণকে। বাংলাদেশে চাঁদাবাজি জনগণই বন্ধ করতে পারবে।”

রোববার (২৭ জুলাই) বিকালে ইসলামপুর ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ইসলামপুর ইউপি মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী সরকারের পতনের অগ্রসৈনিক শহীদ ওয়াসিম, আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ স্মরণে এবং তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, “অনেকে বলছেন ৩৬ দিনের আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু ১৬ বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি। এই ১৬ বছর ধরে প্রতিদিন আমাদের কেউ না কেউ মারা গেছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা প্রতিদিন আঘাত পেয়েছেন, মামলার স্বীকার হয়েছেন, ঘরছাড়া হয়েছেন। বাংলাদেশকে ভালবেসেই তারা এই কাজটি করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনে মো. ফারুক নামে একজন সাধারণ কাঠের ব্যবসায়ী শহীদ হয়েছেন। সে রাজনীতি করতো না, তবে দেশপ্রেমিক ছিলেন। সাধারণ মানুষ আমাদের থেকেও বেশি সাহস দেখিয়েছেন, তাদের কথা আমাদেরকে স্মরণ করতে হবে। যারা নতুন রাজনীতিতে এসেছেন, তাদের জায়গা করে দিচ্ছি। তাদের বলছি এই জনগণ আপনাদের সাথে ছিলো বলে ৩৬ দিনের আন্দোলনে সফল হয়েছেন। এই জনগণের মাঝে আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীরাও ছিলো। যদি আমরা ওপেন হতাম, তবে শেখ হাসিনা এটাকে বিএনপির আন্দোলন বলতো।”

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল মান্নান রনি। প্রধান বক্তা ছিলেন উত্তরজেলা যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি ইউসুফ মিয়া চৌধুরী। যুবদল নেতা মো. রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, এডভোকেট নুরুল ইসলাম, এবিএম সাইফুদ্দিন তালুকদার, কামাল উদ্দিন মেম্বার, শাহেদ কামাল তালুকদার, ইউসুফ কামাল, রেজাউল করিম সওদাগর, সিরাজুল ইসলাম তালুকদার, নেছারুল ইসলাম পেয়ারু, ভিপি আনছুর উদ্দিন, পারভেজ মোশাররফ, ইমরুল হাসান চৌধুরী, জাফর ইকবাল, সৌদিয়া প্রবাসী মো. ইকবাল হোসেন, হেলাল আহমেদ, নিজাম উদ্দিন, মো. খোরশেদ, নাজিম উদ্দীন, ইউসুফ সাগর, আবু মনছুর তালুকদার, বখতিয়ার মাতব্বর, মাকসুদুল হক চৌধুরী, জমির উদ্দিন ইমন, দিদারুল আলম প্রমুখ।

রাঙ্গুনিয়া প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, যখন রাউজান না রাঙ্গুনিয়া স্লোগান শুনি, তখন খুব কষ্ট লাগে। কারণ আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, রাঙ্গুনিয়ার মাটি আমার মাটি, রাঙ্গুনিয়ার মানুষ, আমার মানুষ। আপনারা আমার পরিবার। এটা আমি মন থেকে বিশ্বাস করি। এই ভালবাসা আপনারাই আমাকে দিয়েছেন। যতদিন বেচে আছি, রাজনীতি করি আর না করি, রাঙ্গুনিয়ার মানুষের জন্য গোলামি করে যাবো।

সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “একজন চাচা আমাকে বলল, সামনে নির্বাচন টাকাপয়সা রেডি আছে তো। বহুত খরচ। উনাকে বললাম, যত টাকার খরচ আমাকে বলছেন, অতটাকা আমি চোখেও দেখিনি। ১৬ বছর রাঙ্গুনিয়ার রাজনীতির সাথে জড়িত আমি, এসময়ে আমার পাশে যারা আছেন, তারা কেউ এক টাকাও নেয়নি। নিজের পকেটের টাকা খরচ করে আমাকে নেতা বানিয়েছেন। তাই নির্বাচন নিয়ে আমি টেনশনে নাই। আমার কিচমতে যা আছে, সেটাই হবে। আমার বাবার কিচমতে ছিলো, সে সাতবার এমপি হয়েছেন। আমার কিচমতে যদি থেকে থাকে এবং আপনাদের ভালবাসা যদি থেকে থাকে, তবে সংসদে পৌঁছে যাবো একদিন না একদিন।”