“দক্ষ যুব গড়বে দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী বায়োগ্যাস প্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা। পরিবেশবান্ধব ও টেকসই জ্বালানি প্রযুক্তিতে স্থানীয় তরুণদের দক্ষ করে তুলতে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।
গত মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ১১টায় এনাম নাহার মোড়স্থ বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (BNPS)-এর হলরুমে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণে সন্দ্বীপ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত প্রায় ৪০ জন যুবক ও যুবতী অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন। প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সামছুল আলম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিগ্যান চাকমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় যুব উন্নয়ন উপপরিচালক মোহাম্মদ আবুল বশার।
অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন:
মোঃ শামসুদ্দিন, ব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (সন্দ্বীপ শাখা)
মোঃ মোকারাবিন, ক্রেডিট অ্যান্ড মার্কেটিং অফিসার, চট্টগ্রাম জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর
মোঃ রুবেল, কমিউনিটি সুপারভাইজার, ইলিয়াছ সুমন, সভাপতি, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা, সন্দ্বীপ শাখা
বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে বায়োগ্যাস প্রযুক্তিকে ভবিষ্যতের টেকসই, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে তুলে ধরেন।
তাঁরা বলেন, “বায়োগ্যাস শুধু একটি বিকল্প জ্বালানি নয়, এটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যকর সমাধান এবং কৃষির জন্য একটি উৎপাদনশীল জৈবসার সরবরাহের উৎস। এ প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে তরুণ সমাজ নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।”
প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া তরুণ-তরুণীরা হাতে-কলমে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবহার সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
নওশাদ আকরাম, শরিফ হোসেন, সালমা বেগম ও আকলিমা বেগম তাঁদের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, “এই প্রশিক্ষণ আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। বায়োগ্যাস প্লান্ট কিভাবে কাজ করে, তা নিজের হাতে শিখেছি। ভবিষ্যতে আমরা এটি ব্যবহার করে নিজেরাই কিছু করতে চাই।”
প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানায়, ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ আরও বড় পরিসরে আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মাধ্যমে সন্দ্বীপের যুব সমাজকে আরও দক্ষ, আত্মনির্ভর ও পরিবেশ সচেতন করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিকে উপজীব্য করে সন্দ্বীপে যে উদ্যোগের সূচনা হলো, তা শুধু প্রশিক্ষণে সীমাবদ্ধ নয়—এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী সচেতনতা, দক্ষতা অর্জন ও স্থানীয় উন্নয়নের যাত্রা। এই কর্মসূচি সন্দ্বীপের যুব সমাজের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।