চট্টগ্রাম 11:13 am, Tuesday, 8 July 2025

আইনজীবী আলিফ খুনের মামলা : দুই আসামিকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ

চট্টগ্রাম আদালত পাড়ার অদূরে আলোচিত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে খুনের মামলায় প্রধান আসামিসহ দুইজন আসামী চন্দন দাশ ও রাজিব ভট্টাচায্যকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। গতকাল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা এ আদেশ দেন। এর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে দুই আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করা হয়। এরমধ্যে চন্দন দাশ মামলার প্রধান ও ১ নম্বর আসামি। আর রাজিব ভট্টাচার্য্য ৩১ নম্বর আসামি।

সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আদালতসূত্র জানায়, দুই আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ চেয়ে করা আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামি চন্দন দাশ ও রাজীব ভট্টাচার্য্য গ্রেপ্তার পরবর্তী গত বছরের ৯ ডিসেম্বর আলিফ খুনে জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। আসামি চন্দন দাশ তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শিবা নামে একজন আসামির নাম প্রকাশ করে এবং আসামি রাজীব অট্টচার্য্য তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওমবাই নামে একজন আসামির নাম প্রকাশ করে। মামলার তদন্তের স্বার্থে জবানবন্দিতে প্রাপ্ত শিবা ও ওমবাই এদের পূর্ণ নাম ঠিকানা সংগ্রহ করার জন্য রাজীব ভট্টচার্য্য ও চন্দন দাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ আগস্ট ঢাকা থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তথা ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষের আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে সেদিন একটি আবেদন করেন। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম জামিন নামন্জুর করে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পুলিশ যখন চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাবে তখন আগে থেকে জড়ো হওয়া তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানের গতিরোধ করেন এবং প্রিজন ভ্যানের সামনে পিছে শুয়ে পড়েন। একপর্যায়ে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা পর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানকে কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত পাড়ায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর করে। শুরু হয় সংঘাত। এক পর্যায়ে আদালতের প্রবেশ গেটের অদূরে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। এ ঘটনায় মোট সাতটি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে কোতোয়ালী থানায় ৬টি ও আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়।

পুলিশ জানায়, কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ৭৯ জনের নামে তিনটি, আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নামে একটি (হত্যা মামলা) ও তার ভাই বাদী হয়ে ১১৬ জনের নামে একটি ও মোহাম্মদ উল্লাহ নামের এক ব্যবসায়ী ২৯ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া সর্বশেষ মো. এনামুল হক নামের একজন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত সেটি কোতোয়ালী থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সন্দ্বীপের উড়ির চরে ‘ভাষা শহীদ সালাম’ আশ্রয়ণ প্রকল্প হস্তান্তর

আইনজীবী আলিফ খুনের মামলা : দুই আসামিকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

Update Time : 12:52:20 pm, Tuesday, 18 March 2025

চট্টগ্রাম আদালত পাড়ার অদূরে আলোচিত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে খুনের মামলায় প্রধান আসামিসহ দুইজন আসামী চন্দন দাশ ও রাজিব ভট্টাচায্যকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। গতকাল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা এ আদেশ দেন। এর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে দুই আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করা হয়। এরমধ্যে চন্দন দাশ মামলার প্রধান ও ১ নম্বর আসামি। আর রাজিব ভট্টাচার্য্য ৩১ নম্বর আসামি।

সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আদালতসূত্র জানায়, দুই আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ চেয়ে করা আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামি চন্দন দাশ ও রাজীব ভট্টাচার্য্য গ্রেপ্তার পরবর্তী গত বছরের ৯ ডিসেম্বর আলিফ খুনে জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। আসামি চন্দন দাশ তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শিবা নামে একজন আসামির নাম প্রকাশ করে এবং আসামি রাজীব অট্টচার্য্য তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওমবাই নামে একজন আসামির নাম প্রকাশ করে। মামলার তদন্তের স্বার্থে জবানবন্দিতে প্রাপ্ত শিবা ও ওমবাই এদের পূর্ণ নাম ঠিকানা সংগ্রহ করার জন্য রাজীব ভট্টচার্য্য ও চন্দন দাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ আগস্ট ঢাকা থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তথা ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষের আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে সেদিন একটি আবেদন করেন। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম জামিন নামন্জুর করে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পুলিশ যখন চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাবে তখন আগে থেকে জড়ো হওয়া তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানের গতিরোধ করেন এবং প্রিজন ভ্যানের সামনে পিছে শুয়ে পড়েন। একপর্যায়ে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা পর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানকে কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত পাড়ায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর করে। শুরু হয় সংঘাত। এক পর্যায়ে আদালতের প্রবেশ গেটের অদূরে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। এ ঘটনায় মোট সাতটি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে কোতোয়ালী থানায় ৬টি ও আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়।

পুলিশ জানায়, কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ৭৯ জনের নামে তিনটি, আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নামে একটি (হত্যা মামলা) ও তার ভাই বাদী হয়ে ১১৬ জনের নামে একটি ও মোহাম্মদ উল্লাহ নামের এক ব্যবসায়ী ২৯ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া সর্বশেষ মো. এনামুল হক নামের একজন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত সেটি কোতোয়ালী থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।