চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার লালানগর ইউনিয়নে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আপত্তিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। দুই বিদ্যালয় কতৃপক্ষের রয়েছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার (১৫ মে) বিকেলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী। বৈঠকে দুই প্রতিষ্ঠানের এওয়াজ দলিলের প্রাথমিক সিদ্ধান্তে এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে।
জানা যায়, হোছনাবাদ লালানগর উচ্চ বিদ্যালয় ও লালানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় দুইটি প্রতিষ্ঠানই একই ইউনিয়নের ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডে হলেও দুটির অবস্থান পাশাপাশি। কাজ বন্ধ থাকা দুই বিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী স্থানটিতে ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিন শিটের হল রুম। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হলেও এটি শ্রেণী কক্ষ হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করতো উচ্চ বিদ্যলয়টি। জানুয়ারিতে উচ্চ বিদ্যালয়টিতে অনুমোদিত নতুন ভবনের করার জন্য টিন শেডটি ভেঙে ফেলা হয়। পরে প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসে বাঁধা দেয়। এবং এই জাগয়া তাদের বলে দাবী করেন। পরে বিষয়টি উভয় কতৃপক্ষ পাল্টাপাল্টি ইউএনও বরাবর অভিযোগ করে। ইউএনও এসি ল্যান্ডের মাধ্যমে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে দুই স্কুলের সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর পরিমাপে বিরোধ চলে আসা জায়গাটি লালানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বলে জানা যায়। এতেই বন্ধ হয়ে যায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কাজ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবন নির্মাণের জায়গায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলার উপকরণ স্থাপন করা হয়েছে। এদিকে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য আনা মাঠে পড়ে থাকা লোহা জং ধরার অবস্থা হয়েছে। মাঠে দুই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করছেন ইউএনও। বৈঠকে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের চার শতক জাগয়া এওয়াজ দলিলের সিদ্ধান্ত হয়। এতে দুই কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তির রেখা দেখা যায়।
প্রাইমারি স্কুলের সভাপতি হারুন অর রশীদ জানান, আমরাও চাই বিদ্যালয়টি হোক। ইউএনও মহোদয় যেভাবে সিদ্ধান্ত দেন সেভাবে রাজি আছি।
মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সিরাজুল করিম বিপ্লব জানান, বিদ্যালয়টিতে ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমোদন আসে। পরে মাটি পরীক্ষায় সমস্যা থাকায় আরো ৮৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত জানুয়ারির দিকে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করতে গেলে প্রাথমিক বিদ্যালয় বাধা প্রদান করেন। তবে ইউএনও মহোদয় বৈঠকে এওয়াজ দলিলের যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তার জন্য ১০ দিনের সময় নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যলয়ে ৪০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের বসার কক্ষ নিয়ে বর্তমানে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আশা করি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, দুই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জানা গেছে, মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেভাবে ভবন নির্মাণ করতে চাচ্ছে সেখানে প্রাইমারি স্কুলের ৪ শতকের মতো জাগয়া রয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় যদি সেখানে ভবন নির্মাণ করে সেক্ষেত্রে একই পরিমাণ জায়গা তারা প্রাইমারি স্কুল বরাবর বিনিময় দলিল করবেন। তারা এ বিষয়ে ১০ দিনের সময় নিয়েছেন।