২০১১ সালের ১১ জুলাই মীরসরাইয়ে ৪৫ শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর
১২ বছর পূর্বে ঘটে যাওয়া স্মরণকালের সেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াল স্মৃতি ফিরে আসে কান্না, আর্তনাদ-আহাজারি হয়ে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে কারো ভাই, কারো সন্তান, কারো বন্ধু-স্বজন, সহপাঠী কিংবা প্রিয় ছাত্রদের অকাল নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার দৃশ্যপট।
২০১১ সালের ১১ জুলাই একটি সড়ক দুর্ঘটনা শোকবিহবল করে তুলছিল সমগ্র জাতিকে। মীরসরাই উপজেলা সদরের স্টেডিয়াম থেকে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল খেলা দেখে বাড়ি ফেরার পথে বড়তাকিয়া আবুতোরাব সড়কের সৈদালী এলাকায় চালক মফিজ চলন্ত অবস্থায় মোবাইলে কথা বলায় এক হাতে গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীকে বহনকারী একটি মিনি ট্রাক উল্টে পার্শ্ববর্তী ডোবায় পড়ে যায়। এই ঘটনায় আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়, আবুতোরাব কলেজ, আবুতোরাব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৮ জন শিক্ষার্থী ও একজন এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে নিহত হয়। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আরো ছয়জন। তাদের মধ্যে ছিল ৪২ জন শিক্ষার্থী, দুই স্থানীয় কিশোর এবং একজন অভিভাবক। ৪৫টি তাজা প্রাণ মুহূর্তেই স্মৃতি হয়ে মিলিয়ে যায় সেদিনের সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনায়। লাশের মিছিল ভারী হয়ে ওঠে গ্রামের পর গ্রাম।
মীরসরাই ট্র্যাজেডিতে ওই সময় শোকার্ত পরিবারের সাথে দেখা করতে ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া, বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মন্ত্রী আমলা ব্যাংকার শিল্পপতি, বিদেশি কূটনীতিক সহ দেশ বিদেশের নানা শ্রেণি পেশার বিশিষ্টজনরা। মীরসরাই ট্র্যাজিডিতে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী নিহত হওয়া আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ ‘আবেগ’ আর দুর্ঘটনাস্থলে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ ‘অন্তিম’।
১৩ নং মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহম্মদ নিজামী জানান, ভয়াল এই দিনটিকে স্মরণ করে প্রতিবারের মতো এবারও নেয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। এক যুগ পূর্তিতে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে নিহতদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ‘আবেগ’ ও ‘অন্তিম’ এর স্মৃতি বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের বিশেষ প্রার্থনা এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
দল মত নির্বিশেষে সকল শ্রেনি পেশার মানুষ প্রতিবছর মীরসরাই ট্র্যাজেড়ী স্মরণে কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করে।