চট্টগ্রাম 5:41 pm, Friday, 13 September 2024

গুলিয়াখালীতে নিখোঁজ মেহেদী হাসানের লাশ ১৯ ঘন্টা পর উদ্ধার

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে মেহেদী হাসান (১৭) নামে এক কিশোর পর্যটক নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর তার লাশ খালের ভিতর আটকে পড়া অবস্হায় আজ সকালে পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে স্থানীয় বোটচালক ও জেলেরা সৈকত সংলগ্ন খালের পশ্চিমে মাটির সাথে আটকাপড়া অবস্থায় দেখতে পায় নিখোঁজ ছাত্রের মৃতদেহ। সাথে সাথে স্থানীয় মুরাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাহার ও পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়। লাশটি উদ্ধার করে তারা খালের পাড়ে রাখে।

নিখোঁজ মেহেদী হাসান কুমিল্লার বরুরা থানার আগানগর গ্রামের ওমর ফারুক ও মা রুবিনা আক্তারের ছেলে এবং স্থানীয় মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

স্থানীয় চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাহার প্রতিনিধি কে জানায়, গতকাল বুধবার ১৪ জনের একটি দল কুমিল্লা থেকে সীতাকুণ্ড গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসে। দুপুরে তারা বীচে গিয়ে গোসল করতে সমুদ্রে নামে । এ সময় সমুদ্র উত্তাল থাকায় ঢেউয়ে মেহেদী হাসান পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা বাকি সদস্য এবং স্থানীয়রা মিলে তাকে উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। অন্যরা সাঁতার জানলেও মেহেদী সাঁতার জানতো না।

পরে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস কে খবর দেয়া হলে ফায়ার সার্ভিস ও স্হানীয় লোকজন উদ্ধার কাজ শুরু করেছিল।

এ সময় চট্টগ্রাম থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দলও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। সাগরে বৈরী আবহাওয়া ও ভরা জোয়ারের কারণে তখন উদ্ধার করা যায়নি।

পাশাপাশি বিষয়টি আগ্রবাদ ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হলে একটি ডুবুরি দলও উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছিল। সবাই চলে গেলেও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস টিমটিমে রাতভর চেষ্টা চালায়।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ,শাহদাৎ হোসেন ও দীর্ঘ সময় উদ্ধারকারীদের সাথে ছিলেন।

এদিকে ছেলের নিখোঁজের খবর শুনে কুমিল্লার বরুরা থেকে মা-বাবা ও নিকট আত্মীয়-স্বজনরা ছুটে আসেন। তাদের কান্নায় তখন গুলিয়াখালী সীবিচ এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ছেলের খোঁজ না পেয়ে তারা রাতে সীতাকুণ্ড একটি আবাসিক হোটেল গ্রীণ ভিউতে অবস্থান নেয়। হোটেল মালিক নাসিমুল করিম শামিম তাদের কে বিনে ভাড়ায় থাকা খাওয়ার ব্যবস্হা করেন।

সকালে মেহেদী হাসানের লাশ উদ্ধারের পর প্রশাসনিক কাজ সম্পন্ন শেষে মা,বাবা, আত্মীয় স্বজন এ্যাম্বুল্যান্সে করে কুমিল্লা রওয়ানা দেন।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ,শাহদাত হোসেন জানায়,মেহেদী হাসান নিখোঁজের সময় সাগর উত্তাল ছিল তাই অনেক খুঁজেও পাওয়া যায়নি, আজ সকালে উদ্ধারের পর তার মা বাবার কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়, জোয়ারের সময় সাগরে না নামার জন্যও সকল পর্যটকদের কে আহব্বান জানান এবং সাগর পাড়ে সাইনবোর্ড দেয়ার কথাও জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

‘চেয়ার দখল করে বসে থাকার জন্য ক্ষমতায় আসেনি’ হাটহাজারী মাদ্রাসায় উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ

গুলিয়াখালীতে নিখোঁজ মেহেদী হাসানের লাশ ১৯ ঘন্টা পর উদ্ধার

Update Time : 02:25:43 pm, Thursday, 6 July 2023

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে মেহেদী হাসান (১৭) নামে এক কিশোর পর্যটক নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর তার লাশ খালের ভিতর আটকে পড়া অবস্হায় আজ সকালে পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে স্থানীয় বোটচালক ও জেলেরা সৈকত সংলগ্ন খালের পশ্চিমে মাটির সাথে আটকাপড়া অবস্থায় দেখতে পায় নিখোঁজ ছাত্রের মৃতদেহ। সাথে সাথে স্থানীয় মুরাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাহার ও পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়। লাশটি উদ্ধার করে তারা খালের পাড়ে রাখে।

নিখোঁজ মেহেদী হাসান কুমিল্লার বরুরা থানার আগানগর গ্রামের ওমর ফারুক ও মা রুবিনা আক্তারের ছেলে এবং স্থানীয় মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

স্থানীয় চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাহার প্রতিনিধি কে জানায়, গতকাল বুধবার ১৪ জনের একটি দল কুমিল্লা থেকে সীতাকুণ্ড গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসে। দুপুরে তারা বীচে গিয়ে গোসল করতে সমুদ্রে নামে । এ সময় সমুদ্র উত্তাল থাকায় ঢেউয়ে মেহেদী হাসান পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা বাকি সদস্য এবং স্থানীয়রা মিলে তাকে উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। অন্যরা সাঁতার জানলেও মেহেদী সাঁতার জানতো না।

পরে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস কে খবর দেয়া হলে ফায়ার সার্ভিস ও স্হানীয় লোকজন উদ্ধার কাজ শুরু করেছিল।

এ সময় চট্টগ্রাম থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দলও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। সাগরে বৈরী আবহাওয়া ও ভরা জোয়ারের কারণে তখন উদ্ধার করা যায়নি।

পাশাপাশি বিষয়টি আগ্রবাদ ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হলে একটি ডুবুরি দলও উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছিল। সবাই চলে গেলেও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস টিমটিমে রাতভর চেষ্টা চালায়।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ,শাহদাৎ হোসেন ও দীর্ঘ সময় উদ্ধারকারীদের সাথে ছিলেন।

এদিকে ছেলের নিখোঁজের খবর শুনে কুমিল্লার বরুরা থেকে মা-বাবা ও নিকট আত্মীয়-স্বজনরা ছুটে আসেন। তাদের কান্নায় তখন গুলিয়াখালী সীবিচ এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ছেলের খোঁজ না পেয়ে তারা রাতে সীতাকুণ্ড একটি আবাসিক হোটেল গ্রীণ ভিউতে অবস্থান নেয়। হোটেল মালিক নাসিমুল করিম শামিম তাদের কে বিনে ভাড়ায় থাকা খাওয়ার ব্যবস্হা করেন।

সকালে মেহেদী হাসানের লাশ উদ্ধারের পর প্রশাসনিক কাজ সম্পন্ন শেষে মা,বাবা, আত্মীয় স্বজন এ্যাম্বুল্যান্সে করে কুমিল্লা রওয়ানা দেন।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ,শাহদাত হোসেন জানায়,মেহেদী হাসান নিখোঁজের সময় সাগর উত্তাল ছিল তাই অনেক খুঁজেও পাওয়া যায়নি, আজ সকালে উদ্ধারের পর তার মা বাবার কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়, জোয়ারের সময় সাগরে না নামার জন্যও সকল পর্যটকদের কে আহব্বান জানান এবং সাগর পাড়ে সাইনবোর্ড দেয়ার কথাও জানান।