সনাতনী ধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণ সংক্রান্ত গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পুলিশ বলছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে এই গুজব ছড়িয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে রবিবার দুপুরে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে হেফাজতে ইসলামের নেতা মুফতি হারুণ ইজহার তিনি লেখেন ‘ঢাকার কিছু তরুণ আলেম উদ্যোক্তা গত শনিবার আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎতে আসেন। সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় কোনো মসজিদ নির্মাণের অভিপ্রায় তারা ব্যক্ত করেননি। তারা শুধু বলেছেন, পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত কোনো জায়গায় একটি মসজিদ দরকার। আমি মনে করি ইকোপার্ক অংশে মুসলিম পর্যটকদের সুবিধার জন্য ইবাদতখানা নির্মাণের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করে একটা উদ্যোগ নেয়া যায়। কিন্তু বাস্তবে একটি মহল ঘটনার বিপরীতে গিয়ে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে সনাতনী সমাজকে উস্কানি দিচ্ছে। ভুল তথ্য প্রচার করে উত্তেজনা না ছড়ানোর জন্য সবার কাছে অনুরোধ করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার রাতে এম এম সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি তার ফেসবুক আইডিতে হেফাজতে ইসলামের নেতা হারুণ ইজহারের সঙ্গে সাক্ষাৎতের একটি ছবি দিয়ে লেখেন ‘সীতাকুণ্ডে পর্বতের চূড়ায় মসজিদ ৯০ শতাংশ কনফার্ম। আলহামদুলিল্লাহ।
দীর্ঘ পোস্টে তিনি লেখেন, সম্প্রতি চন্দ্রনাথ পাহাড়ে তিনি ঘুরতে যান কিন্তু নামাজ পড়ার কোনো মসজিদ পাননি। তাই দর্শনার্থীদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে পাহাড়ের কাছাকাছি একটি মসজিদ নির্মাণের দাবী জানান তিনি। স্বাভাবিক এই পোস্টটি মূহুর্তের মধ্যে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে বলে গুজব ছড়াতে থাকে একটি কুচক্রী মহল। রবিবার সকাল হতে না হতেই গুজবটি ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
এদিকে খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রবিবার চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ফখরুল ইসলাম ও সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফখরুল ইসলাম জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করেছি। সেখানে মসজিদ নির্মাণের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল কে আশ্বস্ত করা হয়েছে চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় মসজিদ নির্মাণের কোন অনুমতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। স্যোশাল মিডিয়ায় গুজব, প্রোপাগাণ্ডা ছড়িয়ে সীতাকুণ্ডে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সোহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার যে কোন অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান জানান, কারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব পোস্ট দিচ্ছেন আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক আছে। সেখানে পুলিশের একটি দল নিয়মিত টহলে থাকে।