দুই কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের প্রথম ক্যাবল কারের জন্য আকর্ষণীয় ছিল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শেখ রাসেল এভিয়ারী এন্ড ইকো পার্ক। সবুজ বনাঞ্চলের উপর দিয়ে ক্যাবল কারে চড়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে এই পার্কে ভীড় করতো দেশ- বিদেশের পর্যটকরা। ২০১১ সালে দক্ষিণ চট্টগ্রাম বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া কোদালা রেঞ্জের অধীনে ৫২০ একর বনভূমি নিয়ে বিনোদনপ্রেমীদের জন্য এই পার্ক স্থাপিত হয়েছে। তবে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে ক্যাবলকার। আসন্ন ঈদে চালু করার কথা থাকলেও কাজ শেষ না হওয়ায় চালু হচ্ছে না ক্যাবলকার। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাবে, পাশাপাশি বিনোদনপ্রেমীরা বিনোদন থেকে বঞ্চিত হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পার্কের মূল ফটক পেরিয়ে ভেতরে যেতেই চোখে পড়ার মতো ফুল গাছগুলো তেমন একটা নেই। কৃত্রিমভাবে করা লেকটির পানি সংস্কারের কাজ চলছে। ইট বিছানো রাস্তাগুলোতে জমেছে শেওলা। পাখির খাঁচাগুলো ভেঙ্গে জরাজীর্ণ অবস্থা হয়েছে। খাঁচা থাকলেও পাখিশূন্য ছিল অনেক খাঁচা। খালি পড়ে থাকা ক্যাবলকার সংস্কারে কাজ করছে বিদেশী একটা কোম্পানি। এছাড়া অযত্ন অবহেলায় পার্কজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা আবর্জনা।
স্থানীয়রা জানান, পার্কটি মূলত ক্যাবলকার ও পক্ষীশালা হিসেবে সমাদৃত ছিল। কিন্তু নানা অব্যবস্থাপনার কবলে পার্কের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে পার্কটি। একমাত্র যুগল প্রেমিক-প্রেমিকাতেই পার্কটি সচল রয়েছে। এবার ঈদে ক্যাবল কার খুলার কথা থাকলেও খুলতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।
পার্কে ঘুরতে আসা মো. সেলিম আকন্দ নামে একজন জানান, গ্রামে এসে বাচ্চাদের নিয়ে ক্যাবলকার দেখার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু ক্যাবলকার বন্ধ, ঈদেও নাকি বন্ধ থাকবে। তাহলে পাহাড় আর গাছ দেখার জন্য কে আসবে? হতাশ হয়ে তিনি ফিরে যান।
পার্ক সংশ্লিষ্টরা জানান, মে মাসের শেষের দিকে ক্যাবলকার চালু হতে পারে। তবে ক্যাবলকার বন্ধ থাকলেও বিনোদনপ্রেমীরা নয়নাভিরাম বিভিন্ন ইভেন্ট উপভোগ করতে পারবেন। ঈদ উপলক্ষে বৃক্ষাচ্ছাদিত সবুজ বাগান আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো হয়েছে।
পার্কের সদ্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান জানান, ক্যাবলকার নবরুপে চালুর জন্য ভারত থেকে আসা ইঞ্জিনিয়ারেরা বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া নতুন করে আরো এক কিলোমিটার রোপওয়ে বৃদ্ধি করার কাজ চলমান রয়েছে। পার্কটিকে পরিপূর্ণ করতে দ্বিতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নত বিশ্বের আদলে পার্কটিকে রুপান্তর করা হবে।