চট্টগ্রামের উপকূলীয় দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের বিচ্ছিন্ন উড়ির চর ইউনিয়নে অবস্থিত ‘ভাষা শহীদ সালাম’ আশ্রয়ণ প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। সরকারের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
সোমবার সকালে( ৭ জুলাই) এক বিশেষ অনুষ্ঠানে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম তৌহিদুল ইসলাম এই প্রকল্পটি হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মংচিংনু মারমা। তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ‘আশ্রয়ণ-২’ প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে হাজার হাজার মানুষ গৃহের নিশ্চয়তা পাচ্ছেন। সন্দ্বীপের এই প্রকল্প তারই একটি সফল উদাহরণ। শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই নয়, এই প্রকল্প গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য স্বপ্ন, নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সামাজিক স্থিতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।”
তিনি আরও বলেন, সরকারপ্রদত্ত এই বিনামূল্যের আবাসনে বসবাসকারী পরিবারগুলো যেন পরিচ্ছন্নতা, সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রেখে জীবনযাপন করে—এটা নিশ্চিত করাও আমাদের সকলের দায়িত্ব।
এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রকল্পটির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:৬৮টি পাকা ব্যারাক হাউজ, প্রতিটিতে রয়েছে ৫টি কক্ষ,মোট ৩৪০টি ঘর,১৩৬টি টয়লেট ও ৬৮টি বাথরুম,১৭টি গভীর নলকূপ প্রতিটি ব্যারাকে রান্নাঘর, বিদ্যুৎ সংযোগ ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা রয়েছে।
স্থানীয় বহু গৃহহীন পরিবার এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী আবাসন পেয়েছে। উপকৃত বাসিন্দারা জানান, এই ঘরগুলো শুধু আশ্রয় নয়, বরং তাদের জীবনে নতুন আশার আলো এনেছে। তারা বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রকল্পটির নামকরণ করা হয়েছে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদ আবদুস সালাম-এর নামে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এই নামকরণকে সম্মান, গৌরব ও জাতীয় মর্যাদার প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেন। তাদের মতে, এই প্রকল্প কেবল একটি বাসস্থান নয়—বরং এটি দেশের ইতিহাস, আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি।
ভাষা শহীদ সালাম’ আশ্রয়ণ প্রকল্প সন্দ্বীপবাসীর জন্য এক নতুন যুগের সূচনা। এটি প্রমাণ করে— রাষ্ট্র যখন চায়, তখন সে পারে জনগণের জন্য নিরাপদ, সম্মানজনক ও মানবিক আবাসনের ব্যবস্থা করতে।