চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে কৃষি উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহায়তায় প্রথমবারের মতো গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন মীরসরাইয়ের তরমুজ চাষীরা। মালচিং পদ্ধতিতে মাচায় তরমুজ চাষকৃত ক্ষেত ভরে গেছে কালো ও সবুজ তরমুজে।
প্রচন্ড গরমে বাজারে এই ফলটির বেশ চাহিদাও রয়েছে। পাইকাররা ক্ষেত থেকেই তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কম খরচ ও পরিশ্রমে ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।
মীরসরাই উপজেলার ৩ নং জোরারগঞ্জ, ২ নং হিঙ্গুলী, ১২ নং খৈয়াছরা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় এক হেক্টর জমিতে মোট ৮ জন কৃষক গ্রীষ্মকালীণ তরমুজের আবাদ করেছেন।
মীরসরাইয়ের ৩ নং জোরারগঞ্জের উত্তর সোনাপাহাড় ছদমার দিঘী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সম্পূর্ণ অর্গানিক ও মালচিং পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে তরমুজ ক্ষেত। এখানে ইয়েলো কিং ও ব্ল্যাকবেবি জাতের তরমুজ আবাদ করা হয়েছে। এই গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে কোনো ধরনের বিষ প্রয়োগ করা হয়নি। পোকামাকড় রোধ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ও ইয়েলো কার্ড। তরমুজ গাছের পরিচর্যার ঠিক রাখার জন্য দেওয়া হয়েছে মালচিং পেপার এবং উপরে মাচা দিয়ে ফল প্যাকেট জাত করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব জাতের তরমুজের ভেতরের অংশের রং লাল হয় এবং খেতেও বেশ সুস্বাদু।
স্থানীয় কৃষক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কৃষি বিভাগ প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে তরমুজ চাষের জন্য বিনামূল্যে বীজ, মালচিং পেপার, সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, জৈব সার দিয়েছে। ২০ শতাংশ জায়গায় জুড়ে আমার প্রায় ২৫ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। তরমুজের ভালো ফলন হওয়ায় লাভও বেশি হবে।’
এছাড়া খৈয়াছরার কৃষক ইকবাল হোসেন, পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের মো. আলমগীরসহ আটজন চাষি প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ।
কৃষক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি ৫০ শতক জমিতে এবার শখের বশে ব্ল্যাক বেবী, ইয়োলো কিং জাতের গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেছি। কম খরচ ও কম পরিশ্রমে তরমুজ চাষ করে ভালো লাভ পাওয়া যাচ্ছে। এটি যেমন রসাল, তেমনি সুমিষ্ট। আমার ক্ষেতের প্রতিটি তরমুজের ওজন প্রায় দেড় থেকে চার কেজি। সর্বনিম্ন ৬০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করলেও লাখ টাকারও বেশি লাভ হবে।’
মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘মীরসরাইয়ে এক হেক্টর জমিতে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক তরমুজ চাষ করেছেন ৮ জন কৃষক। এ অঞ্চলের বেলে দোআঁশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালীন তরমুজ উচ্চ মূল্যের ফসল হওয়ায় তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষকরা। আশা করছি ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে ব্যাপক হারে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষ বাড়বে।