চট্টগ্রাম 4:15 am, Sunday, 13 July 2025
মিরসরাইয়ে আ'লীগ যুবলীগ সংঘর্ষ

কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতার গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় মিরসরাই থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আ’ লীগ ও যুবলীগ দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ গুলি বর্ষণ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় মিরসরাই থানায় দুটি মামলা হয়েছে। রোববার ১৮ জুন একইদিন দুটি মামলা দায়ে করে দুই পক্ষ। দুটি মামলায় ২১ জনকে আসামি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে মামলাটি করেন তার প্রধান রাজনৈতিক সমন্বয়ক কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার দপ্তর সম্পাদক আসিফুর রহমান শাহীন। অপর পক্ষে ১১জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন মঘাদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টার।

জানাগেছে, গত শনিবার ১৭ জুন শনিবার বিকাল ৩ টায় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারণার সময় কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের গাড়ি বহর মঘাদিয়া ইউনিয়নের মিয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছলে সেখানে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সমাবেশের মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

নিয়াজ মোর্শেদ এলিট অভিযোগ করেন মিরসরাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি একটি পরিবারের কাছে কুক্ষিগত হয়ে আছে ৫২ বছর। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পথের কাটা মনে করে আমাকে শেষ করে দেওয়ার জন্য তার নির্দেশে আমাকে হত্যার পুর্ব পরিকল্পনা নিয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টার ৫০ জন অনুসারী নিয়ে সড়কে বালু ভর্তি ট্রাক এলোপাতাড়ি করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে হামলার নেতৃত্ব দেন।এ সময় এলিটের ৪/৫ জন সহযোগী আহত হয়েছে। তার গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টারে অনুসারীদের মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে।

নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের পক্ষে আসিফুর রহমান শাহীন বাদি হয়ে মিরসরাই থানায় ১০ জনকে এজাহারনামীয় ও ২০-৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন ।
মামলার আসামিরা হলেন, জাহাঙ্গীর হোসেন প্রকাশ জাহাজ মাস্টার (৫২), তৌহিদ আনোয়ার বাপ্পি (২৬), ফিরোজ খান (২৬), আবুল হাসনাত (৩৪), আবদুল্লাহ আল নাঈম রবিন (২৪), আবু নসর রিপন (২৮), আমিনুল ইসলাম আমিন (২৪), মোমিনুল ইসলাম (৩২), তোফায়েল উল্লাহ চৌধুরী নাজমুল (৫৮) এবং ওমর ফারুক (৩৮)। সহ অজ্ঞাতনামা ২০/৩০জন।

মামলার এজাহারে বর্নিত ও এলিট অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারণা চালিয়ে শনিবার (১৭ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মিরসরাই ইকোনমিক জোনের দিকে যাওয়ার সময় মিয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিটকে আটকানোর উদ্দেশ্যে সড়কে বালুর ট্রাক দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন মঘাদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন। পরে জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে তার অনুসারীদের হামলায় নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের প্রধান রাজনৈতিক সমন্বয়ক ও বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক যুবলীগ নেতা আছিফুর রহমান শাহীন, যুবলীগ নেতা মো. আলী, রমজান আলী বাবলু, শওকত আজিম রিংকু, মো. শাহাবুদ্দিনসহ আরও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। তার গাড়ি সহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।

আহত আছিফুর রহমান শাহীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন প্রচারনায় যারা বাঁধা দিতে পারে তারা দেশের শত্রু। আওয়ামী লীগের ভিতরে তারা বিএনপির গুপ্তচর। ‘গাড়ি বহরে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় আমি মামলা করেছি। আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টারের মিথ্যা মামলায় নিয়াজ মোর্শেদ এলিট সহ আমরা সবাই চট্টগ্রাম ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে জামিন নিয়েছি।

জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টার এজাহারে অভিযোগ করেন, তাদের পূর্ব নির্ধারিত শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের নেতৃত্বে গুলি বর্ষণ করে নেতা কর্মীদের উপর হামলা করা হয়েছে। তিনি থানায় মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হচ্ছেন,এদিকে জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টার বাদি হয়ে একইদিন মিরসরাই থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে নামীয় আসামীরা হলেন নিয়াজ মোর্শেদ এলিট (৩৯), আসিফ রহমান শাহীন (৩৮), শাখাওয়াত হোসেন রিংকু (৩১), মোহাম্মদ আলী(৩৫), হাসান হাবিব রনি(৪০), নুর উদ্দিন বাহার (৪৫), আইনুল কবির জুয়েল(২৭), মঞ্জরুল ইসলাম(৩৮), শওকত আজিম রিংকু(৩২), মোঃ ঈমাম হোসেন শেখ(৪০), রিয়াজ উদ্দিন নিলু (৩৪),সহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন।

দু’টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরসরাই থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম আরমান বলেন,
সৃষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে দুইটি মামলা হয়েছে। দুইটি মামলাই আমি তদন্ত করছি। আমরা তদন্তের একদম প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। প্রকৃত ঘটনার উদঘাটনে বিস্তারিত তদন্তের প্রয়োজন। আপনারা জানেন, দুইটি পক্ষই সরকারদলীয় রাজনৈতিক আদর্শধারী। সেক্ষেত্রে আমি আমার সিনিয়র অফিসারদের দিক নির্দেশনা মোতাবেক খুবই সুক্ষ্মভাবে বিষয়টি তদন্তে নিয়োজিত আছি। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরেছি একটি মামলার সকল বিবাদীগন বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

কাজীপাড়া আজিজিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভা অনুষ্ঠিত

মিরসরাইয়ে আ'লীগ যুবলীগ সংঘর্ষ

কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতার গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় মিরসরাই থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা

Update Time : 09:54:45 pm, Monday, 19 June 2023

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আ’ লীগ ও যুবলীগ দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ গুলি বর্ষণ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় মিরসরাই থানায় দুটি মামলা হয়েছে। রোববার ১৮ জুন একইদিন দুটি মামলা দায়ে করে দুই পক্ষ। দুটি মামলায় ২১ জনকে আসামি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে মামলাটি করেন তার প্রধান রাজনৈতিক সমন্বয়ক কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার দপ্তর সম্পাদক আসিফুর রহমান শাহীন। অপর পক্ষে ১১জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন মঘাদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টার।

জানাগেছে, গত শনিবার ১৭ জুন শনিবার বিকাল ৩ টায় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারণার সময় কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের গাড়ি বহর মঘাদিয়া ইউনিয়নের মিয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছলে সেখানে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সমাবেশের মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

নিয়াজ মোর্শেদ এলিট অভিযোগ করেন মিরসরাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি একটি পরিবারের কাছে কুক্ষিগত হয়ে আছে ৫২ বছর। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পথের কাটা মনে করে আমাকে শেষ করে দেওয়ার জন্য তার নির্দেশে আমাকে হত্যার পুর্ব পরিকল্পনা নিয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টার ৫০ জন অনুসারী নিয়ে সড়কে বালু ভর্তি ট্রাক এলোপাতাড়ি করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে হামলার নেতৃত্ব দেন।এ সময় এলিটের ৪/৫ জন সহযোগী আহত হয়েছে। তার গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টারে অনুসারীদের মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে।

নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের পক্ষে আসিফুর রহমান শাহীন বাদি হয়ে মিরসরাই থানায় ১০ জনকে এজাহারনামীয় ও ২০-৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন ।
মামলার আসামিরা হলেন, জাহাঙ্গীর হোসেন প্রকাশ জাহাজ মাস্টার (৫২), তৌহিদ আনোয়ার বাপ্পি (২৬), ফিরোজ খান (২৬), আবুল হাসনাত (৩৪), আবদুল্লাহ আল নাঈম রবিন (২৪), আবু নসর রিপন (২৮), আমিনুল ইসলাম আমিন (২৪), মোমিনুল ইসলাম (৩২), তোফায়েল উল্লাহ চৌধুরী নাজমুল (৫৮) এবং ওমর ফারুক (৩৮)। সহ অজ্ঞাতনামা ২০/৩০জন।

মামলার এজাহারে বর্নিত ও এলিট অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারণা চালিয়ে শনিবার (১৭ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মিরসরাই ইকোনমিক জোনের দিকে যাওয়ার সময় মিয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিটকে আটকানোর উদ্দেশ্যে সড়কে বালুর ট্রাক দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন মঘাদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন। পরে জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে তার অনুসারীদের হামলায় নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের প্রধান রাজনৈতিক সমন্বয়ক ও বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক যুবলীগ নেতা আছিফুর রহমান শাহীন, যুবলীগ নেতা মো. আলী, রমজান আলী বাবলু, শওকত আজিম রিংকু, মো. শাহাবুদ্দিনসহ আরও বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। তার গাড়ি সহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।

আহত আছিফুর রহমান শাহীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন প্রচারনায় যারা বাঁধা দিতে পারে তারা দেশের শত্রু। আওয়ামী লীগের ভিতরে তারা বিএনপির গুপ্তচর। ‘গাড়ি বহরে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় আমি মামলা করেছি। আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টারের মিথ্যা মামলায় নিয়াজ মোর্শেদ এলিট সহ আমরা সবাই চট্টগ্রাম ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে জামিন নিয়েছি।

জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টার এজাহারে অভিযোগ করেন, তাদের পূর্ব নির্ধারিত শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের নেতৃত্বে গুলি বর্ষণ করে নেতা কর্মীদের উপর হামলা করা হয়েছে। তিনি থানায় মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হচ্ছেন,এদিকে জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টার বাদি হয়ে একইদিন মিরসরাই থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে নামীয় আসামীরা হলেন নিয়াজ মোর্শেদ এলিট (৩৯), আসিফ রহমান শাহীন (৩৮), শাখাওয়াত হোসেন রিংকু (৩১), মোহাম্মদ আলী(৩৫), হাসান হাবিব রনি(৪০), নুর উদ্দিন বাহার (৪৫), আইনুল কবির জুয়েল(২৭), মঞ্জরুল ইসলাম(৩৮), শওকত আজিম রিংকু(৩২), মোঃ ঈমাম হোসেন শেখ(৪০), রিয়াজ উদ্দিন নিলু (৩৪),সহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন।

দু’টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরসরাই থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম আরমান বলেন,
সৃষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে দুইটি মামলা হয়েছে। দুইটি মামলাই আমি তদন্ত করছি। আমরা তদন্তের একদম প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। প্রকৃত ঘটনার উদঘাটনে বিস্তারিত তদন্তের প্রয়োজন। আপনারা জানেন, দুইটি পক্ষই সরকারদলীয় রাজনৈতিক আদর্শধারী। সেক্ষেত্রে আমি আমার সিনিয়র অফিসারদের দিক নির্দেশনা মোতাবেক খুবই সুক্ষ্মভাবে বিষয়টি তদন্তে নিয়োজিত আছি। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরেছি একটি মামলার সকল বিবাদীগন বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।