চট্টগ্রাম 1:38 am, Wednesday, 30 July 2025

মিরসরাইয়ে রিমাল মোকাবিলায় ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২১টি চিকিৎসক টিম প্রস্তত

মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন ও সিপিপির টিমের যৌথ সমন্বয়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখতে ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, উপকূলের ইউনিয়নগুলোতে ইউপি চেয়ারম্যানদের সহায়তায় কাজ করছে।

শনিবার (২৫ মে) রাত থেকে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে মাইকিং করে যাচ্ছে উপজেলা সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপজেলা জুড়ে সকাল থেকে আকাশ মেঘলা রয়েছে। রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসক এর কাছ থেকে জরুরি ত্রাণের বরাদ্দ ইতোমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিসসহ সকল প্রস্তুতি গ্রহণ ও জরুরি প্রয়োজনে উপজেলার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর টিম প্রস্তুত রয়েছে।

উপকূলীয় এলাকা সাহেরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, সাহেরখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার রাত থেকে মাইকিং করা হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য। এছাড়াও সাগরে যত মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত বোট ও নৌকা মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আগে থেকে তারা নিরাপদ স্থানে সরে এসেছে।

মিরসরাই উপজেলা সিপিপি টিম লিডার এম সাইফুল্লাহ দিদার বলেন, ১০ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভায় আমাদের ৮০ টিম মাঠে থাকবে। ৮০ টিমে ১ হাজার ৬০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। যারা নিজ নিজ ইউনিটে প্রচারণার কাজ শুরু করে দিয়েছে। একটি টিমে ১০ জন পুরুষ ও ১০ জন মহিলা সদস্য রয়েছে।

মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনের ষ্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, প্রয়োজনীয় ইকুয়েপমেন্টসহ আমাদের ৩টি টিম গঠন করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের টিম সর্বদা প্রস্তুতি রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ভারি বৃষ্টি হলে পাকা বোরো ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। কৃষকদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দ্রুত ধান কেটে ফেলার। তবে ভারি বর্ষণ ও দমকা বাতাস না হলে ক্ষতির আশঙ্কা তেমন নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন বলেন, উপকূল বাসীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ২১টি টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। ৫টি টিম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১৬টি টিম ১৬ ইউনিয়নে কাজ করবে। এছাড়া এ্যাম্বুলেন্স, পর্যাপ্ত স্যালাইনসহ প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’র ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছি। সব দপ্তরের কর্মকর্তা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সভা করে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে উপকূলীয় তিনটি ইউনিয়ন সাহেরখালী, মঘাদিয়া, ইছাখালী ইউনিয়ন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়েছে। বিশেষ করে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের শ্রমিক, উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়নে মাইকিং ও লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে শুকনো খাবার, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের ব্যবস্থা রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

রাঙ্গুনিয়ায় ইউপি সদস্যকে নিয়ে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

মিরসরাইয়ে রিমাল মোকাবিলায় ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২১টি চিকিৎসক টিম প্রস্তত

Update Time : 08:52:05 pm, Sunday, 26 May 2024

মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন ও সিপিপির টিমের যৌথ সমন্বয়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখতে ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, উপকূলের ইউনিয়নগুলোতে ইউপি চেয়ারম্যানদের সহায়তায় কাজ করছে।

শনিবার (২৫ মে) রাত থেকে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে মাইকিং করে যাচ্ছে উপজেলা সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপজেলা জুড়ে সকাল থেকে আকাশ মেঘলা রয়েছে। রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসক এর কাছ থেকে জরুরি ত্রাণের বরাদ্দ ইতোমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিসসহ সকল প্রস্তুতি গ্রহণ ও জরুরি প্রয়োজনে উপজেলার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর টিম প্রস্তুত রয়েছে।

উপকূলীয় এলাকা সাহেরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, সাহেরখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার রাত থেকে মাইকিং করা হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য। এছাড়াও সাগরে যত মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত বোট ও নৌকা মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আগে থেকে তারা নিরাপদ স্থানে সরে এসেছে।

মিরসরাই উপজেলা সিপিপি টিম লিডার এম সাইফুল্লাহ দিদার বলেন, ১০ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভায় আমাদের ৮০ টিম মাঠে থাকবে। ৮০ টিমে ১ হাজার ৬০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। যারা নিজ নিজ ইউনিটে প্রচারণার কাজ শুরু করে দিয়েছে। একটি টিমে ১০ জন পুরুষ ও ১০ জন মহিলা সদস্য রয়েছে।

মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনের ষ্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, প্রয়োজনীয় ইকুয়েপমেন্টসহ আমাদের ৩টি টিম গঠন করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের টিম সর্বদা প্রস্তুতি রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ভারি বৃষ্টি হলে পাকা বোরো ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। কৃষকদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দ্রুত ধান কেটে ফেলার। তবে ভারি বর্ষণ ও দমকা বাতাস না হলে ক্ষতির আশঙ্কা তেমন নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন বলেন, উপকূল বাসীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ২১টি টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। ৫টি টিম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১৬টি টিম ১৬ ইউনিয়নে কাজ করবে। এছাড়া এ্যাম্বুলেন্স, পর্যাপ্ত স্যালাইনসহ প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’র ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছি। সব দপ্তরের কর্মকর্তা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সভা করে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে উপকূলীয় তিনটি ইউনিয়ন সাহেরখালী, মঘাদিয়া, ইছাখালী ইউনিয়ন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়েছে। বিশেষ করে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের শ্রমিক, উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়নে মাইকিং ও লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে শুকনো খাবার, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের ব্যবস্থা রয়েছে।