চট্টগ্রাম 1:11 am, Saturday, 19 July 2025

হাটহাজারীতে ভূয়া কাবিননামায় স্ত্রী প্রমাণের চেষ্টা; আদালতে ৭ জনের নামে মামলা

হাটহাজারীতে এক তরুণীকে জাল কাবিননামার মাধ্যমে বিবাহিত প্রমাণের অভিযোগে কথিত বর সহ সাতজনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা।

মামলার আসামিরা হলেন, হাটহাজারীর ফতেপুর গ্রামের নূর মিস্ত্রির বাড়ির বাসিন্দা বর রায়হান উদ্দিন (২৪), তার বাবা কফিল উদ্দিন (৪৮), মা মিনুয়ারা বেগম (৪৫), কথিত কাবিননামার কাজী জাহাঙ্গীর আলম হেলালী (৫২), সাইফ হোসেন (৩৫), ছিয়াম আল জোনায়েদ (৩৮) ও মো.আসাদ (৩৩)।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে ভুক্তভোগী তরুণীর বয়স ভুয়া নথিপত্রের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে একটি জাল কাবিননামা এবং হলফনামা তৈরি করেন। ভুক্তভোগী চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী। প্রধান আসামি রায়হান উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীকে উত্যক্ত করে আসছিলেন। অভিযুক্তরা তাকে অপহরণ করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার মাধ্যমে জাল কাবিননামা তৈরি করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ভুক্তভোগীর প্রকৃত জন্ম তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০০৭ পরিবর্তন করে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখানো হয়েছে। ভুক্তভোগীর বয়স মাত্র ১৬ বছর ১ মাস ২৬ দিন হওয়া সত্ত্বেও বিবাহের জাল কাবিননামা তৈরি করা হয়, যা আইনত অবৈধ।

এ ঘটনায় প্রধান আসামি রায়হান উদ্দিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে জালিয়াতি, প্রতারণা, অপহরণ, হুমকি এবং অবৈধ কাগজপত্র তৈরি।

মামলার সঙ্গে অভিযোগকারী বিভিন্ন প্রমাণাদি আদালতে দাখিল করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে জাল কাবিননামার ফটোকপি, ভুক্তভোগীর এসএসসি সনদপত্র, জন্মনিবন্ধন সনদ, ভুক্তভোগীর মেডিকেল রিপোর্ট এবং অভিযুক্তদের পাঠানো ভয়েজ রেকর্ড ও স্ক্রিনশট।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগীর মা বলেন, “প্রথমে অপহরণ করে ধর্ষণ, পরে জাল কাগজপত্র তৈরি করে আমার মেয়েকে অপমানজনক পরিস্থিতিতে ফেলা হয়েছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

বাদী পক্ষের আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান মামলা দায়েরের বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে জানান, ভুক্তভোগীকে অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামির বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় পূর্বে মামলা হয়েছিল। উক্ত মামলায় জামিনে বেরিয়ে এসে জাল কাবিননামা উপস্থাপন করেন প্রধান আসামি কথিত বর। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে রাঙ্গুনিয়ার লালানগর বিএনপির মশাল মিছিল

হাটহাজারীতে ভূয়া কাবিননামায় স্ত্রী প্রমাণের চেষ্টা; আদালতে ৭ জনের নামে মামলা

Update Time : 12:55:16 am, Tuesday, 26 November 2024

হাটহাজারীতে এক তরুণীকে জাল কাবিননামার মাধ্যমে বিবাহিত প্রমাণের অভিযোগে কথিত বর সহ সাতজনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা।

মামলার আসামিরা হলেন, হাটহাজারীর ফতেপুর গ্রামের নূর মিস্ত্রির বাড়ির বাসিন্দা বর রায়হান উদ্দিন (২৪), তার বাবা কফিল উদ্দিন (৪৮), মা মিনুয়ারা বেগম (৪৫), কথিত কাবিননামার কাজী জাহাঙ্গীর আলম হেলালী (৫২), সাইফ হোসেন (৩৫), ছিয়াম আল জোনায়েদ (৩৮) ও মো.আসাদ (৩৩)।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে ভুক্তভোগী তরুণীর বয়স ভুয়া নথিপত্রের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে একটি জাল কাবিননামা এবং হলফনামা তৈরি করেন। ভুক্তভোগী চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী। প্রধান আসামি রায়হান উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীকে উত্যক্ত করে আসছিলেন। অভিযুক্তরা তাকে অপহরণ করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার মাধ্যমে জাল কাবিননামা তৈরি করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ভুক্তভোগীর প্রকৃত জন্ম তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০০৭ পরিবর্তন করে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখানো হয়েছে। ভুক্তভোগীর বয়স মাত্র ১৬ বছর ১ মাস ২৬ দিন হওয়া সত্ত্বেও বিবাহের জাল কাবিননামা তৈরি করা হয়, যা আইনত অবৈধ।

এ ঘটনায় প্রধান আসামি রায়হান উদ্দিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে জালিয়াতি, প্রতারণা, অপহরণ, হুমকি এবং অবৈধ কাগজপত্র তৈরি।

মামলার সঙ্গে অভিযোগকারী বিভিন্ন প্রমাণাদি আদালতে দাখিল করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে জাল কাবিননামার ফটোকপি, ভুক্তভোগীর এসএসসি সনদপত্র, জন্মনিবন্ধন সনদ, ভুক্তভোগীর মেডিকেল রিপোর্ট এবং অভিযুক্তদের পাঠানো ভয়েজ রেকর্ড ও স্ক্রিনশট।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগীর মা বলেন, “প্রথমে অপহরণ করে ধর্ষণ, পরে জাল কাগজপত্র তৈরি করে আমার মেয়েকে অপমানজনক পরিস্থিতিতে ফেলা হয়েছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

বাদী পক্ষের আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান মামলা দায়েরের বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে জানান, ভুক্তভোগীকে অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামির বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় পূর্বে মামলা হয়েছিল। উক্ত মামলায় জামিনে বেরিয়ে এসে জাল কাবিননামা উপস্থাপন করেন প্রধান আসামি কথিত বর। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।