অবশেষে মায়ের ভরণ-পোষণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা পেলেন সেই কথিত স্বেচ্ছাসেবক ফয়জুল করিম ও তার স্ত্রী জিন্না সুলতানা। সে সীতাকুণ্ড উপজেলার ২নং বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের পূর্ব লালানগর এলাকার মৃত শাহাজাহান ও আনোয়ারা বেগম এর পুত্র।
গত মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় এসআই মহিউদ্দিন নাছিরউল্লাহ রুবেল (আইয়ু) এর অফিস কক্ষে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে মায়ের ভরণ-পোষণের জন্য প্রতিমাসে ফয়জুল করিমকে তিন হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে এসআই মহিউদ্দিন নাছির উল্লাহ রুবেল মুঠোফোনে বলেন, বাবার মৃত্যুর পর প্রতিটি মা সন্তান থেকে আশা করেন, তাই আমাদের উচিৎ বাবার মৃত্যুর পর মায়ের বিশেষ যত্ন নেওয়া। তাই সবদিক বিবেচনা করে অভিযুক্ত ফয়জুল করিমসহ তিন ভাই প্রতিমাসে মায়ের ভরণ-পোষণ ও চিকিৎসা বাবদ তিন হাজার করে নয় হাজার টাকা প্রতি মাসে মায়ের হাতে দেবেন এই সীদ্ধান্তের উপর উভয় পক্ষের সম্মাতিতে অভিযোগের নিস্পত্তি হয়।
ছোট ভাই নুরুল আলম ফিরোজ মুঠোফোনে বলেন, ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তার শঙ্কায় আমার মা মামার বাড়ীতে চলে যান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থানায় বৈঠকে আসার আগে ফয়জুল করিম ও তার সংগঠন সীতাকুণ্ড ব্লাড ডোনেট গ্রুপের ২/৪ জন সদস্য মামার বাড়ীতে আসেন। ওই সময় ফয়জুল করিম মায়ের কাছে ক্ষমা চান এবং তিনি যদি ক্ষমা না করেন ফয়জুল করিমকে থানায় গেলে গ্রেফতার করবে এমন ভয় দেখান। মা ভয় পেয়ে যান এবং থানায় গিয়ে বলেন, আমাকে মারার সময় মায়ের গায়ে আঘাত লেগে রক্তক্ষরণ হয়। এক প্রশ্নে জবাবে ফিরোজ বলেন, সীতাকুণ্ড ব্লাড ডোনেট গ্রুপের এডভোকেট আজম ভাই ফয়জুলের সাথে ওই সময় মামার বাড়িতে এসেছিলো।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ফয়জুল করিম ও তার স্ত্রীর পূর্বপরিকল্পনায় ছোট ছেলে ফিরোজের বসত ঘরের ঘিরা ভেঙ্গে ফেলার সময় মা বাধা দিতে গেলে ছেলের বউ জিন্না সুলতানা শ্বাশুড়ীর চুলের ঝুটি ধরে মাটিতে ফেলে দেয়, এবং ছেলে ফয়জুল করিম লাঠি দিয়ে শরীরে আঘাত করে নিলাফুলা জখমসহ মুখে রক্তাক্ত জখম করে মা আনোয়ারা ও ভাই ফিরোজের। এমন অভিযোগ এনে মা বাদি হয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় ওই দিনই ফয়জুল করিম ও তার স্ত্রী জিন্না সুলতানার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এবং অভিযোগে উল্লেখ করেন, সীতাকুণ্ড উপজেলার ২নং বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের পূর্ব লালানগর এলাকার মৃত শাহাজাহান এর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে স্বামী শাহাজাহান মারা যান। বেশ সুখেই কাটছিলো তাদের সংসার। কিন্তু মেজ ছেলে ফয়জুল করিম এর বিয়ের পর ঘটে যত বিপত্তি। ফয়জুল করিমের স্ত্রী জিন্না সুলতানার উস্কানিতে গত ৮বছর যাবত মায়ের কোন ভরন পোষণ দেননা এবং চাইতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মানষিক ভাবে নির্যাতন করে আসতেছে ছেলে ও ছেলের বউ। এবং ঔষধের টাকা চাইলে মাকে মরে যেতে বলে ছেলে ফয়জুল করিম। সাথে ছেলের বউ জিন্না সুলতানাও ছোটখাটো বিষয় নিয়ে এমন সব ভাষা ব্যবহার করে যা অকল্পনিয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন শ্বাশুড়ী আনোয়ার বেগম। অভিযোগে আরও আরও উল্লেখ করেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় ফয়জুল করিম ও তার স্ত্রীর পূর্বপরিকল্পনায় ছোট ছেলে ফিরোজের বসত ঘরের ঘিরা ভেঙ্গে ফেলার সময় মা বাধা দিতে গেলে ছেলের বউ জিন্না সুলতানা শ্বাশুড়ীর চুলের ঝুটি ধরে মাটিতে ফেলে দেয়, এবং ছেলে ফয়জুল করিম লাঠি দিয়ে শরীরে আঘাত করে নিলাফুলা জখমসহ মুখে রক্তাক্ত জখম করে মা আনোয়ারার। এসময় ছোট ছেলে বাঁচাতে আসলে তাকেও মারধর করে। অবশেষে প্রাণে বাঁচতে দৌড়ে পালিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা নেন তারা।