চট্টগ্রাম 2:56 pm, Wednesday, 16 July 2025

সন্দ্বীপে গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

স্থানীয় বিরোধ অল্প সময়ে স্বল্প খরচে স্থানীয় ভাবে নিস্পত্তির জন্য চালু করা হয়েছে গ্রাম আদালত। গ্রাম আদালতের এ সেবা সম্পকে ব্যাপক প্রচারণার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন সোমবার সকালে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে উপজেলা গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিগ্যান চাকমা। তিনি আরো বলেন সরকারী বেসরকারী নানা উদ্যোগের মধ্য দিয়ে জনগনের সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ছোট খাটো ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলা নিস্পত্তি করা হয়। দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে ২০ টাকা আর ফৌজদারী মামলার জন্য মাত্র ১০ টাকা ফিস দিয়েই ইউনিয়ন পরিষদে বিচারিক সেবা পাওয়ার সুযোগ আছে। ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপুর বিচার গ্রাম আদালতের মাধ্যমে করা যায়।

ইউনিয়ন পরিষদের মামলার আবেদনকারী ও প্রতিবাদী উভয়ের পক্ষে ২জন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং ২জন গন্যমান্য ব্যাক্তি মনোনয়ন করার মধ্যদিয়ে গ্রাম আদালত গঠন করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচিত হয়।চেয়ারম্যান এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে চেয়ারম্যান দায়িত্ব হস্তান্তর করে পছন্দ মতো বিচারক নিয়োগের সুযোগ রয়েছে গ্রাম আদালত আইনে। চেয়ারম্যান ও মনোনীত ৪ জন সদস্য মিলেই ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদারতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চত করা সম্ভব। এর ফলে বিচারপ্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে পারেন।গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রদেয় এসকল সেবা সম্পকে গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনসাধারণ এখনো জানে না ।

এর ফলে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে থানায় ও জেলা কোটে গিয়ে অর্থ, সময় নষ্ট করার পাশাপাশি নানা ভোগান্তির শিকার হন তারা। বিশেষ করে নারীরা তাদের সমস্যা সমাধানে বাড়ির কাছেই পেয়েছে গ্রাম আদালত । নারীরা এ সেবা বিষয়ে না জানার কারণে তারা ও সেবা নিতে কম আসছেন গ্রাম আদালতে। সরকারী এ সেবা বিষয়ক ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন সরকারী, বেসরকারি ও স্থানীয় এনজিও এর উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন সভা, ওয়ার্কসপ ও প্রশিক্ষনে এ বিষয়টি আলোচনা করা দরকার। একই সাথে সন্দ্বীপে কর্মরত এনজিও সমূহের মাধ্যমে ও প্রচারণার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও সুবিধাবঞ্চিত দের বিচারিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকার কাজ করছেন।

তাদের মধ্যে গ্রাম আদালতের সেবা বিষয়ক তথ্য প্রচার করার প্রতি বেশি জোর দেন তিনি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গ্রাম আদালতের কাজ চলমান রাখার বিষয়ে ও তিনি আলোচনা করেন। তিনি বলেন স্থানীয় বিচার নিস্পত্তির জন্য ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন পাশ করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবেদনকারী ও প্রতিবাদীর মনোনীত ৪ জন সদস্যকে নিয়ে গ্রাম আদালত পরিচালনা করবেন। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যান এ কাজটি পরিচালনা করবেন। ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল কার্যকর না থাকলে ইউনিয়ন পরিষদের যে কোন সদস্যকে গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করে গ্রাম আদালতের সেবা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন তিনি।

সভায় আন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি অংছিং মারমা, উপর প্রকৌশলী আবদুল আলিম, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার আলী আজম, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আতিকুল্ল্যাহ, বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মহিউদ্দীন,মুছাপুর ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যান সুরাইয়া বেগম, মগধরা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ ইলিয়াস, হারামিয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান লুনা বেগম, গাছুয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম, রহমতপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান রাহেনা বেগম, কালাপানিয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান জান্নাতুল বাকিয়া, বাউরিয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল গনি, আজিমপুর প্যানেল ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, আমানউল্লাহ ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান জাবেদ ওমর, সহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

হাটহাজারীতে এক দিনের ব্যবধানে আরেক দুবাই প্রবাসীর মৃত্যু

সন্দ্বীপে গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

Update Time : 07:58:22 pm, Monday, 30 December 2024

স্থানীয় বিরোধ অল্প সময়ে স্বল্প খরচে স্থানীয় ভাবে নিস্পত্তির জন্য চালু করা হয়েছে গ্রাম আদালত। গ্রাম আদালতের এ সেবা সম্পকে ব্যাপক প্রচারণার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন সোমবার সকালে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে উপজেলা গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিগ্যান চাকমা। তিনি আরো বলেন সরকারী বেসরকারী নানা উদ্যোগের মধ্য দিয়ে জনগনের সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ছোট খাটো ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলা নিস্পত্তি করা হয়। দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে ২০ টাকা আর ফৌজদারী মামলার জন্য মাত্র ১০ টাকা ফিস দিয়েই ইউনিয়ন পরিষদে বিচারিক সেবা পাওয়ার সুযোগ আছে। ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপুর বিচার গ্রাম আদালতের মাধ্যমে করা যায়।

ইউনিয়ন পরিষদের মামলার আবেদনকারী ও প্রতিবাদী উভয়ের পক্ষে ২জন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং ২জন গন্যমান্য ব্যাক্তি মনোনয়ন করার মধ্যদিয়ে গ্রাম আদালত গঠন করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচিত হয়।চেয়ারম্যান এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে চেয়ারম্যান দায়িত্ব হস্তান্তর করে পছন্দ মতো বিচারক নিয়োগের সুযোগ রয়েছে গ্রাম আদালত আইনে। চেয়ারম্যান ও মনোনীত ৪ জন সদস্য মিলেই ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদারতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চত করা সম্ভব। এর ফলে বিচারপ্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে পারেন।গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রদেয় এসকল সেবা সম্পকে গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনসাধারণ এখনো জানে না ।

এর ফলে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে থানায় ও জেলা কোটে গিয়ে অর্থ, সময় নষ্ট করার পাশাপাশি নানা ভোগান্তির শিকার হন তারা। বিশেষ করে নারীরা তাদের সমস্যা সমাধানে বাড়ির কাছেই পেয়েছে গ্রাম আদালত । নারীরা এ সেবা বিষয়ে না জানার কারণে তারা ও সেবা নিতে কম আসছেন গ্রাম আদালতে। সরকারী এ সেবা বিষয়ক ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন সরকারী, বেসরকারি ও স্থানীয় এনজিও এর উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন সভা, ওয়ার্কসপ ও প্রশিক্ষনে এ বিষয়টি আলোচনা করা দরকার। একই সাথে সন্দ্বীপে কর্মরত এনজিও সমূহের মাধ্যমে ও প্রচারণার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও সুবিধাবঞ্চিত দের বিচারিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকার কাজ করছেন।

তাদের মধ্যে গ্রাম আদালতের সেবা বিষয়ক তথ্য প্রচার করার প্রতি বেশি জোর দেন তিনি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গ্রাম আদালতের কাজ চলমান রাখার বিষয়ে ও তিনি আলোচনা করেন। তিনি বলেন স্থানীয় বিচার নিস্পত্তির জন্য ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন পাশ করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবেদনকারী ও প্রতিবাদীর মনোনীত ৪ জন সদস্যকে নিয়ে গ্রাম আদালত পরিচালনা করবেন। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যান এ কাজটি পরিচালনা করবেন। ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল কার্যকর না থাকলে ইউনিয়ন পরিষদের যে কোন সদস্যকে গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করে গ্রাম আদালতের সেবা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন তিনি।

সভায় আন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি অংছিং মারমা, উপর প্রকৌশলী আবদুল আলিম, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার আলী আজম, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আতিকুল্ল্যাহ, বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মহিউদ্দীন,মুছাপুর ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যান সুরাইয়া বেগম, মগধরা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ ইলিয়াস, হারামিয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান লুনা বেগম, গাছুয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম, রহমতপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান রাহেনা বেগম, কালাপানিয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান জান্নাতুল বাকিয়া, বাউরিয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল গনি, আজিমপুর প্যানেল ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, আমানউল্লাহ ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান জাবেদ ওমর, সহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ।