চট্টগ্রাম 8:04 pm, Wednesday, 9 October 2024

বন্ধুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বন্ধুকে দাওয়াত দিয়ে এনে অপহরণ করে নগদ আঠারো হাজার টাকা, বিকাশে দশহাজার টাকা ও তাদের সাথে থাকা ২ টি মোবাইল ফোন সর্বসাকুল্যে প্রায় ৬০.০০০ / ষাট হাজার হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন গোলাম আজম সাগর ও ফরহাদ মিয়া। তাদের উভয়ের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বৈদ্যনাথ গ্রামে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বুধবার রাতে মিরসরাই উপজেলার ১ নং করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগরের দক্ষিণ নলখো (দ্বীপের টিলার পূর্ব পাশে) একটি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ২জনকে মারধর করে। রাত ২ টা নাগাদ ঐ গ্রামের হোসেন মাঝি বাড়ির নওশা মিয়ার ছেলে রাসেল একজনকে উদ্ধার করে বটতল বাজারে নিয়ে আসে। অপরজন ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যায়। পরে জঙ্গল থেকে রাস্তা খুঁজে বের হয়ে বটতল বাজারে আসে। স্থানীয় লোকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জামাল উদ্দিন মেম্বার এর শরণাপন্ন হন তাদের নিয়ে। পরেরদিন বৃহস্পতিবার সকালে ফরেস্ট অফিস বাজারে স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধি অপহরণের বক্তব্য শুনে অভিযুক্তদের পরিবারকে ডেকে আনেন। সবার উপস্থিতিতে অভিযোগের বিষয়ে স্বীকার করে তারা পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করেন। অভিযুক্ত রাজু ও আমিনুল পলাতক রয়েছে।

গোলাম আজম সাগর বলেন, আমি বর্তমানে মদনপুর গাউছিয়া ইপিজেডে চাকরি করি। গত ৭-৮ মাস আগে ঢাকায় কাজের সুবাদে রাজু নামের ঐ ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব হয়। ৪ মাস আগে আমার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতেও যায়। কয়েকদিন একসাথে থেকেও আসছে। গত কয়েকদিন আগে সে আমাকে ফোন দিয়ে তার এলাকায় আসার জন্য বলে। গতকাল আমি আমার বেতন তুলে বাড়িতে না গিয়ে আমার গ্রামের ফরহাদকে নিয়ে বেড়াতে আসি। দুপুরে বারইয়ারহাট নেমে তাকে কল দিই। সে তার জন্য সহ বিরানী নিয়ে সিএনজি করে একটা ঠিকানা দিলে আমরা সেখানে যাই। একসাথে খাওয়া দাওয়া ও করি। সন্ধ্যা হয়ে আসলে আমাদের পাহাড়ের উপরে একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে আরো কয়েকজন সহ আমাদের কাছে থাকা টাকা পয়সা সব নিয়ে যায় এবং বাড়িতে ফোন করে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বাড়িতে ফোন করলে আমার মা ভয়ে ০১৮৩৪৫২০৮১৭ নাম্বারে দশহাজার টাকা বিকাশ করে। পরে রাতে আমাদের কয়েকজন উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজু করেরহাট ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড গেড়ামারার বাঘাইয়া খোঁ’র শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। তার শ্বশুরের নাম মোঃ ইলিয়াছ। একই গ্রামের মোঃ হারেছের ছেলে আমিনুল হক প্রকাশ গুঁয়াইয়া দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা করে আসছে। এর আগেও এরকম আরো অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।

অভিযুক্ত রাজুর শ্বশুর জানান, আমাকে গতকাল রাতে মেম্বার ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। এরপর রাজুকে কল দিই সে কাজে আছে বলে জানায়। এরপর থেকে ফোন বন্ধ করে দিয়েছে। আমি‌ আর তাকে বাড়িতে জায়গা দিবনা।

ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, এটা অত্যন্ত নেক্কারজনক ঘটনা। আমি তাদেরকে থানায় মামলা করতে বলি। তারা ভয়ে থানায় যেতে বা মামলা করতে রাজি হচ্ছে না। এর আগেও অভিযুক্তদের কয়েকবার পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। কিভাবে বের হয়ে এসে আবারো নানান অপকর্মে জড়িয়ে এলাকাকে নষ্ট করে ফেলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙ্গুনিয়ায় ১৬২টি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন সেনাবাহিনীর, নাশকতার চেষ্টা কঠোর হাতে দমনের ঘোষণা

বন্ধুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়

Update Time : 05:16:39 pm, Thursday, 26 October 2023

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বন্ধুকে দাওয়াত দিয়ে এনে অপহরণ করে নগদ আঠারো হাজার টাকা, বিকাশে দশহাজার টাকা ও তাদের সাথে থাকা ২ টি মোবাইল ফোন সর্বসাকুল্যে প্রায় ৬০.০০০ / ষাট হাজার হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন গোলাম আজম সাগর ও ফরহাদ মিয়া। তাদের উভয়ের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বৈদ্যনাথ গ্রামে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বুধবার রাতে মিরসরাই উপজেলার ১ নং করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগরের দক্ষিণ নলখো (দ্বীপের টিলার পূর্ব পাশে) একটি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ২জনকে মারধর করে। রাত ২ টা নাগাদ ঐ গ্রামের হোসেন মাঝি বাড়ির নওশা মিয়ার ছেলে রাসেল একজনকে উদ্ধার করে বটতল বাজারে নিয়ে আসে। অপরজন ভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যায়। পরে জঙ্গল থেকে রাস্তা খুঁজে বের হয়ে বটতল বাজারে আসে। স্থানীয় লোকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জামাল উদ্দিন মেম্বার এর শরণাপন্ন হন তাদের নিয়ে। পরেরদিন বৃহস্পতিবার সকালে ফরেস্ট অফিস বাজারে স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধি অপহরণের বক্তব্য শুনে অভিযুক্তদের পরিবারকে ডেকে আনেন। সবার উপস্থিতিতে অভিযোগের বিষয়ে স্বীকার করে তারা পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করেন। অভিযুক্ত রাজু ও আমিনুল পলাতক রয়েছে।

গোলাম আজম সাগর বলেন, আমি বর্তমানে মদনপুর গাউছিয়া ইপিজেডে চাকরি করি। গত ৭-৮ মাস আগে ঢাকায় কাজের সুবাদে রাজু নামের ঐ ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব হয়। ৪ মাস আগে আমার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতেও যায়। কয়েকদিন একসাথে থেকেও আসছে। গত কয়েকদিন আগে সে আমাকে ফোন দিয়ে তার এলাকায় আসার জন্য বলে। গতকাল আমি আমার বেতন তুলে বাড়িতে না গিয়ে আমার গ্রামের ফরহাদকে নিয়ে বেড়াতে আসি। দুপুরে বারইয়ারহাট নেমে তাকে কল দিই। সে তার জন্য সহ বিরানী নিয়ে সিএনজি করে একটা ঠিকানা দিলে আমরা সেখানে যাই। একসাথে খাওয়া দাওয়া ও করি। সন্ধ্যা হয়ে আসলে আমাদের পাহাড়ের উপরে একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে আরো কয়েকজন সহ আমাদের কাছে থাকা টাকা পয়সা সব নিয়ে যায় এবং বাড়িতে ফোন করে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বাড়িতে ফোন করলে আমার মা ভয়ে ০১৮৩৪৫২০৮১৭ নাম্বারে দশহাজার টাকা বিকাশ করে। পরে রাতে আমাদের কয়েকজন উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজু করেরহাট ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড গেড়ামারার বাঘাইয়া খোঁ’র শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। তার শ্বশুরের নাম মোঃ ইলিয়াছ। একই গ্রামের মোঃ হারেছের ছেলে আমিনুল হক প্রকাশ গুঁয়াইয়া দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা করে আসছে। এর আগেও এরকম আরো অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।

অভিযুক্ত রাজুর শ্বশুর জানান, আমাকে গতকাল রাতে মেম্বার ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। এরপর রাজুকে কল দিই সে কাজে আছে বলে জানায়। এরপর থেকে ফোন বন্ধ করে দিয়েছে। আমি‌ আর তাকে বাড়িতে জায়গা দিবনা।

ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, এটা অত্যন্ত নেক্কারজনক ঘটনা। আমি তাদেরকে থানায় মামলা করতে বলি। তারা ভয়ে থানায় যেতে বা মামলা করতে রাজি হচ্ছে না। এর আগেও অভিযুক্তদের কয়েকবার পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। কিভাবে বের হয়ে এসে আবারো নানান অপকর্মে জড়িয়ে এলাকাকে নষ্ট করে ফেলছে।