এমবিবিএস পাশ না হয়েও তিনি সবধরণের রোগের চিকিৎসা দেন। থাইরয়েডের বিশেষজ্ঞ না হওয়া স্বত্তেও তিনি এই রোগের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। এছাড়া একাধারে দাতের অপারেশন করেন, গেস্ট্রোলিভারের রোগী দেখেন। পাশাপাশি অন্যান্য অপারেশন, জটিল রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপদেশ চিকিৎসাপত্রে লিখে দেন৷ বলছি গিয়াস উদ্দিন (৪৫) নামের এমন প্রতারকের কথা।
রোগী দেখেন ঢাকার নবাবগঞ্জের পুরাতন বান্দুরা এলাকায় অবস্থিত ‘বান্দুরা সেন্ট্রাল হাসপাতালে’ । যদিও এমবিবিএস পাশ করেননি৷ কিন্তু এই হাসপাতালে দীর্ঘদিন যাবৎ এমবিবিএস পরিচয়ে এভাবেই রোগীদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন।
গ্রামের সাধান মানুষকে ভুলভাল বুঝিয়ে এই হাসপাতালে শুক্রবার হলেই চেম্বার করেন। রোগীরাও তার এত বড় পদবী দেখে না বিশ্বাস না করার কিছুই নেই৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফলতি ও অসচেতনতার অভাবের কারণেই এই দুর্দশায় শিকার এখানকার মানুষ৷ হাসপাতাল পরিচালকরা যাচাই-বাছাই না করেই এই ভুয়া ডাক্তারকে চেম্বার করার সুযোগ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের৷
তারা বলছেন, শুধু এই ভুয়া ডাক্তার গিয়াস উদ্দিন নয়, হাসপাতাল মালিককেও আইনের আওতায় আনা দরকার৷ তা না হলে এভাবে কিছু অসাধু হাসপাতাল ব্যবসাসীদের কারনে দিনদিন নবাবগঞ্জে ভুয়া ডাক্তারে ভরে যাবে৷
এই পরিচয়ধারী এমবিবিএস গিয়াস উদ্দিনের বিষয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন উপজেলা প্রশাসনের কাছে৷ এমন অভিযোগে শুক্রবার ১২ মে বেলা ১২ টার দিকে ঐ হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযান করা হয়৷ সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নামধারী ডাক্তার গিয়াস উদ্দিনের এমবিবিএস ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চান ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আঃ হালিম৷
এসময় এমবিবিএস এর কোন সনদ দেখাতে না পারায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মেজবাহ উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিনকে ভুয়া ডাক্তার হিসেবে নিশ্চিত করেন৷ পরে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলেই তাকে এক মাসের কারাদণ্ড দেন৷ গিয়াস উদ্দিন ময়মনসিংহ সদর থানার বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আ. হালিম এশিয়ান টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনও স্যারের নির্দেশনায় বান্দুরা সেন্ট্রাল হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করি। এমবিবিএস পরিচয়ধারী গিয়াস উদ্দিন সনদপত্র দেখাতে না পারায় ভুয়া ডাক্তার হিসেবে নিশ্চিত হলে ১ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়৷
তিনি আরও বলেন, নবাবগঞ্জে এধরণের অভিযান পরবর্তীতেও চালানো হবে৷