ফেসবুক থেকে ইউটিউব, এ মুখ থেকে ও মুখ মাঝখানে চারদিকে বেশ কিছুদিন ঘুরছে একটা বাক্য ‘তোয়ার লগে বিয়া ঠিক অইছে যে আঁই হোলা হিয়া’ মীরসরাইয়ের আঞ্চলিক ভাষায় এমন সংলাপ গেঁথে রীতিমতো ভাইরাল “হবু বউয়ের সাথে ফোনালাপ” টি। সাত মিনিট এক সেকেন্ডের সেই ফোনালাপটি ফেইসবুক, ইউটিউব, টিকটক, লাইকিসহ সারাদেশে তুমুল জনপ্রিয়।
ফোনালাপটি ‘ভয়েস অব মীরসরাই নামের ফেইসবুক পেইজে ছাড়া হয়। এর পরই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে। তবে অন্তর্জালেই থেমে থাকেনি। পৌঁছে গেছে, বাস সিএনজি ড্রাইভার, বয়স্ক বৃদ্ধ- বৃদ্ধাসহ তরুন প্রজন্মের চায়ের আড্ডায়ও বেশ চলছে ফোনালাপে থাকা মজার ডায়লগগুলো।
কে এই ফোনালাপের কারিগর তা এখন আর কারো অজানা নেই। ধীরে ধীরে নতুন নতুন নানান বিষয় নিয়ে ফোনালাপে হৃদয় ছুঁয়ে গেছে সবার।
তিনি জে আর জিতু। সবাই এখন মজার ছলে লিজার জামাই বলে ডাকেন। তিনি মীরসরাই উপজেলার ৭ নং কাটাছরা ইউনিয়নের কাজীগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের পর্দায় বিভিন্ন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে নিয়মিত কাজ করছেন অনেকদিন ধরে।
পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে নিয়মিত কনটেন্ট বানানোর কাজ করেন।
মীরসরাইয়ের আঞ্চলিক ভাষায় কনটেন্ট তৈরি করেন। অনেকেই তাঁর ফোনালাপ কনটেন্টগুলো পছন্দ করেছেন। হবু বউয়ের ফোনালাপটি তাঁর পেইজ থেকে প্রায় ৩৬ লাখ বার দেখা হয়েছে। এ ছাড়া নানান ভাবে ভিন্ন ভিন্ন পেইজে কনটেন্টটি অসংখ্যবার আপলোড করেছে অনেকে। শুধু এটি নয়, তাঁর সব কনটেন্টের বেলায় এমনটা হয়েছে। পছন্দ করেছেন এমন মানুষ বেশি। ভালো লাগা থেকেই অসংখ্যা মানুষ তারা তাদের নিজস্ব পেইজ এবং আইডিতেও আপলোর করেন।
স্বপ্ন এখন “আঁন্ডা মীরসরাই”
শুধু ফোনালাপ কলের মাধ্যমে নেটিজেনদের মন ভালো করেন এমনটা ভাবার আর সুযোগ নেই। এবার তিনি নিয়মিত হাজির হয়েছেন মীরসরাইয়ের আঞ্চলিক ভাষায় কবিতা আবৃত্তি নিয়ে। মীরসরাই অঞ্চলের পুরনো দিনের গ্রামীণ জনপদের সুঃখ দূঃখ হাসি কান্না পারিবারিক সমস্যাসহ নামান চিত্র উঠে আসে তাঁর কবিতায়। এর মধ্যেই বেশ জনপ্রিয় তাঁর নতুন পেইজ আঁন্ডা মীরসরাই পেইজের মজার কবিতাগুলো। আঞ্চলিক ভাষায় এমন মজার কবিতা শুনে সকলেই মহাখুশি। মন ভরে হাসছেন তাঁর এমন মজার আবৃত্তি শুনে। সকলের স্মৃতিমাখা অতীতের কথা উঠে আসে কবিতায়। মীরসরাইয়ের সকল শ্রেনীর মানুষের কাছে এখন লোক হাসনোর কারিগর জে আর জিতু। তাঁর নতুন নতুন কবিতার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন ভিউয়ার্সরা।
তিনি বলেন, আমি সর্বদা চেষ্টা করি মানুষকে হাসাতে। সবচেয়ে বড় কথা আমি আমার মীরসরাইয়ের আঞ্চলিক ভাষাকে মনেপ্রাণে ভালোবাসি। মানুষ তাঁর নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে লজ্জা পায় আমি তার বিপরীত। এই ভাষাই আমার পরিচয়। আমি যখন মীরসরাইয়ান ভাষায় কন্টেন্ট বানানো শুরু করেছি এবং তা ধীরে ধীরে রিচ করা শুরু করেছে তারপর দেখলাম মীরসরাইয়ে অন্যন্যা কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৈরী হচ্ছে এবং সেটা সম্পূর্ণ মীরসরাইয়ান ভাষায়। এটা দেখে আমি খুব আনন্দিত৷ কারণ তারাও আঞ্চলিক ভাষাটাকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আমার এই মীরসরাইয়ান আঞ্চলিক ভাষাটাকে সারাদেশে তুলে ধরতে পারি।