মুছাপুর বদিউজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের গর্বিত প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক, মরহুম কাজী মুহাম্মদ আলমগীর-এর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় একটি স্মৃতিময় ও আবেগঘন আয়োজনে, যেখানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
প্রয়াত কাজী মুহাম্মদ আলমগীর ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষাবিদ ও নিবেদিতপ্রাণ প্রশাসক। তিনি শুধু একজন প্রধান শিক্ষকই ছিলেন না, ছিলেন বিদ্যালয়ের উন্নয়নের অন্যতম কারিগর। তাঁর তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়ে পাঠদান, শৃঙ্খলা ও সহ-পাঠ কার্যক্রমে এসেছে সুদৃঢ় পরিবর্তন। তাঁর হাতে গড়া প্রজন্ম আজ সমাজের নানা স্তরে গৌরবের সাথে কাজ করে চলেছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং পরে বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল কবির-এর সভাপতিত্বে মূল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আখতারুজ্জামান সুজন।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “কাজী মুহাম্মদ আলমগীর স্যার শুধু এই বিদ্যালয়ের নয়, পুরো অঞ্চলের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি বাতিঘর ছিলেন। তাঁর দেখানো পথে আমাদের চলা উচিত। এই মৃত্যুবার্ষিকী শুধু শোক নয়, তাঁর আদর্শ ধারণ করার একটি সুযোগ।”
আলোচনায় অংশ নেন বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সিনিয়র শিক্ষক বেলাল উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান, গুলশান আরা খানম, মাওলানা আবু তাহের এবং শাখাওয়াত হোসেনসহ আরও অনেকে। তাঁরা বলেন, “প্রয়াত আলমগীর স্যার ছিলেন একজন কঠোর নীতিবান, অথচ অতি মানবিক ব্যক্তি। ছাত্র-শিক্ষক সবার মাঝে তাঁর প্রভাব ছিল স্পষ্ট ও ইতিবাচক। তাঁকে আমরা আজও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।”
তাঁরা আরও বলেন, বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিচালনা কমিটি যে মহান উদ্যোগে এই আয়োজন করেছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ ধরনের আয়োজন নতুন প্রজন্মকে অতীতের মূল্যবান ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে পরিচিত করে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় দিক।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন—বিশেষ করে শিক্ষা, ক্রীড়া ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পরিচালনা কমিটির গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তাঁরা বলেন, বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে বিদ্যালয়ে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের ধারা সূচিত হয়েছে, যা মরহুম প্রধান শিক্ষকের স্বপ্নের শিক্ষাঙ্গন গড়ে তোলার পথে সহায়ক হবে।
আলোচনা সভা শেষে মরহুম কাজী মুহাম্মদ আলমগীর-এর আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এলাকার বিশিষ্ট আলেম ও শিক্ষক মাওলানা আবু তাহের দোয়া পরিচালনা করেন। মরহুম কাজী মুহাম্মদ আলমগীর স্যারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এমন আয়োজন নিঃসন্দেহে একটি সময়োপযোগী ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। শিক্ষার্থীদের মাঝে তাঁর জীবনদর্শন ও শিক্ষা ভাবনার বীজ বপন করার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখা দরকার।