চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা, গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬ উপলক্ষে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য ও কর্মকর্তাদের সাথে অবহিতকরণ সভা সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উক্ত সভা সম্পন হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলতাপ হোসেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম রহমান, সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের আহবায়ক মোঃ জহিরুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ কল্লোল বড়ুয়া, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আলমগীর বাদশা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা তাজাম্মল হোসেন, মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মোতাছিম বিল্লাহ্, জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রণবেশ মহাজন, কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুল্লাহ্, সমাজসেবা কর্মকর্তা লুৎফুন নেছা বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনছুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী, হাইওয়ে পুলিশের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনছুর বলেন, আগের চেয়ে সীতাকুণ্ডের আইনশৃঙ্খলা কিছুটা উন্নত হয়েছে। ৫ আগস্টের আগে সীতাকুণ্ডে ব্যাপকহারে চুরি, ডাকাতি, ছিনতায় বেড়ে গিয়েছিল। থানা ও উপজেলা পরিষদে তদবির ছিল। এবং কিছু বিপদগামী সাংবাদিক সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে আড্ডা ও তদবির করতো। থানায় বসে তারা সিদ্ধান্ত নিতো যে আজ কি নিউজ করবে। সকাল হলে সবাই একি রকম নিউজ করতো। এখন কিন্তু থানায় ও উপজেলা পরিষদে বসে আগের মতো আড্ডা ও তদবির করা বন্ধ হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর সিদ্ধান্তে।
সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, সীতাকুণ্ডে আইনশৃঙ্খলা কিছুটা উন্নত হলেও ইদানিং বিভিন্ন এলাকায় চুরি বেড়ে গেছে। গরু চুরি, একাধিক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও দুইটি কমিউনিটি ক্লিনিকে চুরির ঘটনা ঘটে। এইসব চুরির ঘটনা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, “উপজেলার সার্বিক নিরাপত্তা ও নাগরিক শান্তি বজায় রাখতে প্রশাসন কঠোরভাবে কাজ করছে। মাদক, সন্ত্রাস, চুরি ডাকাতি অপরাধ দমনে জিরো টলারেন্স নীতিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আন্তরিকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত সহযোগীতা অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও সুসংহত হবে।’
নির্বাচনি অবহিতকরণ সভায় ইউএনও বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণভোট ও পোস্টাল ব্যালট চালু করেছে সরকার। গণভোট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার, জুলাই সনদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে ভূমিকা নির্ভর করবে। তাই গণভোট বিষয়ে প্রতিটি মানুষকে যার যার অবস্থান থেকে অবহিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই প্রথম আমাদের প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন। সেজন্য সরকার পোস্টাল ব্যালট চালু করেছে। পাশাপাশি যারা সরকারী কর্মকর্তা নির্বাচনি কাজে দায়িত্ব পালন করবেন তারাও পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। এজন্য সবাইকে সঠিকভাবে নিবন্ধন করতে হবে। তাদের দেওয়া ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পৌঁছে যাবে এবং যারা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিবে তাদের ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা করবেন নির্বাচন কমিশন।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। “অপরাধ দমনে জনগণের সহযোগীতা অপরিহার্য। যে কোনো তথ্য পেলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
সভায় উপজেলার চলমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি প্রতিরোধমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। গ্রাম পুলিশ সক্রিয়করণ, এলাকাভিত্তিক কমিটি গঠন ও রাতে পাড়া-মহল্লায় পাহারাদার দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন পরামর্শ ওঠে আসে।
এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণভোট বিষয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় একাধিক পরামর্শ দেন আলোচকবৃন্দ। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিটি এলাকায় মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, মসজিদ- মন্দিরে প্রচার, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে আগত সেবাগ্রহীতাদেরকে গণভোট সম্পর্কে অবগত করা, হাসপাতাল, থানা, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভায় সিটিজেন চার্টার টাঙানো ও পাড়াভিত্তিক উঠান বৈঠক করে সাধারণ মানুষকে গণভোট বিষয়ে সচেতন করার আহ্বান জানানো হয়।
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 


















