চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঘরের নারী-পুরুষ ও শিশু সবাইকে বেঁধে দুই প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। দুই পরিবারে হানা দিয়ে ডাকাত দল সোনার গহনা, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। সোমবার রাত দুইটার দিকে উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের দক্ষিণ আজম নগর এলাকায় এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তবে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এই ঘটনায় থানায় কোন লিখিত অভিযোগ করেনি ভুক্তভোগী পরিবার দুটির সদস্যদের কেউ।
সরজমিনে হিঙ্গুলী ইউনিয়নের দক্ষিণ আজম নগর এলাকায় ডাকাতির শিকার পরিবার দুটির ঘরে গিয়ে দেখা যায় আসবাবসহ কাপড়চোপড় এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে মেঝেতে। খোলা পড়ে আছে ভাঙা আলমারি। দুই পরিবারের সদস্যদের চোখে মুখে তখনও আতঙ্কের ছাপ। ডাকাতির খবর শুনে বাড়ির উঠোনে এসে ভিড় করছেন প্রতিবেশীরা।
জানতে চাইলে ডাকাতির শিকার পরিবার দুটির অভিভাবক ও ভুক্তভোগী নুরজাহান বেগম (৬৫) বলেন, একই বাড়িতে দুই পাশে পাকা ঘর তুলে আমার তিন ছেলে এখানে বসবাস করে। সোমবার রাত ২ টার দিকে বাড়ির পূর্ব পাশে ছোট ও মেজো ছেলের ঘরে হানা দেয় ১৫-২০ জনের একটি ডাকাত দল। মুখে কালো রঙের মুখোশ, গায়ে শট গেঞ্জি ও হাফপেন্ট পরা ডাকাতদের হাতে ছুরি চাপাতি ও রিভলভারসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ছিল। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তারা আমাকে, আমার দুই ছেলে ছেলের বউ তাদের বাচ্চা ও বেড়াতে আসা আমার বোনকে দড়ি আর কাপড় দিয়ে হাত মুখ বেঁধে ফেলে রাখে।
এরপর ঘরের আলমারিসহ অন্যান্য আসবাব ভেঙে তছনছ করে বিভিন্ন ধরনের দুই ভরি সোনার গহনা, নগদ প্রায় ৮৫ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এরপর বাড়ির পশ্চিম পাশে প্রবাসী বড় ছেলে ওহিদুর রহমানের ঘরে হানা দেয় ডাকাতরা। সেখানে আমার বড় বউ রোজিনা আক্তারকে অস্ত্রের মুখে বেঁধে একজোড়া কানের দুল, একটি দা ও নাতির হাতের স্মার্ট ঘড়িসহ আরো কিছু মালামাল নিয়ে যায়। ডাকাতের কবলে পড়া ঘরের সদস্যরা এখনো স্বাভাবিক হতে পারছে না। মাত্র দুই মাস আগে আমার প্রবাস ফেরত ছোট ছেলেকে বিয়ে করিয়েছি। ঘরের নতুন বউয়ের হাতের গলার ও কানের সমস্ত গহনা নিয়ে গেছে ডাকাতরা। পাঁচ বছর আগেও আমাদের বাড়িতে বড় ধরনের ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিলো। এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আমার ছেলেরা।
জানতে চাইলে দক্ষিণ আজম নগর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, সোমবার মধ্যরাতে এলাকার এক বাড়িতে দুই প্রবাসীর ঘরে ডাকাতির বিষয়টি জেনেছি। গ্রামের একপাশে কিছুটা বিচ্ছিন্ন এলাকায় হওয়ায় ওই বাড়িটিতে আগেও একবার ডাকাতি হয়েছিলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল হালিম বলেন, হিঙ্গুলী ইউনিয়নের দক্ষিণ আজম নগর এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় কেউ এখনো পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আমি বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।