একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে কিছুদিন ঋণ নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ক্রয় করেন জিয়া উদ্দিন (৩০) নতুন কেনা গাড়ী চালিয়ে গত শনিবার শ্বশুরবাড়ি যেতে সঙ্গী হলেন তার স্ত্রী, দুই সন্তান ও এক চাচাতো ভাই।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শ্বশুরবাড়ির যেতে বারিয়ারহাট – রামগড় রোড়ে হিঙ্গুলী ইউনিয়নের চিনকিরহাটে আসার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বালুবোঝাই একটি পিকআপ ভ্যানের সাথে সংঘর্ষ হয় সিএনজি অটোরিকশাটির। এতে জিয়া উদ্দিনের চাচাতো ভাই নুরুল করিরে ছেলে সাইফুল ইসলাম শাহীন (১৭) স্পটেই নিহত হন।
এসময় জিয়া উদ্দিন, স্ত্রী ফারহানা আক্তার সুমি (২৫), মেয়ে কায়সার জাহান তানিশা (৬) ও ছেলে মানারুল ইসলাম তাওহীদ (৩) গুরুতর আহত হন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৮টার দিকে মারা যান ফারহানা আক্তার সুমি (২৫), মানারুল ইসলাম তাওহীদ (৩)।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে জিয়া উদ্দিন।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার ৭ নং কাটাছড়া ইউনিয়নের বামনসুন্দর এলাকা দোস্ত মোহাম্মদের বাড়ির দিকে এগিয়ে যেতে যেতে শোকে বাকরুদ্ধ গ্রামের মানুষ।
দুটো অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করেছে। একটিতে মায়ের লাশ আরেকটিতে ছেলের। উপস্থিত সবাই অশ্রুসিক্ত। খোড়া হচ্ছে কবর। মায়ের কবরের পাশে ছেলেরও কবর। এমন শোকাবহ বেদনাদায়ক পরিবেশ কখনো দেখেনি বামুন সুন্দর এলাকার মানুষ।
কাটাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আলেয়া বেগম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় বামনসুন্দর এলাকার মা-ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে মা-ছেলের জন্য পাশাপাশি কবর খোড়ার দৃশ্য দেখে স্বজন ও প্রতিবেশী অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, নিহত সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মোহাম্মদ রুবেল বাদী হয়ে পিকআপের চালক শাহাবুদ্দিনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন। তিনজনের লাশ ময়নাতদন্তের পর দাফন করা হয়েছে। পিকআপচালককে গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।