“হৃদয়ের টানে প্রিয় বিদ্যাঙ্গনে” এ প্রতিপাদ্যে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ওচমানপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্ণ্যাঢ্য আয়োজনে সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৫০ বছরের মাহেন্দ্রক্ষণে সুবর্ণজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের মেলবন্ধনে সাজ সাজ রব পড়ে যায় বিদ্যালয় অঙ্গনে ।
শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিদ্যালয় আঙ্গিনা সুবর্ণজয়ন্তীর বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে বর্তমান ও প্রাক্তনদের বিভিন্ন ব্যাচের বন্ধুদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে উপজেলার ওচমানপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।
সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে প্রাক্তনরা মেতে উঠেছিলেন আনন্দে, যেন খুঁজে পেয়েছিলেন নিজেদের শৈশব। পুরনো বন্ধুদের আবার একসঙ্গে পেয়ে যেন কর্মজীবনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে গিয়েছিল তাদের। পুরনো সতীর্থদের নিয়ে নতুন করে স্মৃতি জমাতে ক্যামেরাবন্দী করে রাখতে ছিল অনেক কসরত। মধুর মিলনে সতীর্থরা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও কোলাকুলির মাধ্যমে বন্ধুত্বের নতুন বন্ধন তৈরি করেন। সব ভেদাভেদ ভুলে সবাই একই মিশেলে মিলিত হন। সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে বাড়তি আনন্দ যোগ দিয়েছে স্মারক গ্রন্থ স্পন্দন।
সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে সকাল সাড়ে ৮ টায় প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন, ১০টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উদ্বোধন, প্রাক্তনদের অংশগ্রহনে র্যালী, উপহার ব্যাগ প্রদান, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের স্মৃতিচারণ, দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজে ছিলো চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান।
সুবর্ণজয়ন্তীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহবায়ক লায়ন মোহাম্মদ ইলিয়াছ সিরাজীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আইটি বিশেষজ্ঞ মাহবুব রহমান রুহেল।
উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শাহ আলমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস সেনসেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইসমাঈল খান, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস সেনসেলর ড. লুৎফুল আহসান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক ও ওচমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক।
এসময় করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন, প্রকাশনা উপ-কমিটির আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম সুমন, উদযাপন পরিষদের সদস্য রাহাত মোর্শেদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন চৌধুরী তপু, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মাসুদ করিম রানা, যুগ্ম আহবায়ক একরামুল হক সোহেলসহ উদযাপন কমিটির বিভিন্ন উপ-পরিষদের আহবায়ক-সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজকরা জানান, সুবর্ণজয়ন্তীতে স্কুলের শিক্ষক, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি মেলবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। ৫০ বছরের এ স্কুলের সফলতা অনেক। স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীরা অনেকেই দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত। সুবর্ণজয়ন্তীর একদিনের এ উৎসবে একে অপরকে পেয়ে সেলফি তোলা, গল্প, আড্ডা, স্কুল জীবনের স্মৃতি আওড়ানো, সংসার জীবনের বর্তমান ব্যস্ততার বাইরে সব মিলিয়ে একটা প্রাণবন্ত উৎসবে মেতে ওঠেন সবাই। সবার গায়ে ছিল একই রঙের টি-শার্ট।
প্রাক্তন ছাত্র রাহাত মোর্শেদ বলেন, সুর্বণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের মধ্যে নতুন করে মেলবন্ধন রচিত হয়। সুখ-দুঃখের স্মৃতি রোমন্থন করার সুযোগ ঘটে। স্কুলের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষক, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়।