ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ থানার পৃথক তিনটি মামলার প্রধান আসামী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও ঢাকা-১ আসনের সাবেক সাংসদ সালমান এফ রহমানের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বুধবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার নবাবগঞ্জ আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট শুনানি শেষে এ রিমান্ডের আদেশ দেন বলে পুলিশ সূত্র জানায়।
দোহার থানার ওসি রেজাউল ইসলাম ও নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নবাবগঞ্জ থানার দুটি মামলায় ৪দিন ও দোহার থানার একটি মামলায় ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
তারা আরও জানান, তবে দুই থানার মামলায় রিমান্ড পেলেও খুব তারাতাড়ি রিমান্ডে আনতে পারছেন না দুই থানা পুলিশ। কেন না দেশের আরও কয়েকটি মামলায় রিমান্ডে আছেন সালমান এফ রহমান।
দোহার থানা পুলিশ সূত্র জানা যায়, গত ৫ আগষ্ট দোহার উপজেলার করমআলীর মোড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মিছিলে হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে গত ২৫ আগষ্ট উপজেলার রামনাথপুর গ্রামের মো. শাজাহান মাঝি বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে দোহার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সালমান এফ রহমানকে প্রধান আসামী করে ১৭৪ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরো ২শ’ থেকে আড়াই’শ জনকে আসামি করা হয়। দোহার মামলা নং-২, তারিখ-২৫/০৮/২০২৪।
নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৫ আগষ্ট উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে গুলিতে আহত কলাকোপা ভৈরাহাটি গ্রামের ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সালমান এফ রহমানকে প্রধান আসামী করে ১৭৩ জনের নামসহ অজ্ঞাত আড়াই থেকে ৩শ’ জনকে আসামি করা হয়। নবাবগঞ্জ থানা মামলা নং ৩, তারিখ ০২/০৯/২৪।
অপরদিকে, গত ৩০ জুলাই উপজেলা সদরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলায় আহত কলাকোপা খন্দকারহাটি গ্রামের এসএম আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ২১ আগষ্ট সালমান এফ রহমানকে প্রধান আসামী করে ২৩৩ জনের নামসহ ৩-৪শ’ অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। নবাবগঞ্জ থানা মামলা নম্বর ১৭, তারিখ ২১/০৯/২৪।
নবাবগঞ্জ থানা ওসি মমিনুল ইসলাম জানান, নবাবগঞ্জ থানার ২টি মামলার প্রধান আসামী সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার দেখাতে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ গত ২২ সেপ্টেম্বর আদালতে আবেদন করেছেন।
অন্যদিকে, এ তিনটি মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নবাবগঞ্জ থানার দুটি মামলায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর নবাবগঞ্জে আগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিরিন চৌধুরী স্বামীসহ অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার সময় বিমানবন্দর পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
এছাড়াও, গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে দোহার থানার মামলায় বাবুল নামে অপর এক আসামীকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। পরের দিন আদালতে হাজির করা হলে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
এসব মামলায় আরও আসামী হয়েছেন, সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার হারুন অর রশিদ, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুন, দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন,
দোহার পৌর মেয়র আলমাছ উদ্দিন, নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ ঝিলু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সহ দুই উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।