চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিনামূল্যে চলছে চক্ষু চিকিৎসা সেবা। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দৌড় গোড়ায় বিনামূল্যে সমন্বিত উন্নত চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে অত্র উপজেলার ৭নং কাঠাছরা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে আমান উদ্দিন ভূঁইয়া বাড়ীতে চালু হয়েছে উত্তর চট্টগ্রামের স্বনামধন্য চক্ষু হাসপাতাল এন্ড ফ্যাকো সেন্টার”র অধিনে পরিচালিত জালালাবাদ প্রাথমিক চক্ষু সেবা কেন্দ্র।
এটি অত্র এলাকার সুযোগ্য সন্তান মো: নুরুল ইসলাম ভুঁইয়ার সম্পূর্ন ব্যক্তিগত উদ্যোগে গঠিত ও পরিচালিত। উত্তর চট্টগ্রামের সুপ্রতিষ্ঠিত জালালাবাদ কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতাল এন্ড ফ্যাকো সেন্টার এর প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও লো-ভিশন বিশেষজ্ঞ।
উক্ত প্রতিষ্ঠানটি চালু হওয়াতে এই অঞ্চলের চক্ষু সমস্যাজনিত রোগীর চিকিৎসা সেবা পাওয়ার দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরন হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করা হয়েছে এবং প্রথম দিনেই প্রায় ২০০ জন রোগীকে চোখের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে
এর মধ্যে ২৩ ফেব্রুয়ারী প্রায় ৫৫ জন, ১ মার্চ প্রায় ৮০ জন এবং ৮ মার্চ ৬৫ জন রোগীকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও পরামর্শ ও স্বল্প মূল্যে ঔষধ ও চশমা বিতরণ করা হয়। ইতোমধ্যে চিকিৎসা দেয়া রোগীদের মধ্য থেকে প্রায় ১২ জন রোগীকে অর্ধমূল্যে এবং বিনামূল্যে SICS /PHACO অপারেশন করা হয়।
এই প্রতিষ্ঠানে শুধু মাত্র শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১ টা পযন্ত চিকিৎসা দেয়া হয়।প্রতি শুক্রবার রোগীরা চিকিৎসা নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকে।
তারা আরো জানান, জালালাবাদ প্রাথমিক চক্ষু সেবা কেন্দ্রে রোগীদের প্রাথমিক চক্ষু সেবা সহ সমন্বিত উন্নত চক্ষু সেবা প্রদান করা হয়। এছাড়াও চোখের ছানি,গ্লুকোমা, ডায়াবেটিক, রেটিনোপ্যাথি। শিশু রোগ সনাক্ত করন এবং টেলি কনসালট্যান্ট মাধ্যমে বেইজ সেন্টারে কর্মরত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও অপারেশন করা হয়।
চক্ষু চিকিৎসা নেওয়া কাটাছরা গ্রামের অলি আহমদ (৭০) বলেন,জালালাবাদ প্রাথমিক চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রর ও অপারেশন করে আমি আনন্দিত।এর আগে আমাদের এখানে এমন সুবিধা ছিল না।উক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রটি স্থাপিত হওয়ায় এলাকাবাসি উপকৃত হয়েছে।
দৃর্গাপুর ইউনিয়নের পাল গ্রামের গিয়াসউদ্দিন (৬৫)বলেন,আগে প্রাথমিক চক্ষু চিকিৎসা নির্ণয়ের জন্য চট্টগ্রাম জেলা সদরে যেতে হতো।এখন হাতের নাগালেই চিকিৎসা সেবা পাচ্ছি।
বারিয়ার হাট বাজারে সওদাগর দেলোয়ার হোসেন বলেন, উক্ত প্রতিষ্ঠানে চক্ষু চিকিৎসা ও ফ্যাকো অপারেশন করে আমি আনন্দিত।আমরা এখন বাড়ির কাছে কম সময়ে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা ও সুলভ মূল্যে ঔষধ ও চশমা পাচ্ছি যা প্রশংসার দাবি রাখে।
এই চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা দিয়ে বেজ হাসপাতালের একদল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও প্রশিক্ষিত প্যারামেডিক, বি অপট্রম,নার্স এবং ল্যাব সহকারী। এখানকার অপারেশন এডভাইস করা রোগীদের অপারেশন করেন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ( NIO) প্রখ্যাত ফ্যাকো সার্জন ডাঃ এস. এম. ফাহাদ। ভিট্রিও রেটিনা সার্জন ডাঃ নওশিন আফরোজ রাচি ও অকুলোপ্লাস্টিক সার্জন ডাঃ শেখ মোঃ রাশেদ।
কাঠাছরা গ্রামের দিল আফরোজ বলেন এই চিকিৎসা কেন্দ্র আমাদের উন্নত সেবা দিচ্ছে। মাচ্ছাপুকুর এলাকার নাসিমা আক্তার বলেন চোখের সমস্যা দীর্ঘদিনের।এক সাপ্তাহ ওষধ ব্যবহার করে ভালো লাগছে। দূর্গাপুর বাজারের ব্যবসায়ি জসিম উদ্দিন বলেন চক্ষু চিকিৎসা এখানে সহজলভ্য। সওরভূঁইয়ার হাট এলাকার সাহাব মিয়া বলেন আমাদের মতো গরিবদের জন্য উক্ত চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রটি খুবই উপকারী। ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ হোসেন খোকন বলেন আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এখন অতি সহজে চোখের চিকিৎসা করতে পারছি।আমি নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
৮নং দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান বিপ্লব ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জনাব এমরান হোসেন সোহেল উক্ত সেবা কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন এবং সে উক্ত কার্যক্রম দেখে উৎসাহিত হন ও প্রতিষ্ঠানের মঙ্গল কামনা করেন।
জালালাবাদ প্রাথমিক চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন,আমার বাবা-মায়ের নামে চক্ষু চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রটি অনির্দিষ্টকাল ব্যাপি চলবে।এলাকার মানুষদের জন্য কিছু করতে পারাটা পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। তিনি আরো বলেন আমি এলাকার মানুষদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং পাশে থাকার অনুরোধ করছি।