মামার বিয়েতে অংশ নিতে আমেরিকা থেকে দেশে এসে নিহত শিশু আরজু আক্তার আরিয়ার (৮) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকাল দুইটার দিকে নিজ গ্রাম উপজেলার মেখল ইউনিয়নস্থ ১নং ওয়ার্ডের রহিমপুর গ্রামের “রহিমপুর জামে মসজিদ” মাঠে জানাযা নামাজ শেষে তাকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহত শিশু আরিয়া উল্লেখিত এলাকার আমেরিকা প্রবাসী আইয়ুবের কন্যা।
নিহতের নিকট আত্নীয় পৌরসদর বাস স্টেশনস্থ ক্যাফে হামিদা হোটেল এবং ইজি ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস এর পরিচালক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার প্রবাসী জয়নাল আবেদীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত রবিবার বিকালের দিকে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের লাল মিয়া হাজী বাড়ির নানার বাড়িতে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশু আরিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিশু আরিয়া মায়ের সাথে তার আপন মামার বিয়েতে যোগ দিতে আমেরিকা থেকে গত ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার দেশের বাড়িতে আসে এবং ১২ আগস্ট তার মামা নেওয়াজের গায়ে হলুদ ও ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের সম্পন্ন হওয়ার মাত্র ৫ দিনের মাথায় পৌরসভার ৩নং ওয়াডস্থ নানার বাড়ি লাল মিয়া হাজীর বাড়িতে ঘটনারদিন রবিবার দুপুরের দিকে সবার অগোচরে বাড়ির পাশের পুকুরে পানিতে ডুবে তলিয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ শিশু আরিয়ার কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে এখানে সেখানে খোঁজাখোঁজি শুরু করলে পরে আশে পাশের লোকজন পুকুরে নেমে করার তল্লাশি করতে থাকে। এক পর্যায়ে পুকুর ঘাটের পাশে ডুবন্ত অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধার করে পৌরসভার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এদিকে শিশু আরিয়ার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এসময় নিহত শিশুর মা সহ স্বজনদের আহাজারিতে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মেয়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পেয়ে আমেরিকা থেকে দেশের বাড়িতে শেষ বারের মত মেয়ের মুখ দেখতে ছুটে আসে নিহতের বাবা আইয়ুব।
নিহতের বাবা আমেরিকা প্রবাসী আইয়ুবের বন্ধু নাছিরউদ্দিন মঙ্গলবার রাতে জানান, আইয়ুবের দুই কন্যা সন্তানের মধ্যে আরিয়া ছিলো ছোট। জন্ম থেকে সে প্রতিবন্ধী ছিলো। তবে কিছুদিন পূর্বে আইয়ুব জানিয়েছিলো অনেক চিকিৎসার পর তার ছোট মেয়ে আরিয়া এখন অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলো। গতকাল রাতে সে পুকুরের পানিতে ডুবে মারা গেছে শুনে আমি হতবাক হই।
নিহতের বাবা আইয়ুবের বন্ধু প্রবাসী তওহিদুল আলম রুমি আমেরিকা থেকে মুঠোফোনে জানান, নিহত শিশু আরিয়ার বাবা আমার বন্ধু আইয়ুব গত কয়েকমাস পূর্বে ছুটি কাটিয়ে পুনরায় কর্মস্থল আমেরিকা আসে। তার আদরের কন্যা শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়ে সে শেষ বারের মতো মেয়ের মুখ দেখতে দেশে ছুটে গেছে। দোয়া করি আল্লাহ তাকে এ শোক সইবার শক্তি দিন,আমিন।