সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এসময় তারা সাংবাদিকদের গাড়ী ও ক্যামেরা ভাঙচুর, টাইপড, মোবাইল, মানিব্যাগ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনতাই করে নিয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই দুই সাংবাদিককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর এলাকার লোহার ব্রীজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত শুক্রবার ৩ অক্টোবর রাতভর দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হয়। এতে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের অন্তত ১৩ থেকে ১৪ জন ব্যক্তিকে অপহরণ করে। এতে কালু নামে একজন ঘটনাস্থলে নিহত হন।
জানা যায়, আগের দিনের ঘটনার ফলোআপ করতে রবিবার সকালে এখন টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হোসাইন আহমেদ জিহাদ ও ক্যামেরাপার্সন মোঃ পারভেজ গাড়ীসহ জঙ্গল সলিমপুরে প্রবেশ করে। এসময় সন্ত্রাসীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ী ও ভুক্তভোগীদের ভিডিও ফুটেজ নেওয়ার সময় কয়েকটি সিএনজি যোগে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একদল সন্ত্রাসী এসে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তারা সাংবাদিক হোসাইন আহমেদ জিহাদকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। আর তার ক্যামেরাপার্সন পারভেজকে লাথি, কিল-ঘুষিসহ মাটিতে লুটিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। তিনি কোনমতে ছুটে এসে প্রাণে বাঁচেন। এসময় সন্ত্রাসীরা এখন টিভির গাড়ী ও ক্যামেরা ভাঙচুর করে এবং তাদের মোবাইল, মানিব্যাগ, আইডি কার্ড, পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়।
এখন টিভির ব্যুরো প্রধান বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের মারধর শুরু করা হয়। কারা করল তাও বুঝতে পারলাম না, তারা আমাদের কোন কথাও শুনল না। কি নিউজ করতে গেলাম সেটাও শুনতে চাইল না। আমাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়, ঘাড়ে কোপ বসিয়ে দেয়।
ক্যামেরাপার্সন মোঃ পারভেজ কান্নাজনতি কণ্ঠে বলেন, আমাকে এলোপাতাড়ি এতো মারধর করা হয়েছে ব্যাথায় নড়াচড়া করতে পারছি না। তারা কেউ আমাদের কথা শুনেনি। সেখানে এতো বড় ঘটনা গতকাল থেকে ঘটে চললেও আশেপাশে কোন পুলিশ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জঙ্গল সলিমপুরে সাংবাদিকদের ওপর এই হামলা চালিয়েছেন জঙ্গল সলিমপুর ও আলীনগর দখলে রাখা শীর্ষ সন্ত্রাসী মোহাম্মদ ইয়াসিনের অন্যতম ক্যাডার জামাই ইয়াছিন, তার ভাই ফারুকসহ মশিউরের লোকজন। এর আগে রোকন মেম্বারের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ ওই এলাকা দখল করতে গেলে ইয়াছিনের বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়ে পালিয়ে যান।
সীতাকুণ্ড (সার্কেল)’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাবীব আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা সেখানে পুলিশ ফোর্স বাড়িয়েছি। সাংবাদিকদের কাছ থেকে লুট করা জিনিসপত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও গতকালের ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।