চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীতে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় চতুর্থ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘর ঈদের উপহার পােয়েছেন ১৫২টি দরিদ্র ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। হাটহাজারী পৌরসভা ও উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন এবং ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের মাহমুদাবাদ এলাকায় এসব ঘর দেওয়া হয়। বুধবার (২২ মার্চ) গণভবন থেকে সারাদেশের ন্যায় হাটহাজারীতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যদের এ উপহার হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. শাহিদুল আলম এর সভাপতিত্বে উক্ত উপহার হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রায়হান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আলম বাসেক, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল আলম, ওসি মুহাম্মদ রুহুল আমিন সবুজ, হাটহাজারী প্রেস ক্লাব সভাপতি কেশব কুমার বড়ুয়া, ইউপি চেয়ারম্যান সরওয়ার মোর্শেদ তালুকদার, শওকতুল আলম, জয়নুল আবেদীন, হারুণর রশিদ, আবুল মনছুর, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী এবং নুরুল আহসান লাভু প্রমুখ।
হাটহাজারীতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমিসহ ঘর পেয়ে মহা খুশী উপজেলার দক্ষিন পূর্ব মেখল ইউনিয়নের স্বামী পরিত্যক্তা ঝুপড়ি ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে বাস করা মিনু গুপ্তা, একই ইউনিয়নের মোজাফফরপুর গ্রামের বিধবা দিলুয়ারা বেগম, বিধবা গীতা রায়, স্বামী পরিত্যক্তা খাতিজা বেগমসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া সকলই।৩৯৪ বর্গফুটের ২কক্ষ বিশিষ্ট পাকা গৃহে ১টি টয়লেট, ১টি রান্নার কক্ষ ও ইউটিলিটি স্পেস পেয়ে এখন আনন্দে আত্মহারা তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র উপহারের জমি, ঘর পাওয়ায় কৃতজ্ঞতার যেন শেষ নেই তাদের।
সূত্রে জানা যায়, ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনে গৃহীত প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্প এ উপজেলায় হতদরিদ্র মানুষের মাঝে বেঁেচ থাকার অনুপ্রেরনা এখন। ’আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের এ শ্লোগান দেশের দরিদ্র মানুষের মাঝে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন ভাবে মাথা উচুঁ করে দাড়াতে শিখিয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মুজিববর্ষে গৃহীত ’দেশের একটি দরিদ্র মানুষও ভূমিহীন, গৃহহীন থাকবেনা’ পরিকল্পনার শতভাগ সফলতা, এমনটাই বলছেন সাধারন মানুষ। এবার এ উপজেলায় ১৫২ টি ঘরের মধ্যে ফরহাদাবাদে ১৫ টি, ধলইয়ে ১১টি, লাঙ্গলমোড়ায় ১৩টি, মির্জাপুরে ১৬ টি, ছিপাতলীতে ১০টি, মেখলে ১০টি, গড়দুয়ারায় ২১টি, উত্তর মাদার্শাতে ১৫টি, ফতেপুরে ১২টি, চিকনদন্ডীতে ০৮টি, দক্ষিন মাদার্শায় ০৬টি, শিকারপুরে ০৯টি, বুড়িশ্চরে ০৫টি, পৌরসভায় ০১ টি সহ মোট ১৫২ টি ঘর দেয়া হয়েছে।
উপজেলার মেখল ইউনিয়নের সুবিধাভোগী স্বামী পরিত্যক্তা মিনু গুপ্তা এ প্রতিনিধিকে বলেন, এতোদিন পরিবার নিয়ে ঝুপড়ি ঘরে রোদ বৃষ্টিতে ভিজে বাস করছিলাম। কখনও ভাবিনি আমার নিজের একটা ঘর হবে। আজ প্রধানমন্ত্রীর আমাকে ঘর উপহার দিয়েছেন, আমার কেমন লাগছে তা আমি প্রকাশ করতে পারছিনা। আনন্দে আমার চোঁখে পানি এসে গেছে।সুবিধাভোগী বিধবা দিলোয়ারা বেগম তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, “সারা জীবন এক টুকরা জমি ও তার উপর একটি ঘর বানানোর স্বপ্ন দেখছিলাম। আজ আমার শেষ বয়সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার সে স্বপ্ন পূরন করে দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে হাটহাজারীতে ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ে মোট ১০৯ জন ভূমিহীন, আশ্রয়হীন, হতদরিদ্র পরিবার ২ শতাংশ জমি সহ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দ পেয়েছিলেন।