চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বনভূমি দখলের মূলহোতা ইউনিটেক্স গ্রুপের পরিচালক (লিগ্যাল এণ্ড এস্টেট) ফারহান আহমেদসহ (৫৫) তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। (১৬ জুলাই) রাতে নগরীর চকবাজারস্থ ইপিক আবাসিক এলাকা ও সীতাকুণ্ড থেকে র্যাব ও পুলিশের পৃথক অভিযানে তাদেরকে গ্রেপ্তার হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ইউনিটেক্স গ্রুপের পরিচালক ফারহান আহমেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। অন্যদিকে গোলাম মাওলা ও মোঃ নয়ন নামে আরও দুইজনকে আমরা গ্রেপ্তার করি। তাদের ৩ জনকেই আজ সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত ফারহান আহমেদ (৫৫) আনোয়ারা উপজেলার পরইকরা বিং রোড় দারোগা বাড়ির মৃত ইকবাল আহমেদের ছেলে ও বন বিভাগের বনভূমি দখলের মামলার ১ নম্বর আসামী।
অপরদিকে গোলাম মাওলা ইউনিটেক্স গ্রুপের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার ও মোঃ নয়ন বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের দক্ষিণ মাহমুদাবাদ মোঃ খোকনের ছেলে। এর আগে এ মামলার ৩ আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ।
জানা যায়, সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডে দলবল নিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে বনের জায়গা দখল, বনভূমিতে জোরপূর্বক বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা ও মাটি খননের ঘটনায় ইউনিটেক্সের ২ শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ৬ জনকে আসামী করে বন আদালতে মামলা দায়ের করে উপকূলীয় বন বিভাগ। গত ২৫ জুন এ মামলার পিওআর (প্রসিকিউশন অফেন্স রিপোর্ট) দাখিল করে বন বিভাগের কর্মকর্তারা। মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে ১৯২৭ সনের (২০০০ সালে সংশোধিত) বন আইনের ২৬ (১ ক) ধারায় ও ঙ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয় ১ ও ২ নম্বর আসামীর নেতৃত্বে অন্যান্য আসামীরা দলবদ্ধ হয়ে বনভূমিতে অনুপ্রবেশ করে মাটি খনন, বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা ও বন দখলের চেষ্টা করেছে। এ লক্ষ্যে আসামীগণ গত ৬ জুন সকাল দশটায় সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের নড়ালিয়া মৌজার বাঁশবাড়িয়া বিটের উলানিয়া খালের উত্তর পাশের সংরক্ষিত বনে ইউনিটেক্স গ্রুপ ১০-১২ জন লোক দিয়ে বনে অবৈধ প্রবেশ করে স্কেবেটর দিয়ে বনের মাটি খনন শুরু করে। অপসারিত মাটি দ্বারা উঁচু বাঁধ নির্মাণ করে। এতে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়। ফলে নড়ালিয়া মৌজার (জেএল নং-৩৮) আরএস খতিয়ান নং-৬৬২ এবং আরএস দাগ নং-২৬০৩, ২৬০৪, ২৬০৫, ২৬০৬, বিএস খতিয়ান নং-৩৭৪ এবং বিএস দাগ নং-২০০৪, ২০০৬,২০০৭,২০০৮,২০০৯ এর ৩ হাজার ৫’শত ঘনফুট মাটি লুট হয় এবং পরিবেশের ২ লক্ষ টাকা পরিমাণের ক্ষতি হয়।