চট্টগ্রাম 3:19 am, Friday, 4 July 2025
মুসল্লীদের মধ্যে স্বস্তি

নাঙলমোড়ায় বিরোধীয় মসজিদে শান্তিপূর্ণ ভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

হাটহাজারীর নাঙলমোড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়াডের একটি মসজিদ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধীয় এই মসজিদে শান্তিপূর্ণ ভাবে ঈদের নামাজ আদায় নিয়ে মুসল্লীদের মধ্যে শংকা ছিল। অবশেষে শান্তিপূর্ণ ভাবে এই মসজিদে স্হানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় ঈদের জামাত শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার মুসল্লীদের স্বস্তি এসেছে।

 

জানা যায়, এই ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে স্হাপিত এই মসজিদের কর্তৃত্ব ও কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধ বিজ্ঞ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। বর্তমানে ও এই মসজিদের দুই পক্ষের দুই দুইটি কমিটি ওয়াকপ কর্তৃপক্ষের নিকট অনুমোদন অপেক্ষায় রয়েছে।

 

কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সরোজমিন পরিদর্শন করে স্হানীয়দের মতামত নেওয়ার অপেক্ষায় আছে।

 

এর মধ্যে গত শবে কদরের দিন মসজিদে রমজানে তারাবী নামাজ আদায়ের জন্য নিয়োজিত হাফেজের সম্মানী নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পুনরায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জের ধরে আখেরী জুমার দিনে হাতাহাতিতে রুপ নেয়। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা অবহিত হয়ে ইউ পি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ কে দুই পক্ষ ডেকে মিমাংসা জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। ইউ চেয়ারম্যান প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসারে দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে পবিত্র ঈদ উল ফিতরের দিন শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত আদায়ে উভয় পক্ষ ঐক্যমত পোষন করলে স্হানীয় জনপ্রতিনিধি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে করে স্হানীয় মুসল্লীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

 

মসজিদ কমিটির এক পক্ষের প্রতিনিধি গাজী নুর খালেক এ বিষয় নিয়ে গন মাধ্যমকে বলেন মসজিদের নাম এবং ওয়াকপ কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে বিরোধের বিষয় তিনি স্বীকার করেন।

 

গত শবে কদরের দিন রমজান উপলক্ষে মসজিদে নিয়োজিত হাফেজের সম্মানী তারা পরিশোধ করেন। কিন্তু অন্য পক্ষ নিজেদের কর্তৃক বজায় রাখতে হাফেজকে সম্মানী দিতে গেলে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরের দিন মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলে সম্মানী দেওয়ার ঘটনায় কথা বলতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিতে রুপ নেয়। থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি মিমাংসা জন্য স্হানীয় ইউ পি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদকে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি উভয় পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য বসেন। তবে ইউ পি চেয়ারম্যানর নিস্পত্তির বিষয় তার পক্ষ সন্তুষ্ট হতে পারেনি বলে ও তিনি উল্লেখ করেন।

 

ওয়াকপ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হেদায়েত আলী মসজিদ প্রকাশ বায়তুল নুর মসজিদ এর এক পক্ষের প্রতিনিধি রবিউল আলম ও একই ভাবে এই মসজিদ নিয়ে বিরোধের কথা গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন কর্তৃপক্ষের দেওয়া নির্ধারিত ৩ বছরের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু অপর পক্ষের আবেদনের কারনে পূর্বের কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও মসজিদ পরিচালনার স্বার্থে পুনরায় কমিটি না হওয়া পর্যন্ত এই কমিটি মসজিদ পরিচালনা করবেন বলে উল্লেখ করেন। সেই হিসাবে কমিটির পক্ষ থেকে রমজানে তারাবী নামাজ পড়ানোর জন্য যে হাফেজ রাখা হয়েছে তার সম্মানী প্রদান করতে গেলেই ঘটনার সূত্র হয়। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ ভাবে ঈদের নামাজ এই মসজিদে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

 

মসজিদের বিরোধের বিষয় নিয়ে নাঙলমোড়া ইউ পি চেয়ারম্যান এই বিরোধ দীর্ঘদিনের বলে তিনি ও স্বীকার করেন। তবে শবে কদর ও পরদিন হাফেজের সম্মানী প্রদানের বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। থানার ওসি ও ইউ এন ও আমাকে বলার পর আমি দুই পক্ষ নিয়ে বসে আলোচনা করি এবং শান্তি শৃঙ্খল বজায় রাখার পরামর্শ প্রদান করি। ওয়াকপ কর্তৃপক্ষের নিকট দুই পক্ষ মসজিদ কমিটি অনুমোদনের জন্য পছন্দের লোকজনদের নিয়ে দুইটি কমিটি জমা দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ যেই কমিটিকে অনুমোদন দেবেন সেই কমিটিই মসজিদ পরিচালনা করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

দুই পক্ষই তার কথা মেনে নিয়ে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। আমি নিজে ও এই মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। নামাজের সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ও উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন। বিরোধীয় মসজিদে শান্তিপূর্ণ ভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে মুসল্লীরা খুব খুশী বলে ও তিনি উল্লেখ করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাইফ-এর উদ্যোগে ইউএনও রিগ্যান চাকমাকে হৃদয়বিদারক বিদায়ী সংবর্ধনা

মুসল্লীদের মধ্যে স্বস্তি

নাঙলমোড়ায় বিরোধীয় মসজিদে শান্তিপূর্ণ ভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

Update Time : 06:26:00 am, Saturday, 7 May 2022

হাটহাজারীর নাঙলমোড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়াডের একটি মসজিদ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধীয় এই মসজিদে শান্তিপূর্ণ ভাবে ঈদের নামাজ আদায় নিয়ে মুসল্লীদের মধ্যে শংকা ছিল। অবশেষে শান্তিপূর্ণ ভাবে এই মসজিদে স্হানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় ঈদের জামাত শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার মুসল্লীদের স্বস্তি এসেছে।

 

জানা যায়, এই ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে স্হাপিত এই মসজিদের কর্তৃত্ব ও কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধ বিজ্ঞ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। বর্তমানে ও এই মসজিদের দুই পক্ষের দুই দুইটি কমিটি ওয়াকপ কর্তৃপক্ষের নিকট অনুমোদন অপেক্ষায় রয়েছে।

 

কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সরোজমিন পরিদর্শন করে স্হানীয়দের মতামত নেওয়ার অপেক্ষায় আছে।

 

এর মধ্যে গত শবে কদরের দিন মসজিদে রমজানে তারাবী নামাজ আদায়ের জন্য নিয়োজিত হাফেজের সম্মানী নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পুনরায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জের ধরে আখেরী জুমার দিনে হাতাহাতিতে রুপ নেয়। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা অবহিত হয়ে ইউ পি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ কে দুই পক্ষ ডেকে মিমাংসা জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। ইউ চেয়ারম্যান প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসারে দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে পবিত্র ঈদ উল ফিতরের দিন শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত আদায়ে উভয় পক্ষ ঐক্যমত পোষন করলে স্হানীয় জনপ্রতিনিধি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে করে স্হানীয় মুসল্লীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

 

মসজিদ কমিটির এক পক্ষের প্রতিনিধি গাজী নুর খালেক এ বিষয় নিয়ে গন মাধ্যমকে বলেন মসজিদের নাম এবং ওয়াকপ কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে বিরোধের বিষয় তিনি স্বীকার করেন।

 

গত শবে কদরের দিন রমজান উপলক্ষে মসজিদে নিয়োজিত হাফেজের সম্মানী তারা পরিশোধ করেন। কিন্তু অন্য পক্ষ নিজেদের কর্তৃক বজায় রাখতে হাফেজকে সম্মানী দিতে গেলে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরের দিন মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলে সম্মানী দেওয়ার ঘটনায় কথা বলতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিতে রুপ নেয়। থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি মিমাংসা জন্য স্হানীয় ইউ পি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদকে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি উভয় পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য বসেন। তবে ইউ পি চেয়ারম্যানর নিস্পত্তির বিষয় তার পক্ষ সন্তুষ্ট হতে পারেনি বলে ও তিনি উল্লেখ করেন।

 

ওয়াকপ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হেদায়েত আলী মসজিদ প্রকাশ বায়তুল নুর মসজিদ এর এক পক্ষের প্রতিনিধি রবিউল আলম ও একই ভাবে এই মসজিদ নিয়ে বিরোধের কথা গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন কর্তৃপক্ষের দেওয়া নির্ধারিত ৩ বছরের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু অপর পক্ষের আবেদনের কারনে পূর্বের কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও মসজিদ পরিচালনার স্বার্থে পুনরায় কমিটি না হওয়া পর্যন্ত এই কমিটি মসজিদ পরিচালনা করবেন বলে উল্লেখ করেন। সেই হিসাবে কমিটির পক্ষ থেকে রমজানে তারাবী নামাজ পড়ানোর জন্য যে হাফেজ রাখা হয়েছে তার সম্মানী প্রদান করতে গেলেই ঘটনার সূত্র হয়। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ ভাবে ঈদের নামাজ এই মসজিদে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

 

মসজিদের বিরোধের বিষয় নিয়ে নাঙলমোড়া ইউ পি চেয়ারম্যান এই বিরোধ দীর্ঘদিনের বলে তিনি ও স্বীকার করেন। তবে শবে কদর ও পরদিন হাফেজের সম্মানী প্রদানের বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। থানার ওসি ও ইউ এন ও আমাকে বলার পর আমি দুই পক্ষ নিয়ে বসে আলোচনা করি এবং শান্তি শৃঙ্খল বজায় রাখার পরামর্শ প্রদান করি। ওয়াকপ কর্তৃপক্ষের নিকট দুই পক্ষ মসজিদ কমিটি অনুমোদনের জন্য পছন্দের লোকজনদের নিয়ে দুইটি কমিটি জমা দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ যেই কমিটিকে অনুমোদন দেবেন সেই কমিটিই মসজিদ পরিচালনা করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

দুই পক্ষই তার কথা মেনে নিয়ে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। আমি নিজে ও এই মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। নামাজের সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ও উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন। বিরোধীয় মসজিদে শান্তিপূর্ণ ভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে মুসল্লীরা খুব খুশী বলে ও তিনি উল্লেখ করেন।