এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হাটহাজারীর হালদা নদী থেকে দুটি মা (কাতলা) মাছ উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার (২২ জুন) বিকালের দিকে হাটহাজারী উপজেলার উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের রামদাস মুন্সির হাট সংলগ্ন হালদা নদীর অংশ থেকে মাছ দুটি উদ্ধার করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকালের দিকে উপজেলায় মাদার্শা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকার হালদা নদীর অংশে স্থানীয়রা মাছ দুটিকে ভাসতে দেখেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় হালদা নদীর রামদাস মুন্সীর হাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সাব ইন্সপেক্টর রমজান আলী নদী থেকে মাছ দুটি উদ্ধার করেন। উদ্ধার করার সময় একটি মা মাছ প্রায় পঁচা এবং অপর একটি মা মাছ প্রায় মৃত অবস্থায় ছিলো বলে জানান ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মেখল ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডস্থ ফকিরহাট সংলগ্ন তালুকদার বাড়ীর প্রবাসী মো.মীর। উদ্ধার করা মাছ দুটির মধ্যে একটির দৈর্ঘ্য ৩৮ ইঞ্চি,ওজন-১২.৮৫০ কেজি এবং অপরটির দৈর্ঘ্য ৩৬ ইঞ্চি, যার ওজন ছিলো ৮.৩৫০ কেজি।
জানতে চাইলে নদী গবেষক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড.মনজুরুল কিবরিয়া জানান, সাধারণত ডিম ছাড়া পর ব্রুড মাছগুলো শারীরবৃত্তীয় ভাবে খুব দূর্বল অবস্থায় থাকে। এই সময়ে নদীর ব্রুড মাছ (প্রজননক্ষম মা-বাবা মাছ) এর মৃত্যুর পেছনে এরোমোনাস ব্যাকটেরিয়া ওইসব দুর্বল বা চাপগ্রস্ত মাছকে মারাত্মকভাবে সংক্রমিত করে। বিশেষ করে যখন পানি দূষণ কৃষি বা শিল্প বর্জ্য, জৈব পদার্থের আধিক্য এরোমোনাস ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি উৎসাহিত করে।
মাছের ডিম ছাড়ার কয়েকদিন পর কোরবানির গরুর চামড়া, নাড়িভুঁড়ি হালদা নদীতে ফেলার ফলে এই ধরনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
সংক্রমনের ফলে ব্রুড মাছগুলোর মৃত্যু হয়েছে।
হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা যথাক্রমে আমিনুল ইসলাম ও আলমগীর আজাদির সহযোগিতায় মাছ দুটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরীতে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
হাটহাজারী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো.আমিনুল ইসলাম নদী থেকে দুটি মা মাছ (একটি প্রায় পঁচা অন্যটি প্রায় মৃত) উদ্ধার করার বিষয়টি রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে দশটার দিকে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।
প্রসংগত,গত বছরও হালদা নদীতে জুন মাসে প্রায় ৭টি ব্রুড মাছের মৃত্যু হয়েছে।