চট্টগ্রাম 4:39 pm, Saturday, 12 July 2025

বউত ভালা লার বেগ্গুনেরে দেখি ‘- হাটহাজারীর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা

 

আসসালামু আলাইকুম। বউত ভালা লার বেগ্গুনেরে দেখি। বউত দিন বাদে এন্ডে আইলম। ছোড বেলাত এডেই আছিলম। ছোড বেলার বেক ছবি মাথার ভেতর রই গেইয়িগুই, এডে বটগাছ তলে হাট বইচতো,হাডত আইচতেম। ছোড বেলাল একজনরে একজনে ঠাট্টা গরি কইতেম আবদুর রশিদ টেন্ডলর ঠাট নজুমিয়েহাট, দুল মিয়ের জালাবারি ফোরক মিয়ার মটরগাড়ি।”

অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড,মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার (১৪ মে) উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে গিয়ে মঞ্চে উঠে উপস্থিত সকলকে সালাম দিয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি গ্রামের বাড়ি পৌঁছে প্রথমে বিকাল পাঁচটার দিকে পারিবারিক কবরস্থান শায়িত মরহুম দাদা দাদী ও স্বজনদের কবর জিয়ারত করেন।

পরে কবরস্থান সংলগ্ন মঞ্চে উঠে চার মিনিট কাল চট্টগ্রামের ভাষায় সবাই সালাম দিয়ে সকলে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করে। এরপর ছোট কালের স্মৃতি চারন করেন। এই সময় তিনি বলেন ৩য় শ্রেনী পর্যন্ত মাজইন্যা স্কুল লেখা পড়া করেন। এরপর তাঁর বাবা হাজী দুলা মিয়া সওদাগর তাঁকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে গিয়ে সেখানে স্কুলে ভর্তি করে দেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে চট্টগ্রামের ভাষায় বলেন নজু মিয়ারহাট শর হই গিয়ে, শর বিলাত হই গিয়ে। ভবিষ্যতে দেশের আরো উন্নতি হবে বলে মন্তব্য করেন । চার মিনিট কালের বক্তব্যে তিনি এসময় তাঁর ছোট বেলার স্মৃতি চারন করেন। প্রধান উপদেষ্টা গ্রামের বাড়িতে আগমনকে কেন্দ্র করে সেখানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্হা গ্রহন করেছেন প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাড়ির চতুর্দিকে নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা ছিল।

এলাকার সন্তান নিজ বাড়িতে আগমনের খবর পেয়ে স্হানীয়দের মধ্যে খুশির আমেজ ছিল চোখ পড়ার মত। স্থানীয়দের প্রত্যাশা ছিল গ্রামের সকলে তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা জনিত কারনে সকলের সেখানে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। নিদিষ্ট কিছু সংখ্যাক লোকজনের নিরাপত্তা কার্ড প্রদান করা হলেও পরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক লোকজন গ্রামের সন্তানকে এক নজর দেখতে অনুষ্ঠান মঞ্চের আশে পাশে ভিড় জমাতে দেখা গেছে। প্রধান উপদেষ্টার সাথে সফর সঙ্গী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে থেকে বাথুয়া গ্রামের তাঁর পৈত্রিক বাড়ি, হাজী এম নজুমিয়া সওদাগরের বাড়িতে সংস্কার ধোঁয়া মোছা, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও রংচুন করার কাজ শুরু হয়। বুধবার সকাল পর্যন্ত চলে কাজ। প্রফেসর ড,মুহাম্মদ ইউনূস শান্তির জন্য নোবেল পাওয়ার পর পর একবার গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন।

সেই সময় এলাকাবাসী তাঁকে সংবর্ধনা প্রদান করেছিলেন। পরে ২০১৭ সালের দিকে তিনি শেষ বারের মতো গ্রামের বাড়ি ঘুরে যান। অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত হওয়ার পর দীর্ঘ সময় পর (৮ বছর) এই প্রথম তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে পাঁচ টায় বাড়িতে উপস্থিত হয়ে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত তিনি বাড়িতে ছিল। নিরাপত্তার জন্য বেলা চারটার পূর্ব থেকে কাপ্তাই মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানান। প্রায় আধ ঘন্টা গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করার পর তিনি চট্টগ্রাম আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখান থেকে সন্ধ্যার দিকে বিমান যোগে তিনি ঢাকা ফিরে যান। গ্রামের বাড়ি যাওয়ার আগে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১নং গেইটস্থ গ্রামীণ ব্যাংক পরিদর্শন করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙ্গুনিয়ায় এম শাহ আলম চৌধুরী ডিগ্রি কলেজে মতবিনিময় সভা ও সম্মাননা

বউত ভালা লার বেগ্গুনেরে দেখি ‘- হাটহাজারীর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা

Update Time : 12:33:42 pm, Saturday, 17 May 2025

 

আসসালামু আলাইকুম। বউত ভালা লার বেগ্গুনেরে দেখি। বউত দিন বাদে এন্ডে আইলম। ছোড বেলাত এডেই আছিলম। ছোড বেলার বেক ছবি মাথার ভেতর রই গেইয়িগুই, এডে বটগাছ তলে হাট বইচতো,হাডত আইচতেম। ছোড বেলাল একজনরে একজনে ঠাট্টা গরি কইতেম আবদুর রশিদ টেন্ডলর ঠাট নজুমিয়েহাট, দুল মিয়ের জালাবারি ফোরক মিয়ার মটরগাড়ি।”

অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড,মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার (১৪ মে) উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে গিয়ে মঞ্চে উঠে উপস্থিত সকলকে সালাম দিয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি গ্রামের বাড়ি পৌঁছে প্রথমে বিকাল পাঁচটার দিকে পারিবারিক কবরস্থান শায়িত মরহুম দাদা দাদী ও স্বজনদের কবর জিয়ারত করেন।

পরে কবরস্থান সংলগ্ন মঞ্চে উঠে চার মিনিট কাল চট্টগ্রামের ভাষায় সবাই সালাম দিয়ে সকলে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করে। এরপর ছোট কালের স্মৃতি চারন করেন। এই সময় তিনি বলেন ৩য় শ্রেনী পর্যন্ত মাজইন্যা স্কুল লেখা পড়া করেন। এরপর তাঁর বাবা হাজী দুলা মিয়া সওদাগর তাঁকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে গিয়ে সেখানে স্কুলে ভর্তি করে দেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে চট্টগ্রামের ভাষায় বলেন নজু মিয়ারহাট শর হই গিয়ে, শর বিলাত হই গিয়ে। ভবিষ্যতে দেশের আরো উন্নতি হবে বলে মন্তব্য করেন । চার মিনিট কালের বক্তব্যে তিনি এসময় তাঁর ছোট বেলার স্মৃতি চারন করেন। প্রধান উপদেষ্টা গ্রামের বাড়িতে আগমনকে কেন্দ্র করে সেখানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্হা গ্রহন করেছেন প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাড়ির চতুর্দিকে নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা ছিল।

এলাকার সন্তান নিজ বাড়িতে আগমনের খবর পেয়ে স্হানীয়দের মধ্যে খুশির আমেজ ছিল চোখ পড়ার মত। স্থানীয়দের প্রত্যাশা ছিল গ্রামের সকলে তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা জনিত কারনে সকলের সেখানে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। নিদিষ্ট কিছু সংখ্যাক লোকজনের নিরাপত্তা কার্ড প্রদান করা হলেও পরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক লোকজন গ্রামের সন্তানকে এক নজর দেখতে অনুষ্ঠান মঞ্চের আশে পাশে ভিড় জমাতে দেখা গেছে। প্রধান উপদেষ্টার সাথে সফর সঙ্গী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে থেকে বাথুয়া গ্রামের তাঁর পৈত্রিক বাড়ি, হাজী এম নজুমিয়া সওদাগরের বাড়িতে সংস্কার ধোঁয়া মোছা, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও রংচুন করার কাজ শুরু হয়। বুধবার সকাল পর্যন্ত চলে কাজ। প্রফেসর ড,মুহাম্মদ ইউনূস শান্তির জন্য নোবেল পাওয়ার পর পর একবার গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন।

সেই সময় এলাকাবাসী তাঁকে সংবর্ধনা প্রদান করেছিলেন। পরে ২০১৭ সালের দিকে তিনি শেষ বারের মতো গ্রামের বাড়ি ঘুরে যান। অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত হওয়ার পর দীর্ঘ সময় পর (৮ বছর) এই প্রথম তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে পাঁচ টায় বাড়িতে উপস্থিত হয়ে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত তিনি বাড়িতে ছিল। নিরাপত্তার জন্য বেলা চারটার পূর্ব থেকে কাপ্তাই মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানান। প্রায় আধ ঘন্টা গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করার পর তিনি চট্টগ্রাম আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখান থেকে সন্ধ্যার দিকে বিমান যোগে তিনি ঢাকা ফিরে যান। গ্রামের বাড়ি যাওয়ার আগে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১নং গেইটস্থ গ্রামীণ ব্যাংক পরিদর্শন করেন।