আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা। বড় দুই দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে নেমে পড়েছেন আগেভাগেই। উঠান বৈঠক, দোয়া মাহফিল, সামাজিক অনুষ্ঠান—সবখানেই দেখা মিলছে নেতাদের সরব উপস্থিতি।
এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন। দীর্ঘ ৯ বছর যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে থাকার পর দেশে ফিরে তিনি এখন পুরোপুরি মাঠমুখী।
২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে করা হয় অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা—অভিযোগ ছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণের পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন তিনি। তবে মিল্টনের দাবি, “এটি ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা।”
মামলার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে দীর্ঘ সময় তিনি অবস্থান করেন। কিন্তু রাজনীতি থেকে সরে যাননি। বরং যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির আন্তর্জাতিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউ ইয়র্কসহ বিভিন্ন শহরে সরকারবিরোধী কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন।
তিনি সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু-এর সঙ্গে। পাশাপাশি স্টেট ডিপার্টমেন্ট, হোয়াইট হাউস, বিশ্বব্যাংক ও মানবাধিকার সংগঠন ‘রাইট টু ফ্রিডম’-এ বাংলাদেশের গণতন্ত্রহীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে ধরেছেন।
দেশে ফিরে মিল্টন নেমে পড়েছেন নির্বাচনী মাঠে। প্রতিদিনের ব্যস্ত সূচিতে ইউনিয়নভিত্তিক গণসংযোগ, দলীয় কর্মসূচি, দোয়া মাহফিল ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। শুধু তাই নয়, সরকারবিরোধী আন্দোলনে সন্দ্বীপে গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আইনি সহায়তা ও মানবিক সহানুভূতি নিয়ে।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, “মিল্টন ভাই শুধু নেতা না, দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানো একজন বড় ভাই।”
জনগণের সাথেও তার যোগাযোগ বেড়েছে অনেকগুণ। পাড়া-মহল্লা ঘুরে মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়ে উঠেছেন। একাধিক স্থানে স্থানীয়দের মুখে শোনা যাচ্ছে—“এই মিল্টন এখন আর আগের মতো না, অনেক পরিণত, অনেক কাছের মানুষ।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্থানীয় জনসম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় মিল্টন বর্তমানে বিএনপির মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।