চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে শিশু ওয়াসিম হত্যা মামলায় এক ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড ও আরেক ভাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত অসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (৯ জুন) চট্টগ্রামের ১ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আউয়াল এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, উপজেলার ১১ নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের ভূঁইয়া গ্রামের কাজী বাড়ির ফজলুল কবিরের ছেলে কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি হলেন তার ভাই কাজী ইকবাল হোসেন বিপ্লব।
হত্যার শিকার শিশু ওয়াসিম মীরসরাইয়ের ১১ নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের ভূঁইয়া গ্রামের কাজী মোশাররফ হোসেন বাবলুর ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২২ নভেম্বর উপজেলার ১১ নং মঘাদিয়ায় কাজী মোশাররফ হোসেন বাবলুর ৫ বছর বয়সী শিশু ওয়াসিমকে তাঁর বাড়ির পাশের ছনখোলায় হত্যা করে বাড়ির পাশের মাঠে ফেলে রাখে। আসামি কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব শিশু ওয়াসিমকে দীর্ঘ ক্ষণ গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যা নিশ্চিত করতে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দেয়।
মৃত্যু নিশ্চিত হলে বাড়ি চলে যায়। ঘটনাটি বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনকে জানায়। তারা পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু তানা পালায়নি। তবে আসামির পরিবারের সদস্যরা ওয়াসিমের মরদেহ বস্তাবন্দি করে পাশের ধানক্ষেতে ফেলে দেয়। শিশু ওয়াসিমকে কোথাও না পেয়ে চাচা কাজী একরামুল হক মীরসরাই থানায় পরদিন সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ঘটনার পরদিনএকটি শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ ধানক্ষেতে দেখে। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা মীরসরাই থানা পুলিশকে খবর দেয়। থানা পুলিশ শিশুটির বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের করে। শিশুর স্বজনরা ওয়াসিমের মরদেহ শনাক্ত করে। ঘটনাস্থল থেকে আসামির মোবাইল ও শিশুটির স্যান্ডেল উদ্ধার করে হত্যাকারীকে শনাক্ত করে। পুলিশ পল্লবকে তাদের বাড়ি থেকে আটক করে। এসময় পল্লব ওয়াসিমকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। এ ঘটনায় শিশুর চাচা একরামুল হক একই বছরের ২৪ নভেম্বর মীরসরাই থানায় হত্যা মামলা করেন। আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আসামি পল্লব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ যুক্তিতর্ক শেষে মামলার বাদী, ডাক্তার, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ২১ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামি কাজী নাহিদ হোসেন পল্লবকে মৃত্যুদণ্ড এবং কাজী ইকবাল হোসেন বিপ্লবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।