সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
দীর্ঘ চার বছর পর সীতাকুণ্ড পৌরসদর ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির একাদশ নির্বাচন–২০২৫ সম্পন্ন হয়েছে। এ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী প্যানেলের সাথে জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের ব্যাপক আড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে বিএনপি সমর্থিত প্যানেল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন। সভাপতি পদে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী প্যানেলের মোঃ নাছির উদ্দিন ভূঁইয়া নির্বাচিত হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন একই প্যানেলের মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রফিক। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও ১১টি পদে জয় পেয়েছে এ প্যানেল। অপরদিকে সিনিয়র সহ-সভাপতি সহ ৩টি পদে জয় পেয়েছে জামায়াত সমর্থিত প্যানেল।
গতকাল শনিবার ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে সীতাকুণ্ড সরকারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচটি বুথে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
সমিতির একাদশ নির্বাচনে ১৭ পদে ৩৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এর মধ্যে ১টি পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ১ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ১৩৭৬ জন ভোটারের মধ্যে ১২৭৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ১৬ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করেন।
নির্বাচনে (চেয়ার) প্রতীক নিয়ে ৬৬০ ভোট পেয়ে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন মোঃ নাছির উদ্দীন ভূঁইয়া। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোহাম্মদ জিয়াউল হোসাইন (ছাতা) প্রতীক নিয়ে ৬০১ ভোট পান। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে জামায়াত সমর্থিত মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন (কলসি) প্রতীক নিয়ে ৭৪৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সুনন্দা ভট্টাচার্য সাগর (মোবাইল) প্রতীক নিয়ে ৫০২ ভোট পান। সহ-সভাপতি পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নুর মোহাম্মদ (গরুর গাড়ী) প্রতীক নিয়ে ৬৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ নিজাম উদ্দিন (গোলাপ ফুল) প্রতীক নিয়ে ৫৪৬ ভোট পান।
সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রফিক (হারিকেন) প্রতীক নিয়ে ৭৬৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ কামাল উদ্দিন (আনারস) প্রতীক নিয়ে ৪৯৬ ভোট পান। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে স্বতন্ত প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (হাত পাখা) প্রতীক নিয়ে ৪৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ আব্দুল মোতালেব (টেবিল ফ্যান) প্রতীক নিয়ে ৪৬৭ ভোট পান। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (তালা চাবি) প্রতীক নিয়ে ৬৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ পেয়ার আহাম্মদ পেয়ারু (দেয়াল ঘড়ি) প্রতীক নিয়ে ৫৯৯ ভোট পান। অর্থ সম্পাদক পদে জামায়াত সমর্থিত মোঃ হেলাল উদ্দিন (টেবিল) প্রতীক নিয়ে ৮৩৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ আকাইদুল ইসলাম ডালিম (কম্পিউটার) প্রতীক নিয়ে ৪১৪ ভোট পান।
প্রচার সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোঃ আনোয়ার হোসেন (চাকা) প্রতীক নিয়ে ৮৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ নিজাম উদ্দিন (মাছ) প্রতীক নিয়ে ৩৫৫ ভোট পান। তাছাড়া দপ্তর সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শ্রীধাম চন্দ্র দে মাষ্টার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় এই পদে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হন। সহ-দফতর সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোঃ নুর উদ্দিন (মোরগ) প্রতীক নিয়ে ৭১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ নাঈম জাহাঙ্গীর (রিকশা) প্রতীক নিয়ে ৫৩৭ ভোট পান। সমাজ কল্যাণ পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোঃ আবু তাহের (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে ৬৬৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ হাসান (বই) প্রতীক নিয়ে ৫৭৮ ভোট পান। ক্রীড়া সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোহন পাল (ক্রিকেট ব্যাট) প্রতীক নিয়ে ৭৯৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ রেজাউল করিম হেলাল (ফুটবল) প্রতীক নিয়ে ৪৬৪ ভোট পান।
সদস্য ১নং ওয়ার্ড পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোঃ মহিদুল আলম আবির (ডাব) প্রতীক নিয়ে ১৬৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ হারুনুর রশিদ (মাইক) প্রতীক নিয়ে ৬৪ ভোট পান। সদস্য ২নং ওয়ার্ড পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (একতারা) প্রতীক নিয়ে ১৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ সালাউদ্দিন (কলম) প্রতীক নিয়ে ১২২ ভোট পান। সদস্য ৩নং ওয়ার্ড পদে মোঃ বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নাদিম উদ্দিন বাবলু (আপেল) প্রতীক নিয়ে ১১৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ তাজুল ইসলাম সেলিম (ঘুড়ি) প্রতীক নিয়ে ১০১ ভোট পান। সদস্য ৪নং ওয়ার্ড পদে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মোঃ জসীম উদ্দিন (টলিব্যাগ) প্রতীক নিয়ে ১৬৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ সাইফুল ইসলাম (ময়না পাখি) প্রতীক নিয়ে ৫৫ ভোট পান। সদস্য ৫নং ওয়ার্ড পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোঃ আজম খান (দোয়েল পাখি) প্রতীক নিয়ে ১৩৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ আনোয়ার হোসেন সুমন (কেটলি) প্রতীক নিয়ে ১১৫ ভোট পান।
নির্বাচন পরিচালনা পরিষদের দায়িত্ব পালন করেন-সীতাকুণ্ড পৌরসদর ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির আহবায়ক গাজী সুজা উদ্দীন ও সদস্য সচিব মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী। এছাড়া প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সীতাকুণ্ড সরকারী মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অবঃ) মোঃ দিদারুল আলম।
নির্বাচন সফল ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে সকলের সর্বাত্মক সহযোগীতা ও উপস্থিতির জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা পরিষদের দায়িত্বে থাকা সীতাকুণ্ড পৌরসদর ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির আহবায়ক গাজী সুজা উদ্দীন।
