সন্দ্বীপ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রাম পুলিশদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সভায় ইউনিয়ন পরিষদসমূহকে আরও কার্যকর ও জনবান্ধব করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
সভায় ইউএনও বলেন, “গ্রাম পুলিশরা ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শক্তি। আপনাদের মাধ্যমে ইউনিয়নের আইন-শৃঙ্খলা, জনসেবা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।”
সভায় ইউএনও ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য ৫টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন
গ্রাম আদালত ও জন্ম/মৃত্যু নিবন্ধনে তথ্য সংগ্রহ: প্রতিটি ওয়ার্ডভিত্তিক গ্রাম আদালতে মামলা গ্রহণ এবং জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহের ওপর জোর দেওয়া হয়। এতে জনসাধারণের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা সহজ হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও গোয়েন্দা তথ্য প্রদান: ইউনিয়নে কোনো ধরনের অপরাধ বা সন্দেহভাজন ব্যক্তি দেখা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, সন্দ্বীপ থানা এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে অবহিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ইউনিয়নে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় এ নির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
নাগরিক সেবায় স্বচ্ছতা ও হয়রানিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত: নাগরিকদের বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাই ও সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের হয়রানি কিংবা আর্থিক সুবিধা দাবি না করার জন্য গ্রাম পুলিশদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। সেবা প্রাপ্তিতে সাধারণ জনগণ যেন আস্থা পায়, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়।
স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয়: ইউনিয়নের টিকাদান কেন্দ্র, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মাতৃসদন ও ক্লিনিকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে জন্ম-মৃত্যু সংক্রান্ত সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে তা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
মাদক ও চোরাকারবারিদের তথ্য প্রদান: গ্রাম পুলিশদের মাদক, ইয়াবা, ও চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তা উপজেলা প্রশাসনের নিকট সরবরাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
সভা শেষে ইউএনও সকল গ্রাম পুলিশদের পেশাগত নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “গ্রাম পুলিশরা যদি আন্তরিকভাবে কাজ করে, তাহলে ইউনিয়ন পরিষদগুলো সত্যিকার অর্থে জনগণের আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।”
সভার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ এবং থানার প্রতিনিধি কর্মকর্তারা।