চট্টগ্রাম 9:00 pm, Sunday, 17 August 2025

মিরসরাইয়ে আলোচিত সায়েদ হত্যার ১ বছর পর ২ আসামি গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আলোচিত সায়েদ আলম প্রকাশ সাঈদ (৩৫) হত্যার ১ বছর পর মামলার রহস্য উদঘাটন ও মামলার ২ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে গনমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আবদুল হালিম। ওসি এম আবদুল হালিম বলেন, ‘গত বছরের ১৩ আগস্ট সোনাপাহাড়ের পাদদেশ হতে একটি খন্ড বিখন্ড লাশ উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। যা গত বছরের ৫ আগস্ট বিজয় মিছিল গিয়ে নিখোঁজ সায়েদ আলম প্রকাশ সাঈদ আলম (৩৫) এর বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করে তার ভাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

মামলার ঘটনা পরবর্তীতে ডিএনএ পরীক্ষাসহ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এজাহারনামীয় ১নং আসামী মো. ইমাম হোসেনকে চলতি মাসের ১১ আগস্ট গ্রেফতারের পরে জিজ্ঞাসাবাদে সায়েদ আলম হত্যার সাথে নিজে জড়িত থাকলেও স্বীকারোক্তি প্রদান করে নাই। কিন্ত মামলার ঘটনা সম্পর্কে মো. ইমাম হোসেন তার শ্বশুর ও সাকিবের পিতা মো. জসিম ঘটনার বিষয়ে জানালে জসিম ঘটনার বিষয়ে জানতে পারে এবং নিজের মেয়ের জামাই ও ছেলের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে সাক্ষী হিসাবে ফৌজদারি কার্য বিধি ১৬৪ ধারা জবানবন্দি প্রদান করলে মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়।’

ওসি আরো বলেন, ‘পরবর্তীতে অপর পলাতক আসামী জসিমের ছেলে মো. শাকিব (২১) কে র‌্যাব-১১ এর সহায়তায় গত ১৫ আগস্ট নোয়াখালীর চাটখিল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সায়েদ আলম, সাকিব ও ইমাম পরষ্পর বন্ধুর মত ছিলো, তাদের প্রায় দুই বছরের জানাশুনা ছিল। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। কিন্তু শাকিবকে সায়েদ আলম কর্তৃক চুরির অপবাদে মারধর এবং সায়েদ আলম শাকিবের শিশু ছেলেকে আটক করে শ্বাশুরীর নিকট হইতে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করার ঘটনার জের ধরে ধীরে ধীরে সায়েদ আলমের প্রতি শাকিবের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

এমতাবস্থায় গত বছরের ৫ই আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের দিনকে সুযোগ হিসাবে কাজে লাগিয়ে রাত অনুমান ১১টার দিকে সাকিবের বোন জামাই ইমামের মাধ্যমে সায়েদ আলমকে ইমামের খামারে ডেকে নিয়ে এসে মাদক সেবন করায়। একপর্যায়ে সায়েদ আলম মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে আসামী শাকিব পিছন দিক থেকে ধারালো রামদা দিয়ে সায়েদের মাথায় কোপ মারে, সায়েদ মাথায় হাত দিলে শাকিব আবারো কোপ মারে। ঐ কোপে সায়েদের বাম হাতটি কেটে শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। এরপর শাকিব আরেকটি কোপ মারলে সায়েদ আলম মাটিতে পড়ে যায়। তখন ইমাম হোসেন সায়েদ আলমের গলা কেটে জবাই করে।

পরবর্তীতে শাকিব ও ইমাম হোসেন সায়েদ আলম এর মৃতদেহ বস্তায় ভরে কচ্ছইব্যা ঘোনা সোনাপাহাড়ের পাদদেশে ফেলে দেয়। এই বিষয়ে আসামী মো. শাকিব আদালতে ১৬৪ ধারামতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন।’ জোরারগঞ্জ থানার ওসি আবদুল হালিম বলেন, তাদেরকে চট্টগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ তৈরীর গুজব

মিরসরাইয়ে আলোচিত সায়েদ হত্যার ১ বছর পর ২ আসামি গ্রেপ্তার

Update Time : 07:50:43 pm, Sunday, 17 August 2025

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আলোচিত সায়েদ আলম প্রকাশ সাঈদ (৩৫) হত্যার ১ বছর পর মামলার রহস্য উদঘাটন ও মামলার ২ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে গনমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আবদুল হালিম। ওসি এম আবদুল হালিম বলেন, ‘গত বছরের ১৩ আগস্ট সোনাপাহাড়ের পাদদেশ হতে একটি খন্ড বিখন্ড লাশ উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। যা গত বছরের ৫ আগস্ট বিজয় মিছিল গিয়ে নিখোঁজ সায়েদ আলম প্রকাশ সাঈদ আলম (৩৫) এর বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করে তার ভাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

মামলার ঘটনা পরবর্তীতে ডিএনএ পরীক্ষাসহ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এজাহারনামীয় ১নং আসামী মো. ইমাম হোসেনকে চলতি মাসের ১১ আগস্ট গ্রেফতারের পরে জিজ্ঞাসাবাদে সায়েদ আলম হত্যার সাথে নিজে জড়িত থাকলেও স্বীকারোক্তি প্রদান করে নাই। কিন্ত মামলার ঘটনা সম্পর্কে মো. ইমাম হোসেন তার শ্বশুর ও সাকিবের পিতা মো. জসিম ঘটনার বিষয়ে জানালে জসিম ঘটনার বিষয়ে জানতে পারে এবং নিজের মেয়ের জামাই ও ছেলের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে সাক্ষী হিসাবে ফৌজদারি কার্য বিধি ১৬৪ ধারা জবানবন্দি প্রদান করলে মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়।’

ওসি আরো বলেন, ‘পরবর্তীতে অপর পলাতক আসামী জসিমের ছেলে মো. শাকিব (২১) কে র‌্যাব-১১ এর সহায়তায় গত ১৫ আগস্ট নোয়াখালীর চাটখিল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সায়েদ আলম, সাকিব ও ইমাম পরষ্পর বন্ধুর মত ছিলো, তাদের প্রায় দুই বছরের জানাশুনা ছিল। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। কিন্তু শাকিবকে সায়েদ আলম কর্তৃক চুরির অপবাদে মারধর এবং সায়েদ আলম শাকিবের শিশু ছেলেকে আটক করে শ্বাশুরীর নিকট হইতে পাঁচ হাজার টাকা আদায় করার ঘটনার জের ধরে ধীরে ধীরে সায়েদ আলমের প্রতি শাকিবের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

এমতাবস্থায় গত বছরের ৫ই আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের দিনকে সুযোগ হিসাবে কাজে লাগিয়ে রাত অনুমান ১১টার দিকে সাকিবের বোন জামাই ইমামের মাধ্যমে সায়েদ আলমকে ইমামের খামারে ডেকে নিয়ে এসে মাদক সেবন করায়। একপর্যায়ে সায়েদ আলম মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে আসামী শাকিব পিছন দিক থেকে ধারালো রামদা দিয়ে সায়েদের মাথায় কোপ মারে, সায়েদ মাথায় হাত দিলে শাকিব আবারো কোপ মারে। ঐ কোপে সায়েদের বাম হাতটি কেটে শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। এরপর শাকিব আরেকটি কোপ মারলে সায়েদ আলম মাটিতে পড়ে যায়। তখন ইমাম হোসেন সায়েদ আলমের গলা কেটে জবাই করে।

পরবর্তীতে শাকিব ও ইমাম হোসেন সায়েদ আলম এর মৃতদেহ বস্তায় ভরে কচ্ছইব্যা ঘোনা সোনাপাহাড়ের পাদদেশে ফেলে দেয়। এই বিষয়ে আসামী মো. শাকিব আদালতে ১৬৪ ধারামতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন।’ জোরারগঞ্জ থানার ওসি আবদুল হালিম বলেন, তাদেরকে চট্টগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে।