চট্টগ্রাম 7:14 am, Thursday, 26 June 2025

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবায় সন্তুষ্ট রোগীরা

পাল্টে গেছে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিরচেনা চিত্র। সরকারী হাসপাতালের এমন চিত্র দেখে রীতিমত মুগ্ধ সেবাগ্রহীতারা। চাহিদা সম্পূর্ণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, যাবতীয় পরীক্ষা-নিরিক্ষার সুবিধা, আবাসিক রোগীদের পরিচ্ছন্ন সেবা, বিনামূল্যে ঔষুধ বিতরণ সবমিলিয়ে এক অভাবনীয় সেবার দেখা মিলছে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

জানা যায়, জেলার অন্যতম উপজেলা সীতাকুণ্ড। কৃষি এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা হলেও তুলনামূলক অসচ্ছলরা দিনমজুরের কাজ করেন। অভাব তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। আর রোগে-শোকে তাদের শেষ ভরসা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০১১ সালের তথ্যনুযায়ী এ উপজেলায় প্রায় তিন লাখ ৩৫ হাজার ১৭৮ জন জনগোষ্ঠীর জন্য ১৯৭৬ সালের গোড়ার দিকে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়। পরে ২০১১ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় রূপান্তরিত হয়। সময়ের পরিক্রমায় হাসপাতালটি ধারাবাহিকভাবে আধুনিকায়নে পরিণত হয়। এতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা সেবার মান ও পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, জরুরী বিভাগ ও আউটডোরে রোগীদের সারিবদ্ধভাবে টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহণ করতে দেখা যায়। উন্নত ও মানসম্মত চিকিৎসা সেবায় অনেক ধাপ এগিয়ে থাকায় এতে সেবা নিতে প্রতিনিয়ত এই হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে রোগীদের ভীড় চোখে পড়ার মতো, আর কর্মরত ডাক্তাররাও নিরলসভাবে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতালে সেবার মান বৃদ্ধি পাওয়াতে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক চিকিৎসা সেবা থেকে মুখ ফিরিয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভীড় জমাচ্ছে রোগীরা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রতিদিন প্রায় ৭০০ জন এবং জরুরী বিভাগে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। এছাড়াও সিজারিয়ান অপারেশন স্তর চালু হওয়ার পর থেকে অপারেশন যোগ্য প্রসূতি রোগীদের সিজার অপারেশন করা হচ্ছে। প্রতিমাসে নরমাল ডেলিভারী করা হয় প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন গর্ভবতী মায়ের। জরুরী প্রয়োজনের দিকবিবেচনায় ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালে ডেলিভারীর ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। বর্হিবিভাগে নিয়মিত চিকিৎসা সহ এনসিডি কর্ণারে বিনামূল্যে দীর্ঘমেয়াদী রোগের চিকিৎসা, আই এম সি আই কর্ণারে শিশু রোগীদের চিকিৎসা করা হয়, এএনসি কর্ণারে প্রসূতি মায়ের চিকিৎসা প্রদান করা হয়, কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে চোখের যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করা হয়, ও আর টি কর্ণারের মাধ্যমে ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসা করা হয়, ভি আই এ সেন্টারের মাধ্যমে মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সার শনাক্ত করণ, বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ঔষুধ সামগ্রী প্রদান, এক্সরে, ই.সি.জি, আল্ট্রাসোনোগ্রাফিসহ নানা পরীক্ষা-নিরিক্ষা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও দাতা গোষ্ঠীদের সার্বিক সহযোগীতায় রোগীদের জন্যে পরিচ্ছন্ন ও মানসম্মত খাবার ব্যবস্থা, খাদ্য পানীয় সুবিধার্থে ফিল্টার স্থাপন, হাসপাতাল এলাকার পরিচ্ছন্নতা ও হাসপাতালের সার্বিক দিকবিবেচনা করলে খুব সহজেই প্রতিয়মান।

তাছাড়া ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে ৩০ জন চিকিৎসক ও ৩৫ জন দক্ষ নার্স (সেবিকা) মিডওয়াইফসহ জরুরী ও বহির্বিভাগে রোগীদের নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বগাচতর গ্রামের রেজাউল করিম বলেন, বাচ্চার জ্বর-কাশি তাই ডাক্তার দেখাইতে আসছিলাম। ডাক্তার দেখাইছি। বিনামূল্যে ঔষুধও দিয়েছে। এখানে চিকিৎসা সেবায় আমাদের কোনো সমস্যা নাই। ভালো মতোই দেখা শোনা করে।

একই ইউনিয়নের মর্ধিপাড়া এলাকার অন্তঃস্বত্তা নাসিমা আক্তার জানান, আমি মাতৃত্ব জনিত কারণে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. খাদিজা বেগমের কাছে এসেছিলাম। তিনি দেখে পরামর্শ দিয়ে দিলেন। এখানে চিকিৎসাসেবায় আমাদের কোনো সমস্যা নেই। বেশ ভালোই।

মুরাদপুর ইউনিয়নের ভাটেরখীল এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ঠান্ডা জ্বর নিয়ে এসেছি। ডাক্তার দেখে ঔষুধ দিয়েছে। আমরা এখানে ঠিকঠাক মতো সেবা পাচ্ছি। চিকিৎসাসেবায় কোনো সমস্যা নেই।

বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের পশ্চিম লালানগর গ্রামের ষাট উর্ধ্ব বয়স্ক রহিম উল্ল্যাহ জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাস কাশি ভুগছি। তাই মাঝে মাঝেই হাসপাতালে আসতে হয়। তবে এখানে চিকিৎসাসেবায় আমাদের কোনো সমস্যা হয় না।

দোতলায় পুরুষ ওয়ার্ডের ১২ নং বেডে ভর্তি উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আবুল কাশেম জানান, পেটে ব্যাথা নিয়ে আমি দুই দিন যাবৎ ভর্তি আছি। এখানে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। চিকিৎসাসেবার মান অত্যন্ত ভালো। সবাই আন্তরিক।

একই ওয়ার্ডের ১৮নং বেডে ভর্তি কুমিরা ইউনিয়নের কোটপাড়া গ্রামের ৪৫ বছর বয়স্ক কামাল উদ্দিন জানান, আমি বুমি ও ব্যাথা নিয়ে আজকে ভর্তি আছি। এখন কিছুটা কম। তবে এখানে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সবমিলিয়ে সেবার মান ভালো।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, কিভাবে আরো সহজে প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়েও প্রতিনিয়ত সভা-সমাবেশের মাধ্যমে দিক-নির্দেশনা দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সৃজনশীল ভাবনা, শৃঙ্খলা ও যুগান্তকারী উদ্যোগের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলতাপ হোসেন এর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলতাপ হোসেন বলেন, প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন ধরনের রোগীকে আমরা যত্নসহকারে চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ সরকারের বরাদ্দকৃত বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করছি। রোগীদের উন্নত সেবা দানের জন্য চিকিৎসক-নার্স সকলেই নিরলসভাবে কাজ করছে। এখানে পরিচ্ছন্নতা কর্মী, আয়া, ওয়ার্ড বয়, ও নাইটগার্ডের সংকট। হাসপাতাল ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় নতুনভাবে ভবন করা দরকার। সারাবছর যে পরিমাণ ঔষুধ প্রয়োজন সে পরিমাণ ঔষুধ হয় না সরকারী অপ্রতুল্য বরাদ্দের কারণে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সবসময়ই ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশী রোগী ভর্তি থাকে। এতে আমাদের সেবা দিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও বাকিদের হিমশিম খেতে হয়। স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা রোগীর দিকবিবেচনায় ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা জরুরী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সীতাকুণ্ডে অভিযান চালিয়ে ১১৩ একর সরকারী জায়গা উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবায় সন্তুষ্ট রোগীরা

Update Time : 11:28:50 pm, Thursday, 24 April 2025

পাল্টে গেছে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিরচেনা চিত্র। সরকারী হাসপাতালের এমন চিত্র দেখে রীতিমত মুগ্ধ সেবাগ্রহীতারা। চাহিদা সম্পূর্ণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, যাবতীয় পরীক্ষা-নিরিক্ষার সুবিধা, আবাসিক রোগীদের পরিচ্ছন্ন সেবা, বিনামূল্যে ঔষুধ বিতরণ সবমিলিয়ে এক অভাবনীয় সেবার দেখা মিলছে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

জানা যায়, জেলার অন্যতম উপজেলা সীতাকুণ্ড। কৃষি এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা হলেও তুলনামূলক অসচ্ছলরা দিনমজুরের কাজ করেন। অভাব তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। আর রোগে-শোকে তাদের শেষ ভরসা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০১১ সালের তথ্যনুযায়ী এ উপজেলায় প্রায় তিন লাখ ৩৫ হাজার ১৭৮ জন জনগোষ্ঠীর জন্য ১৯৭৬ সালের গোড়ার দিকে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়। পরে ২০১১ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় রূপান্তরিত হয়। সময়ের পরিক্রমায় হাসপাতালটি ধারাবাহিকভাবে আধুনিকায়নে পরিণত হয়। এতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা সেবার মান ও পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, জরুরী বিভাগ ও আউটডোরে রোগীদের সারিবদ্ধভাবে টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহণ করতে দেখা যায়। উন্নত ও মানসম্মত চিকিৎসা সেবায় অনেক ধাপ এগিয়ে থাকায় এতে সেবা নিতে প্রতিনিয়ত এই হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে রোগীদের ভীড় চোখে পড়ার মতো, আর কর্মরত ডাক্তাররাও নিরলসভাবে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতালে সেবার মান বৃদ্ধি পাওয়াতে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক চিকিৎসা সেবা থেকে মুখ ফিরিয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভীড় জমাচ্ছে রোগীরা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রতিদিন প্রায় ৭০০ জন এবং জরুরী বিভাগে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন রোগী সেবা নিয়ে থাকেন। এছাড়াও সিজারিয়ান অপারেশন স্তর চালু হওয়ার পর থেকে অপারেশন যোগ্য প্রসূতি রোগীদের সিজার অপারেশন করা হচ্ছে। প্রতিমাসে নরমাল ডেলিভারী করা হয় প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন গর্ভবতী মায়ের। জরুরী প্রয়োজনের দিকবিবেচনায় ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালে ডেলিভারীর ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। বর্হিবিভাগে নিয়মিত চিকিৎসা সহ এনসিডি কর্ণারে বিনামূল্যে দীর্ঘমেয়াদী রোগের চিকিৎসা, আই এম সি আই কর্ণারে শিশু রোগীদের চিকিৎসা করা হয়, এএনসি কর্ণারে প্রসূতি মায়ের চিকিৎসা প্রদান করা হয়, কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে চোখের যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করা হয়, ও আর টি কর্ণারের মাধ্যমে ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসা করা হয়, ভি আই এ সেন্টারের মাধ্যমে মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সার শনাক্ত করণ, বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ঔষুধ সামগ্রী প্রদান, এক্সরে, ই.সি.জি, আল্ট্রাসোনোগ্রাফিসহ নানা পরীক্ষা-নিরিক্ষা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও দাতা গোষ্ঠীদের সার্বিক সহযোগীতায় রোগীদের জন্যে পরিচ্ছন্ন ও মানসম্মত খাবার ব্যবস্থা, খাদ্য পানীয় সুবিধার্থে ফিল্টার স্থাপন, হাসপাতাল এলাকার পরিচ্ছন্নতা ও হাসপাতালের সার্বিক দিকবিবেচনা করলে খুব সহজেই প্রতিয়মান।

তাছাড়া ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে ৩০ জন চিকিৎসক ও ৩৫ জন দক্ষ নার্স (সেবিকা) মিডওয়াইফসহ জরুরী ও বহির্বিভাগে রোগীদের নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বগাচতর গ্রামের রেজাউল করিম বলেন, বাচ্চার জ্বর-কাশি তাই ডাক্তার দেখাইতে আসছিলাম। ডাক্তার দেখাইছি। বিনামূল্যে ঔষুধও দিয়েছে। এখানে চিকিৎসা সেবায় আমাদের কোনো সমস্যা নাই। ভালো মতোই দেখা শোনা করে।

একই ইউনিয়নের মর্ধিপাড়া এলাকার অন্তঃস্বত্তা নাসিমা আক্তার জানান, আমি মাতৃত্ব জনিত কারণে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. খাদিজা বেগমের কাছে এসেছিলাম। তিনি দেখে পরামর্শ দিয়ে দিলেন। এখানে চিকিৎসাসেবায় আমাদের কোনো সমস্যা নেই। বেশ ভালোই।

মুরাদপুর ইউনিয়নের ভাটেরখীল এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ঠান্ডা জ্বর নিয়ে এসেছি। ডাক্তার দেখে ঔষুধ দিয়েছে। আমরা এখানে ঠিকঠাক মতো সেবা পাচ্ছি। চিকিৎসাসেবায় কোনো সমস্যা নেই।

বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের পশ্চিম লালানগর গ্রামের ষাট উর্ধ্ব বয়স্ক রহিম উল্ল্যাহ জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাস কাশি ভুগছি। তাই মাঝে মাঝেই হাসপাতালে আসতে হয়। তবে এখানে চিকিৎসাসেবায় আমাদের কোনো সমস্যা হয় না।

দোতলায় পুরুষ ওয়ার্ডের ১২ নং বেডে ভর্তি উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আবুল কাশেম জানান, পেটে ব্যাথা নিয়ে আমি দুই দিন যাবৎ ভর্তি আছি। এখানে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। চিকিৎসাসেবার মান অত্যন্ত ভালো। সবাই আন্তরিক।

একই ওয়ার্ডের ১৮নং বেডে ভর্তি কুমিরা ইউনিয়নের কোটপাড়া গ্রামের ৪৫ বছর বয়স্ক কামাল উদ্দিন জানান, আমি বুমি ও ব্যাথা নিয়ে আজকে ভর্তি আছি। এখন কিছুটা কম। তবে এখানে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সবমিলিয়ে সেবার মান ভালো।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, কিভাবে আরো সহজে প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়েও প্রতিনিয়ত সভা-সমাবেশের মাধ্যমে দিক-নির্দেশনা দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সৃজনশীল ভাবনা, শৃঙ্খলা ও যুগান্তকারী উদ্যোগের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলতাপ হোসেন এর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলতাপ হোসেন বলেন, প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন ধরনের রোগীকে আমরা যত্নসহকারে চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ সরকারের বরাদ্দকৃত বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করছি। রোগীদের উন্নত সেবা দানের জন্য চিকিৎসক-নার্স সকলেই নিরলসভাবে কাজ করছে। এখানে পরিচ্ছন্নতা কর্মী, আয়া, ওয়ার্ড বয়, ও নাইটগার্ডের সংকট। হাসপাতাল ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় নতুনভাবে ভবন করা দরকার। সারাবছর যে পরিমাণ ঔষুধ প্রয়োজন সে পরিমাণ ঔষুধ হয় না সরকারী অপ্রতুল্য বরাদ্দের কারণে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সবসময়ই ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশী রোগী ভর্তি থাকে। এতে আমাদের সেবা দিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও বাকিদের হিমশিম খেতে হয়। স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা রোগীর দিকবিবেচনায় ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা জরুরী।