চট্টগ্রাম 1:03 pm, Thursday, 27 November 2025
রাঙ্গুনিয়ায় এক তরুণীর সাহসী পথচলা

শখের কেক বানানো থেকে স্বপ্নের উদ্যোক্তা

রাঙ্গুনিয়ার লালানগর ইউনিয়নের বন্দেরাজার পাড়ার তরুণী সাকিফা আকতার। যার হাতের তৈরি কেক আজ শুধু খাবার নয়, উপহার দিচ্ছে স্বপ্ন, আনন্দ আর ভালোবাসা। শখের বেকিং দিয়ে শুরু হওয়া তাঁর যাত্রা এখন ধীরে ধীরে রাঙ্গুনিয়ার মানুষের প্রশংসা কুড়ানো এক সফল উদ্যোগে পরিণত হচ্ছে।

২০২০ সালে পরিবারের জন্মদিন, ছোটখাটো আয়োজন কিংবা বিশেষ মুহূর্তে নিজের মত করে কেক বানাতেন তিনি। সেই সময় কাউকে খুশি করার আনন্দই ছিল মূল লক্ষ্য। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তার কেকের স্বাদ, নান্দনিকতা ও পরিশ্রম চোখে পড়ে আশপাশের মানুষের। প্রশংসা আর অনুরোধ বাড়তেই দুই–তিন মাস আগে তিনি নতুন করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।

নতুন উদ্যোক্তা হওয়া সত্ত্বেও মাসে ২০ থেকে ২৫টি অর্ডার পাচ্ছেন সাকিফা। গ্রাহকদের পছন্দ অনুযায়ী কাস্টমাইজড কেক তৈরি করাই তাঁর বিশেষ দক্ষতা। রঙ, ডিজাইন, লেয়ার কিংবা থিম—সব কিছুর প্রতিটিতেই থাকে তাঁর নিবিড় মনোযোগ আর সৃজনশীলতা। আর তাই দ্রুতই তাঁর কেক অনেকের প্রথম পছন্দে পরিণত হচ্ছে।

ঘরে বসে কাজ করায় পরিবার ও পড়াশোনার দায়িত্ব একইসাথে সামলে নেওয়ার সুবিধা তিনি অন্যতম শক্তি মনে করেন। নিজের পথচলার কথা বলতে গিয়ে আবেগভরা কণ্ঠে সাকিফা বলেন, “অনেক সময় মনে হয়েছে, হয়তো পারব না। কিন্তু যারা আমার কেক খেয়ে মুগ্ধ হন—তাদের হাসিমুখই আমাকে প্রতিদিন নতুন করে শুরু করতে শেখায়। ইনশাআল্লাহ, একদিন চাই—রাঙ্গুনিয়ার প্রতিটি জায়গায় আমার কেকের দোকান থাকুক।”

তার এই সংগ্রাম ও সফলতা রাঙ্গুনিয়ার অন্যান্য মেয়েদের মধ্যেও নতুন স্বপ্ন জাগাচ্ছে। ঘরে বসে যে নিজের প্রতিভা ও পরিশ্রম দিয়ে আয় করা সম্ভব—সাকিফা যেন তারই জীবন্ত প্রমাণ। এক ছোট্ট শখ কিভাবে একদিন বড় স্বপ্নে পরিণত হতে পারে, তা তিনি নিজের জীবনে দেখিয়ে দিয়েছেন।

রাঙ্গুনিয়ার তরুণ উদ্যোক্তাদের মাঝে সাকিফা আকতার এখন অনুপ্রেরণার নাম—যেখানে প্রতিটি কেকের সাথে জুড়ে থাকে আশা, সাহস আর একটি মেয়ের লড়ে ওঠার গল্প।

উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, “সাকিফার মতো তরুণীদের উদ্যম আমাদের জন্য গর্বের। নিজের শখকে উদ্যোক্তায় রূপান্তর করা সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি শুধু তার স্বপ্ন নয়, বরং রাঙ্গুনিয়ার অন্য মেয়েদের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস। আমরা আশা করি, তার মতো আরও অনেক যুবক-যুবতী ঘরে বসে সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণ করবে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সন্দ্বীপে শ্রমিক দল নেতা নাছির উদ্দীন বাবুলকে গুলি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

রাঙ্গুনিয়ায় এক তরুণীর সাহসী পথচলা

শখের কেক বানানো থেকে স্বপ্নের উদ্যোক্তা

Update Time : 09:57:52 pm, Wednesday, 26 November 2025

রাঙ্গুনিয়ার লালানগর ইউনিয়নের বন্দেরাজার পাড়ার তরুণী সাকিফা আকতার। যার হাতের তৈরি কেক আজ শুধু খাবার নয়, উপহার দিচ্ছে স্বপ্ন, আনন্দ আর ভালোবাসা। শখের বেকিং দিয়ে শুরু হওয়া তাঁর যাত্রা এখন ধীরে ধীরে রাঙ্গুনিয়ার মানুষের প্রশংসা কুড়ানো এক সফল উদ্যোগে পরিণত হচ্ছে।

২০২০ সালে পরিবারের জন্মদিন, ছোটখাটো আয়োজন কিংবা বিশেষ মুহূর্তে নিজের মত করে কেক বানাতেন তিনি। সেই সময় কাউকে খুশি করার আনন্দই ছিল মূল লক্ষ্য। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তার কেকের স্বাদ, নান্দনিকতা ও পরিশ্রম চোখে পড়ে আশপাশের মানুষের। প্রশংসা আর অনুরোধ বাড়তেই দুই–তিন মাস আগে তিনি নতুন করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।

নতুন উদ্যোক্তা হওয়া সত্ত্বেও মাসে ২০ থেকে ২৫টি অর্ডার পাচ্ছেন সাকিফা। গ্রাহকদের পছন্দ অনুযায়ী কাস্টমাইজড কেক তৈরি করাই তাঁর বিশেষ দক্ষতা। রঙ, ডিজাইন, লেয়ার কিংবা থিম—সব কিছুর প্রতিটিতেই থাকে তাঁর নিবিড় মনোযোগ আর সৃজনশীলতা। আর তাই দ্রুতই তাঁর কেক অনেকের প্রথম পছন্দে পরিণত হচ্ছে।

ঘরে বসে কাজ করায় পরিবার ও পড়াশোনার দায়িত্ব একইসাথে সামলে নেওয়ার সুবিধা তিনি অন্যতম শক্তি মনে করেন। নিজের পথচলার কথা বলতে গিয়ে আবেগভরা কণ্ঠে সাকিফা বলেন, “অনেক সময় মনে হয়েছে, হয়তো পারব না। কিন্তু যারা আমার কেক খেয়ে মুগ্ধ হন—তাদের হাসিমুখই আমাকে প্রতিদিন নতুন করে শুরু করতে শেখায়। ইনশাআল্লাহ, একদিন চাই—রাঙ্গুনিয়ার প্রতিটি জায়গায় আমার কেকের দোকান থাকুক।”

তার এই সংগ্রাম ও সফলতা রাঙ্গুনিয়ার অন্যান্য মেয়েদের মধ্যেও নতুন স্বপ্ন জাগাচ্ছে। ঘরে বসে যে নিজের প্রতিভা ও পরিশ্রম দিয়ে আয় করা সম্ভব—সাকিফা যেন তারই জীবন্ত প্রমাণ। এক ছোট্ট শখ কিভাবে একদিন বড় স্বপ্নে পরিণত হতে পারে, তা তিনি নিজের জীবনে দেখিয়ে দিয়েছেন।

রাঙ্গুনিয়ার তরুণ উদ্যোক্তাদের মাঝে সাকিফা আকতার এখন অনুপ্রেরণার নাম—যেখানে প্রতিটি কেকের সাথে জুড়ে থাকে আশা, সাহস আর একটি মেয়ের লড়ে ওঠার গল্প।

উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, “সাকিফার মতো তরুণীদের উদ্যম আমাদের জন্য গর্বের। নিজের শখকে উদ্যোক্তায় রূপান্তর করা সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি শুধু তার স্বপ্ন নয়, বরং রাঙ্গুনিয়ার অন্য মেয়েদের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস। আমরা আশা করি, তার মতো আরও অনেক যুবক-যুবতী ঘরে বসে সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণ করবে।”