মিথ্যা-অবিচার-স্বৈরতার কবল থেকে সত্য ও মানবতার মুক্তি সাধনায় সর্বকালের সর্বোচ্চ মহা শাহাদাত, মুসলিম মিল্লাতের মহান জাতীয় শহীদ দিবস শাহাদাতে কারবালা দিবস উপলক্ষে বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন, বাংলাদেশ মীরসরাই উপজেলা শাখার উদ্যোগে বারইয়ারহাট গার্লস হাই স্কুলে ১২ আগস্ট (শুক্রবার) সকাল ১১টায় সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
আল্লামা ইমাম হায়াতের দিক নির্দেশনায় সমাবেশ বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা আল্লামা শেখ নঈমুদ্দিন আরো বক্তব্য রাখেন, রেজাউল করিম, নাফিজ মোবারক, কামরুল ইসলাম নকিব, আরিফ আল ইসলাম জুয়েল, মাওলানা জামশেদ আলম, মাওলানা বোরহান উদ্দিন, সিরাজ মিয়াজি, আব্দুর রহমান সুমন, নাসির উদ্দিন, সাইদুল ইসলাম সজিব, শরীফুল আলম, ছাইফুর রহমান আজাদ, হানিফ মিয়া, আনোয়ার হোসেন, নাসির উদ্দীন, ডাঃ আশ্রাফুল আলম, মাও. আব্দুল আওয়াল,মাও. সাইফুল ইসলাম, আক্তারুজ্জামান, মিজানুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দশ-ই মহররম শাহাদাতে কারবালা দিবসকে ঈমানী অস্তিত্বের রক্ষক ও মুসলিম মিল্লাতের মহান জাতীয় শহীদ দিবস এবং মানবতার মুক্তির মহা শাহাদাত হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, প্রাণপ্রিয় ইমামে আকবর সাইয়েদেনা হজরত ইমাম হুসাইন রাদিআল্লাহু আনহুর অতুলনীয় মহান শাহাদাতের মধ্যেই নিহিত সত্য ও জীবনের মর্মধারা তথা দুনিয়ার পূর্বাপর সমস্ত জিহাদ ও শাহাদাতের সম্মিলিত পূর্ণ মর্ম। তাঁরা বলেন, মহান ইমামে আকবর রাদিআল্লাহু আনহুর শাহাদাতের শিক্ষা ও তাৎপর্য উপলব্দি ব্যতীত ঈমান ও দ্বীন বুঝা সম্ভব নয় এবং প্রকৃত ইসলাম ও ইসলামের নামে ছদ্মবেশী কূফরীর প্রতারণার পার্থক্যও বুঝা সম্ভব নয়।
বক্তারা বলেন, মহান জাতীয় শহীদ দিবস কারবালার অতুলনীয় মহান শাহাদাত প্রাণের বিনিময়ে কূফর-জুলুম-স্বৈরতার ধারক অপশক্তির কবল থেকে পবিত্র কলেমার আমানত রক্ষার শাহাদাত। ঈমানী আত্মা ও দ্বীনের প্রকৃত রূপরেখা এবং সমগ্র মানবমন্ডলীর জন্য ন্যায়-মানবতা-নিরাপত্তা-অধিকার-স্বাধীনতা-কল্যাণের ধারা ও কাঠামো রক্ষার জন্য এ শাহাদাত। তিনি বলেন, আত্মা ও জীবনকে বাতেল জালেম অপশক্তির আঁধার-রুদ্ধাতা-বিনাশ থেকে মুক্ত রাখা এবং সত্য ও মানবতার মুক্ত প্রবাহ জারি রাখাই ছিল শাহাদাতের কারবালার অন্যতম মূল লক্ষ্য।
বক্তারা আরো বলেন, পবিত্র কলেমার মর্মধারার চুড়ান্ত প্রকাশ মহান শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা ব্যতীত ঈমানী অস্তিত্ব ও দ্বীনের প্রকৃত রূপরেখা এবং অপশক্তির গ্রাসমুক্ত স্বাধীন মানবতার কোন উপায় নেই।
কারাবালার শাহাদাত দয়াময় আল্লাহতাআলা ও তাঁর প্রিয়তম হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেমের পরম নিদর্শন উল্লেখ করে আল্লামা ইমাম হায়াত বলেন, দয়াময় আল্লাহতাআলার উদ্দেশ্যে সব কিছুর উর্ধ্বে প্রাণাধিক প্রিয়নবীর প্রেমই মহান শাহাদাতে কারবালার মূল মর্ম, যে প্রেম ভিত্তিক আত্মা ব্যতীত শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা চেতনা যেমন উপলব্ধি করা যাবেনা তেমনি আত্মা ও জীবন আঁধার কলুষতায় নিমজ্জিত হয়ে বাতেল জালেম অপশক্তির কোন না কোন দিকে বিকিয়ে যাবে।
দয়াময় আল্লাহতাআলার অপার রহমতে দুনিয়ায় মানব জীবনে মহান প্রিয়নবীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমনের দান ও লক্ষ্য এবং মহান শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা অভিন্ন হিসেবে আল্লামা ইমাম হায়াত সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন। বদর ওহোদ কারবালার পক্ষ ও বিপক্ষ এবং শিক্ষা চেতনা এক ও অভিন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহামান্য খোলাফায়ে রাশেদীন, মকবুল সাহাবায়ে কেরাম, সত্যের ইমামবৃন্দ ও মহান আওলিয়াকেরাম যুগ থেকে যুগান্তরে চিরন্ত্রন সত্যের ধারাবাহিকতা যাদের পূর্ণাংগ পথ ও দিশা থেকে বিচ্যুত হয়ে অপশক্তির বিনাশী প্রক্রিয়ায় আত্মসমর্পনই সত্য ও মানবতার বিপর্যয়ের প্রধান কারণ।
মহান শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা ও নির্দেশনায় দুনিয়াব্যাপী বিরাজমান মিথ্যা-অবিচার-জুলুম-শোষণ ভিত্তিক একক গোষ্ঠিবাদী স্বৈর মুলুকিয়ত রাষ্ট্রব্যবস্থা ও জীবন বিধ্বংসী বিশ্বব্যবস্থার কবল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সত্য-সুবিচার-মানবতা-অধিকার ভিত্তিক সর্বজনীন মানবিক সমাজ-রাষ্ট্র-বিশ্বব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াত গড়ে তোলার বিপ্লবী লক্ষ্যে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহনের জন্য বক্তারা সবার প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষ শান্তিপূর্ণ র্যালি বারইয়ারহাটের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পদক্ষিণ করে গ্রীণ টাওয়ারের সামনে সালাতু সালাম ও মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।