সন্দ্বীপে পিডিবির বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং বেড়েই চলেছে। মানুষ যেন বিদ্যুতের কাছে অসহায় হয়ে পড়ছেন।
গত গত ২ মাস ধরে প্রাকৃতিক কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হলেও কারণে অকারণে উপজেলা সদরসহ আশপাশ এলাকায় বিদ্যুৎ ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকছে।
এছাড়াও গ্রাম অঞ্চল সহ পল্লী এলাকাবাসীর কাছে বিদ্যুৎ যেন মেহমান হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রাহকদের। বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। এভাবে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করায় বিদ্যুৎচালিত মেশিন-যন্ত্রপাতিতে সুষ্ঠুভাবে কোনো কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রচণ্ড তাপদাহ ও বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে দিশেহারা অবস্থা সন্দ্বীপের মানুষের। রাস্তার উপরে বা পাঁশে কোথাও দাঁড়ানোর কোন উপায় নেই। রাস্তা থেকে আগুনের মত তাপ উঠে ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। মন হচ্ছে আগুনের রাস্তা। তাই রাস্তা হয়ে উঠছে অনেকটা জনমানব শূন্য। প্রধান সড়কে চলছে প্রকৃতির অঘোষিত হরতাল।
একদিকে জনজীবন অতিষ্ঠ অন্যদিকে খা খা রোদ ও প্রচণ্ড তাপদাহে গভীর লেকের মাছও ছায়া নিতে ভাসছে দোকানের তলে। চারিদিক শুধু বাঁচার আকুতি এবং কোথাও একটু বাতাস ও ঠাণ্ডা জায়গার খোঁজে ছুটছে মানুষ।
তীব্র গরমে বাইরে কাজ করা তো দূরের কথা, ঘরে থেকেও প্রাণ যায় যা অবস্থা। এ দূর্বিষহ অবস্থায় ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পিডিবির ৩০ হাজার গ্রাহককে।
সন্দ্বীপ উপজেলার সাধারণ মানুষের অভিযোগ, প্রচন্ড গরমের মধ্যে বৈদ্যুতিক পাখা মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে থাকে। কিন্তু লোডশেডিং মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় সেই স্বস্তিও মিলছে না। এমনকি রাতের বেলায়ও একাধিকবার বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার কারণে চরম আকার ধারণ করেছে ভোগান্তি।
সন্দ্বীপে গত ১২ মে থেকে ঘূর্ণিঝড় মখার সময় কিছুটা শীতল ছিল ২৪ মে পর্যন্ত ২৫ মে থেকে আবার তীব্র তাপদাহ শুরু যা গত এক সাপ্তাহ যাবৎ যাবৎ গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। সাথে দু’দিন ধরে দিন-রাত চলছে থেমে থেমে লোডশেডিং দিনে কতবার বিদুৎ আসে যায় তার কোন হিসাব নেই। অপরদিকে, মসজিদ অথবা বাসা বাড়িতে মুসল্লি ও নামাজিরা পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। একদিকে রাত দিন প্রচন্ত গরম। সাথে চলছে তীব্র লোডশেডিং। গত ৩১ মে পর্যন্ত দিনে ৪ বার এবং রাতে ২ থেকে ৩ বার প্রায় ১ থেকে ২ ঘন্টা করে লোডশেডিং এ উপজেলা বাসির নাকাল অবস্থায় হয়েছে।
একদিকে প্রচণ্ড খরা অন্যদিকে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি। বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। রাতের বেলায় বিদ্যুতের ভেলকিবাজির কারণে বেশির ভাগ এলাকা থাকছে অন্ধকারে। গতকাল রাত ছিল না কোন বিদ্যুৎ গরমে মানুষ বাসা বাড়িতে টিকা ছিল প্রায় অসম্ভব। স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী চাকরি জীবি ব্যাবসায়ীদের পড়তে হচ্ছে চরম বিপাকে। রাতে বিদ্যুৎ লোডশেডিং শুরু হলে বাচ্চাদের ঘুমানো অসম্ভব হয়ে পড়ে, তাতে করে চাকরি জীবিরা সকালে ঠিক মতো অফিস করতে পারেন না।
এনাম নাহার মোড়ের আল আমিন প্রেসের মালিক জহির উদ্দিন বলেন , প্রায় ১ মাস থেকে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ এর ভেলকিবাজিতে কম্পিউটার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে ঘনঘন বিদ্যুৎ যাওয়ার কারণে দ্বীপের ইলেকট্রিক অনেক মেশিনারী ও ব্যবহারিক জিনিসপত্র প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের এমন কর্মকান্ডে জনসাধারণের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। সাধারণ মানুষদের প্রশ্ন, এই লোডশেডিং যন্ত্রণার শেষ কোথায়। বিদ্যুত বিভ্রাট ও ঘনঘন লোডশেডিং থেকে পরিত্রাণ পেথে জনপ্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন সন্দ্বীপের সচেতন জনসাধারণ।