বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী সনাতনী পূজামন্ডপ পরিদর্শনে রাঙ্গুনিয়া এসেছেন। শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে শুরুতে তিনি রাঙ্গুনিয়ার কাদের নগরে তাঁর পৈত্রিক (সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী) বাসভবনে যান। সেখানে নবীন-প্রবীণ হাজারো নেতাকর্মীর ঢল নামে।
এসময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “১৬ বছর পর নিজ বাড়ি জমজমাট মনে হচ্ছে। আজকে আমার বাবার পুরানো মানুষ, প্রবীন নেতৃবৃন্দ এবং নতুন নওজোয়ান ভাইয়েরা বের হয়ে আসছে। ১৬ বছর আওয়ামী লীগের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়া যেতো না। দুই বছর আগে বিএনপির একটি বড় প্রোগ্রামে বলেছিলাম, যেদিন আওয়ামী লীগ সরকার পড়ে যাবে, সেদিন আওয়ামী লীগের সদস্যরা বাড়িতে একা হেটে যেতে পারবে না। আজকে সেই আওয়ামী লীগ কোথায় গেল, দুই মাস হয়ে গেল কোন আওয়ামী লীগ খুজে পেলাম না, তাদের প্রিয় স্লোগান “জয় বাংলা” শুনিনা।”
তিনি বলেন, “রাঙ্গুনিয়ার মাটিতে এখন আর আওয়ামী লীগ নাই। আপনারা ১৬ বছর ধরে বিএনপির জন্য এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জন্য যুদ্ধ করেছেন। আপনাদেরকে ওয়াদা করে বলে যেতে চাই, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের উপর যে অন্যায় হয়েছে, আমাদের নেতাদের উপর যে অবিচার হয়েছে, যতদিন এই বিচার আমরা পাবো না, ততদিন আমাদের এই আন্দোলন মাঠেই থাকবে, আমরা বাড়ি ফিরে যাবো না।”
পরে তিনি রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন। উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের শান্তিনিকেতন শ্রীরামকৃষ্ণ সেবাশ্রম পূজা মন্ডপ পরিদর্শনকালে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “প্রথমবারের মতো রাঙ্গুনিয়ার কোন পূজা মন্ডপে আমার আসা। এখানকার অভিজ্ঞতা আমার সারাজীবন মনে থাকবে৷ আপনারা প্রথমবার দাবী দিয়েছেন একটা মন্দির করার জন্য। আমার সুযোগ হলে আমি একটা স্থায়ীভাবে মন্দির যেন করতে পারি, সেই চেষ্টা থাকবে।”
তাঁর বাবা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী’র প্রসঙ্গ উল্লেখ করে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, “আমার বাবার জন্য এতোদিন লড়াই করে এসেছি, যেভাবেই হোক না কেনো, যাতে তার রাজনীতিটাকে আমরা জীবিত রাখতে পারি। আপনাদের সহযোগিতা না পেলে তা কখনো সম্ভব হতো না। আমি যখন অনেক ছোট তখন থেকে আপনারা আমার বাবার সাথে আছেন। আমার বাবার সাথে যতটুকু না সময় আমরা কাটাতে পেরেছি, তার চাইতে বেশি আপনারা পেরেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “সেনাবাহিনীর সাথে কথা বললাম, পূজা মন্ডপে রাঙ্গুনিয়ায় কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা, শুনে খুশি হলাম, রাঙ্গুনিয়ায় কোন শৃঙ্খলা নষ্ট হয়নি। এই জিনিসটা যাতে এখন থেকে প্রতি বছর এরকমভাবেই চলে৷ আপনাদের ভাই হিসেবে ছেলে হিসেবে সব সময় আমাকে দেখবেন, যেকোনো সমস্যা আমাকে বলবেন, আমি যতটুক পারবো আপনাদের পাশে থাকবে। আর কিছু করি আর না করি, এই রাঙ্গুনিয়ার মানুষ যারা আমার বাবার সাথে এতো বছর ধরে ছিলো, তাদের পাশে যেনো আমি দাড়াতে পারি৷ আমার জন্য দোয়া করবেন, আমার মোবাইল সবসময় খোলা থাকে, যখনই তালাশ করবেন, তখনই আপনারা আমাকে পাবেন।”
এদিন তিনি চন্দ্রঘোনার গীতা ভবন মহাজন বটতল, পশ্চিম কদমতলী বনিকপাড়া মন্দির, মধ্যম কদমতলী জয়কালী মন্দির, শান্তিনিকেতন ক্ষেত্রপাল মন্দির, পৌরসভার ইছাখালী নিতাই সেবাশ্রম দাশ পাড়া মন্দির এবং সৈয়দবাড়ি নারায়ণ মন্দিরসহ উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপগুলো পরিদর্শন করেন এবং সনাতনী সম্প্রদায়ের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় এসব মন্ডপে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। মন্ডপ পরিদর্শনকালে বিএনপির জেলা-উপজেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।